অবশেষে জানাগেল ডা. ফেরদৌসের সঠিক রাজনৈতিক পরিচয়!

0
200

ডেস্ক রিপোর্ট ● বাংলাদেশে ফেরার পর যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের মাউন্ট সিনাই হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. ফেরদৌস খন্দকারকে ঢাকার ব্র্যাক ট্রেনিং সেন্টারে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। রোববার বিকেলে কাতার এয়ারওয়েজের একটি বিশেষ ফ্লাইটে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন তিনি।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে থাকতে তার ক’রোনা শ’নাক্তের অ্যান্টিবডি টেস্ট করা হয়। এর ফলাফল পজিটিভ এসেছিল। এখন ক’রোনা না থাকলেও যেহেতু তিনি বিদেশ থেকে এসেছেন তাই তাকে ব্র্যাক সেন্টারে ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে।

সূত্র জানায়, লালা, স্রাব (নাক থেকে নেয়া) নমুনা থেকে ক’রোনা ভা’ইরাস নির্ণয় করতে অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা হয়। আর র’ক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে ক’রোনা নির্ণয় করতে অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করতে হয়। এই দুটি পদ্ধতিতে ক’রোনা ভা’ইরাসের পরীক্ষা করা যায়।

যুক্তরাষ্ট্রে ডা. ফেরদৌস খন্দকারের অ্যান্টিবডি একবার পজিটিভ ছিল। যেহেতু তিনি বিদেশ থেকে এসেছেন সেহেতু তাকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। সম্প্রতি দেশে ফিরে বাংলাদেশের মানুষের চিকিৎসার ঘোষণা দিয়ে বি’তর্কের মধ্যে পড়েন এই চিকিৎসক। অনেকে তাকে বঙ্গবন্ধুর খু’নিদের স্বজন বলে দাবি তোলে।

তার সম্পর্কে প্রচার করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হ’ত্যার রূপকার খন্দকার মোশতাকের ভাগ্নে, বঙ্গবন্ধুর সরাসরি খু’নি কর্নেল রশিদের খালাতো ভাই ডাক্তার ফেরদৌস খন্দকার! তার উপর তিনি ছাত্রদলের নেতা ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের খু’ন করার পরিকল্পনাকারীদের সঙ্গে তার সখ্যতা আছে এই ফেরদৌস খন্দকারের সঙ্গে।

একুশে গ্রে’নেড হা’মলা অন্যতম কারিগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ডোনার! ২০ হাজার ডলার দিয়ে আমেরিকা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা হয়েও পরে আওয়ামী লীগ নেতাদের তী’ব্র প্রতিবা’দের মুখে হয়েছিলেন ব’হিস্কৃত। তার বি’রুদ্ধে এসব কথা ছড়িয়ে দেয় একটি মহল।

তবে ফেরদৌস খন্দকারের পরিবারের সঙ্গে খু’নি মোস্তাকের কিংবা সরাসরি বঙ্গবন্ধুর ঘা’তক কর্ণেল রশিদের সঙ্গে কোন আত্মীয়তার কোন প্রমান এখনও পর্যন্ত কেউ দিতে পারেনি। কুমিল্লার দেবিদ্বার এবং দাউদকান্দির বেশ কয়েকজন সোর্সের সঙ্গে কথা বললেও তারা কোনভাবেই তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

পরবর্তী সময়ের ফেরদৌস খন্দকারও ওপেন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন গুজন রটনাকারিদের উদ্দ্যেশে- খু’নী মোস্তাক এবং খু’নী কর্নেল রশিদের আত্মীয়তার প্রমাণ করতে পারলে যা শা’স্তি দেয়া হবে তাই তিনি মাথা পেতে নেবেন।

এবার আসা যাক ডাক্তার ফেরদৌস নাকি ছাত্রদল করতেন, নাকি ছাত্রলীগ করতেন সেটা শুনুন সেই সময়ের ছাত্রলীগের নেতাদের মুখেই। চাঁদপুরের বাসিন্দা নাসিম কাজী চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের ৯১ সালে ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। পাশাপাশি চাকসুর এজিএস, জিএস ও ভিপিও ছিলেন।

কঠিন সময়ের সেই ছাত্রলীগ নেতা নাসিম কাজী এখন আরব আমিরাতের দুবাই আল মজিদ ক্লিনিকের মেডিক্যাল ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সেই নাসিম কাজীর সহপাঠি ডাক্তার ফেরদৌস খন্দকারকে নিয়ে এমন অ’পপ্রচারের ক্ষু’দ্ধ প্রতিক্রিয়া জানান।

ফেরদৌস প্রসঙ্গে শনিবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আরেক পোড় খাওয়া নেতা অমি রহমান পিয়ালের বলেন, এতোদিন পর এই প্রশ্ন কেন যে, সে রশিদের খালাতো ভাই বা মোশতাকের ভাগ্নে? নিশ্চয়ই এখানে কোন উদ্দেশ্যে আছে। চমেক ছাত্রলীগের সেই সময়কার সভাপতি এবং চমেকসুর ভিপি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েই কথাগুলো বলছি। সে দুর্দিনের একজন নিবেদিত প্রাণ পরীক্ষিত নি’র্যাতিত ছাত্রলীগার।

ছাত্রদল, জামায়াত শিবিরের হা’মলা-মা’মলা নি’র্যাতনের শিকার হয়েছেন বহুবার, সেই অমি রহমান পিয়াল ভাইয়ের সঙ্গে কাঁধেকাধ মিলিয়ে ছাত্রলীগ করেছেন এবং বহু নি’র্যাতনের শিকার হয়েছেন ডাক্তার ফেরদৌস খন্দকার। তার সম্পর্কে নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে পিয়াল ভাই লিখেন, ডাক্তার ফেরদৌস মোস্তাকের ভাগিনা কথাটা সত্য। মোস্তাক আহমেদ তার আপন মামা। তবে সে বঙ্গবন্ধুর খু’নী মোশতাক না। সে বোস্টনে থাকে। এখনও জী’বিত। তার যেহেতু ফেরদৌসের নামেও খন্দকার আছে, নামে নামে জমে টানে।

এদিকে দেশে ফিরে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে যাওয়ার পর নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন ডা. ফেরদৌস। তিনি লিখেছেন, ‌‌‘প্রিয় বাংলাদেশ। দেশে এসেছিলাম নিজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ক’রোনা নিয়ে সবার পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করতে। তার জন্যে জী’বনের ঝুঁ’কি নিতেও আমি পিছপা হইনি।

যখন ভালো উদ্দেশ্য নিয়ে আমি দেশে এসেছি, তখন একদল লোক আমার বি’রুদ্ধে মি’থ্যা অ’পপ্রচার শুরু করেছে। বলা হচ্ছে, আমি নাকি খু’নি খন্দকার মোশতাকের ভাতিজা কিংবা খু’নি কর্নেল রশিদের খালাতো ভাই। অথচ পুরো বিষয়টি কাল্পনিক। আমার বাড়ি কুমিল্লার দেবিদ্বারে। কুমিল্লায় বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষের বাড়ি।

কুমিল্লা বাংলাদেশের একটি স্বনামধন্য জেলা। কুমিল্লায় বাড়ি হলেই কেউ খু’নি মোশতাকের ভাতিজা কিংবা কর্নেল রশিদের খালাতো ভাই হয়ে যায় না। আমি স্পষ্ট করে বলছি, এই দুই খু’নির সাথে আমার পারিবারিক কিংবা আদর্শিক কোনো সম্পর্ক নেই। বরং বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হিসেবে আমি, তাদেরকে চরম ঘৃ’ণা করি।

ফলে যারা এই খা’রাপ কথাগুলো ছড়াচ্ছেন, বলছেন, তাদের উদ্দেশ্য পরিষ্কার; ভালো কাজে বা’ধা দেয়া। এটা অ’ন্যায়। আমি তী’ব্র প্রতিবা’দ ও ঘৃ’ণা জানাচ্ছি। সেই সাথে প্রমাণের জন্যে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছি। যদি মনে করেন আমার সেবা আপনাদের দরকার, তাহলে পাশে থাকুন।’

নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।