নিউজ টাঙ্গাইল ডেস্ক: ‘পাগল তোর জন্য রে, পাগল এ মন’- এই একটি গান দিয়েই তো বাজিমাত! ‘হ্যাঁ, তা বলা যায়। তবে এই একটি গানের পেছনে কিছু গল্প আছে।
‘ বললেন বেলাল খান। ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বরে বসে নিজের অজান্তেই সুর তুলতাম, গাইতাম। মনে হতো গান ছাড়া বাঁচতে পারব না। সুযোগের জন্য এ দ্বার-ও দ্বারে অনেক ঘুরেছি। তার পরও ধৈর্য হারাইনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফার্সিয়ান ল্যাঙ্গুয়েজ লিটারেচারে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করার পর পরিবারের সবাই চেয়েছিলেন দেশের বাইরে চলে যাই। কিন্তু গানকে ছাড়তে পারিনি। ‘ বলছিলেন তিনি।
২০০৯ সালের দিকে মনির খান ও বেবী নাজনীনের একক অ্যালবামের দুটি করে গান সুর করার মাধ্যমে গানের জগতে পথচলা শুরু টাঙ্গাইলের ছেলে বেলাল খানের।
এরপর নবীন শিল্পী কিরণের ‘পাগল তোর জন্য রে’ গানটির সুর করেন। কিন্তু তাঁর প্রিয় এই গানটি সাড়া ফেলল না। এরই মাঝে একদিন দেখা পরিচালক মঈন বিশ্বাসের সঙ্গে। আড্ডা দিতে দিতেই খালি গলায় ‘পাগল তোর জন্য রে’ গানটি শোনান তাঁকে।
গানটি তাঁর এমনই পছন্দ হয় যে এই নামে চলচ্চিত্রেরই নামকরণ করেন তিনি। সুরটাকে আরো ঝালাই করে এই ছবিতে ন্যান্সির সঙ্গে দ্বৈত গাইলেন বেলাল নিজেই। পরের ইতিহাস তো সবারই জানা। ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় ২০১১ সালে প্রকাশিত এই গানটি। এরপর অনেক কাজের অফার আসতে থাকে বেলালের কাছে। নিয়মিতভাবে চলচ্চিত্র, মিক্সড অ্যালবাম এবং নাটকের টাইটেল গান তৈরি ও সেগুলোতে কণ্ঠ দিতে থাকেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অবস্থানও আরো দৃঢ় হতে থাকে।
২০১২ সালে প্রকাশিত হয় বেলাল খানের প্রথম একক ‘আলাপন’। অ্যালবামের ‘একমুঠো স্বপ্ন’সহ কয়েকটি গানই পায় শ্রোতাপ্রিয়তা। বাচসাস পুরস্কারসহ বেশ কিছু পুরস্কারও মেলে।
এর বাইরে বেলালের গাওয়া ‘দলিল’ (ন্যান্সির সঙ্গে দ্বৈত), ‘ভালোবাসি’ ও ‘একলা প্রহর’ (পড়শীর সঙ্গে দ্বৈত), ‘সোনাপাখি’ (শিল্পী বিশ্বাসের সঙ্গে দ্বৈত) এবং ‘সামান্য সম্বল’ (লোপা হোসাইনের সঙ্গে দ্বৈত) গানগুলোও শ্রোতারা পছন্দ করেন। বেলালের সুরে অন্য শিল্পীদের গাওয়া অনেক গানও আলোচনায় আসে। তিনি প্রকাশ করেন নিজের সুর ও সংগীতে প্রথম পূর্ণাঙ্গ মিক্সড অ্যালবাম ‘শুনতে কি পাও’। তার পর পহেলা বৈশাখে তাঁর দ্বিতীয় একক ‘বাজি’। অ্যালবামটিতে গান ৯টি। সবগুলোর সুর তাঁর নিজের।
চলচ্চিত্রের গানেও নিয়মিত তিনি। কণ্ঠ দেওয়ার পাশাপাশি চলচ্চিত্রের গানে সুর করেন। তাঁর সুরে কণ্ঠ দিয়েছেন বেবী নাজনীন, মমতাজ, ফাহমিদা নবী, সামিনা চৌধুরী, আলম আরা মিনু, মনির খান, কনা, ন্যান্সি, রূপরেখা ব্যানার্জি, ইমরান, লিজা, পড়শীসহ অনেকে।
মাসুদ পথিকের ‘নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ’ চলচ্চিত্রে তাঁর গাওয়া ‘স্টেশন’ গানটি দাগ কেটেছে সংগীতপিপাসুদের মনে। অনেক চ্যানেল গানটিকে ফিলার সং হিসেবেও বাজিয়েছে। সামিয়া জামানের ‘আকাশ কত দূরে’, সানিয়াত হোসেনের ‘অল্প অল্প প্রেমের গল্প’, শফিকুল ইসলামের ‘অচেনা হৃদয়’ চলচ্চিত্রের গান করেও প্রশংসা কুড়িয়েছেন।
বিশ্বকাপের উন্মাদনায় মাতিয়েছন পুরো ক্রিকেট বিশ্ব। বেলাল খানও মেতেছেন। তাঁর সুরে প্রকাশিত হয়েছে ‘জাগো বাংলাদেশ’ শিরোনামের একটি গান। যাতে আরো ১০ জন শিল্পীর সঙ্গে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি নিজেও। গানটি ভিডিও আকারে প্রকাশ করেছে বাংলামেইলডটকম। সংসার জীবনেও সুখী। ছেলে নাওয়াফের কন্যাসন্তান তাবিহা বারানের জনক।
নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।