বছর ঘুরে আবার সময় হলো জাতিসংঘ অধিবেশনের। এটি বিশ্বের সব থেকে বড় অধিবেশন, যেখানে সব দেশের বিশ্ব নেতারা মিলিত হন। ১৯৪৫ সালে ৫১টি রাষ্ট্র নিয়ে জাতিসংঘ গঠিত হয়। এই সংগঠনটির মূল লক্ষ্য- আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আইন, নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সামাজিক অগ্রগতি এবং মানবাধিকার বিষয়ে পারষ্পরিক সহযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি করা।
জাতিসংঘের ৭৩তম অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে সপ্তাহব্যাপী সরকারি সফর উপলক্ষে নিউইয়র্কের পথে শুক্রবার লন্ডন পৌঁছেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মাদ জিয়া উদ্দিন এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানাবেন। বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা পর্ব শেষে মোটর শোভাযাত্রা সহযোগে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে নিউইয়র্কের গ্রান্ড হায়াত হোটেলে নিয়ে যাওয়া হবে। যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে তিনি এ হোটেলেই অবস্থান করবেন।
এ বছর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে- ‘মেকিং দ্য ইউনাইটেড নেশন্স রিলেভেন্ট টু অল পিপল : গ্লোবাল লিডারশিপ অ্যান্ড শেয়ারড রেসপনসিবিলিটিস ফর পিসফুল, ইকুইট্যাবল অ্যান্ড সাসটেইন্যাবল সোসাইটিজ।’ প্রধানমন্ত্রী ২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ভাষণ দিবেন। ঐ দিনই তিনি জাতিসংঘ মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সাইড লাইনে প্রধানমন্ত্রী একাধিক বিশ্ব নেতার সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক করবেন বলে জানা যায়। এর মধ্যে রয়েছেন- এস্তোনিয়ার প্রেসিডেন্ট ক্রেস্টি কালজুলেইদ এবং নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আয়োজিত এক সংবর্ধনায় যোগ দেবেন এবং সেদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর সঙ্গেও বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবারের অধিবেশনে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে তাঁর পূর্বের ৫ দফা প্রস্তাবের ধারাবাহিকতায় কিছু সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পেশ করবেন। রোহিঙ্গা ইস্যু ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব শান্তি, নিরাপদ অভিবাসন, ফিলিস্তিনের জনগণের অধিকার, নারীর ক্ষমতায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে আলোচনা করবেন। প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব নেতৃবৃন্দের কাছে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা ও দেশের চলমান গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক অর্জন তুলে ধরবেন।
অধিবেশন চলাকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দুইটি পুরস্কারে ভূষিত করা হবে। রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলা করার জন্য তাঁর গতিশীল ও দূরদর্শী নেতৃত্বের জন্য আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা ইন্টার প্রেস সার্ভিস (আইপিএস) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্মানজনক ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করবে এবং গ্লোবাল হোপ কোয়ালিশন ২০১৮ ‘স্পেশাল রিকগনিশন ফর আউটস্ট্যান্ডিং লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’-এ ভূষিত করবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় নেতৃত্ব এবং নারী শিক্ষা ও নারীর ক্ষমতায়নে অগ্রগতির জন্য তিনি আজ বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত।