নিউজ টাঙ্গাইল ডেষ্ক :
টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার জামতৈল মেহেরুন্নেসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুমন ভাই। নিয়মিত বিদ্যালয়ে হাজিরা নেই। কখনো যদি যান সকাল ১১টায় স্কুল হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেই ১২টার আগেই স্কুল ছাড়েন তিনি। স্কুলে মন না বসলেও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে সারাদিন ঘুরাঘুরিতে তাঁর ক্লান্তি নেই। শিক্ষকদের বদলি, পদোন্নতি, এরিয়া বিল উত্তোলন, চর্তুথ শ্রেণীর কর্মচারি নিয়োগ নানা সুপারিশসহ সব দেনদরবারেই তিনিই সর্বেসর্বা। তিনি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের খুবই কাছের এবং বিশ্বস্ত শিক্ষক । লেনদেনের সুচারু সম্পাদনে জুড়ি নেই তাঁর। উপজেলার সর্বত্র যার প্রদচারণা। উপজেলার সকল শিক্ষকসহ সকলের কাছে তিনি সুমন ভাই নামেই পরিচিত। উপজেলায় শিক্ষা অফিসার বদলি হলেও সুমন ভাইয়ের অসুবিধা নেই। সূতোর টানে লেনদেনের ঝামেলা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে নতুন আসা সব অফিসাররাই সুমন ভাইকেই স্বাচ্ছন্দে বেছে নেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সুমন ভাই শিক্ষা প্রশাসণের কর্মকর্তা ছাড়াও স্থানীয় সাংসদ এবং সরকারি দলীয় নেতাকর্মীদের কৌশলে করায়ত্ব করার ভান দেখিয়ে বা মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে ভয়ভীতির সৃষ্টি করেছেন এলাকায়। সুমন ভাইয়ের পুরো নাম সোলায়মান সুমন। বাবার নাম মোফাজ্জল হোসেন। বাড়ি গোপালপুর উপজেলার ধোপাকান্দি ইউনিয়নের সাহপাড়া গ্রামে। সুমন মূলত নগদা শিমলা ইউনিয়নের চতিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার বিরুদ্ধে টাঙ্গাইল জেলা শিক্ষা অফিসার এনামুল হক সরেজমিন তদন্ত করে স্কুলে অনুপস্থিতি এবং নানা অভিযোগের ফিরিস্তি লিখিতভাবে উত্থাপন করলেও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সুমন ভাই জেলা শিক্ষা অফিসারকেও ম্যানেজ করেন। স্কুলে অনুপস্থিতি এবং শিক্ষা প্রশাসনকে বৃদ্ধাগুলি দেখানোর অসংখ্য অভিযোগও তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে ।
সোলায়মান সুমন গত এক বছর আগে চতিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে তদবির করে জামতৈল মেহেরুন্নেছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ডেপুটেশনে আসেন। এখানেও তাঁর নিয়মিত স্কুলে হাজির না থাকায় উপজেলা শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম তাকে শোকজ করেন। নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ৬ নভেম্বর সুমনের কর্মস্থল জামতৈল মেহেরুন্নেছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাংবাদিকরা হাজির হন। খবর পেয়ে সুমন ভাই সকাল সাড়ে ১১টায় ওই বিদ্যালয়ে হাজির হন। সম্প্রতি সুমন ভাই ওই স্কুলের এক শিক্ষিকাকে ম্যাসেঞ্জারে পরকীয়ার আহবান জানানোর ঘটনা নিয়েও এলাকায় তোলপার শুরু হয়েছে।
এ ব্যাপারে সুমন ভাইয়ের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি তাঁর বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ মিথ্যা এবং পরিকল্পিত বলে জানান।
সুমনের ব্যাপারে স্কুলে অনুপস্থিত থাকাসহ আরো একাধিক অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে গোপালপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম বলেন, এসব অভিযোগ সত্য হলে অফিসিয়ালি সুমনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।