টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: টাঙ্গাইল জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফরহাদ আলীকে হত্যার প্রতিবাদে জেলার আইনজীবীরা কোর্ট এলাকায় মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। টাঙ্গাইল জেলা অ্যাডভোকেট বার সমিতির উদ্যোগে গতকাল রোববার দুপুরে এই প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সাগরদিঘী-বেতুয়াপাড়া এলাকায় জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে শনিবার বিকেলে অ্যাডভোকেট ফরহাদ আলীকে তারই চাচাত ভাই রুবেল মিয়া চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে রোববার দুপুরে কোর্ট রেফারেন্স শেষে জেলার আইনজীবীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি কোর্ট এলাকার বিভিন্ন সড়ক ঘুরে এক প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হয়। জেলা বার সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট ফারুক আহাম্মেদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। বার সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামস উদ্দিনের পরিচালনায় এতে বক্তব্য রাখেন জেলা বার সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. নূরুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম রিপন, জিপি অ্যাডভোকেট আনন্দ মোহন আর্য্য, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফায়কুজ্জামান নাজিব, অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম আলো ও অ্যাডভোকেট মহসিন সিকদার এবং সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট এস আকবর খান প্রমুখ। তারা এ ঘটনায় জড়িত সকল অপরাধীকে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
বার সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট ফারুক আহমেদ বলেন, এ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে টাঙ্গাইলের আইনজীবীরা আগামী সাতদিন কালো ব্যাজ ধারণ করবেন। এছাড়া হত্যার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে প্রশাসন কীভাবে কাজ করছে তা পর্যবেক্ষণ করার জন্য আইনজীবীদের পক্ষ থেকে একটি কমিটি গঠন করা হবে। রোববার দুপুর ১টায় নিহত ফরহাদ আলীর লাশ টাঙ্গাইল বার সমিতির সামনে আনা হলে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। জোহর নামাজের পর জেলা সদর মসজিদের মাঠে তার প্রথম জানাযা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এই জানাযা নামাজে টাঙ্গাইলের জেলা ও দায়রা জজ মো. শওকত আলী চৌধুরী ও চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবুল মনছুর মিয়াসহ অন্য বিচারকগণ উপস্থিত ছিলেন। পরে ফরহাদ আলীর লাশ তার গ্রামের বাড়ি ঘাটাইলের সাগরদিঘীর উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। বিকেলে সাগরদিঘী ঈদগা মাঠে দ্বিতীয় জানাযা নামাজ শেষে স্থানীয় গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
ঘাটাইল থানার ওসি মাকসুদুল আলম রোববার বিকেলে জানান, হত্যাকান্ডের ঘটনায় এখনো কোন মামলা হয়নি। তবে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া এ ঘটনায় গ্রেফতার নিহতের চাচাত ভাই রুবেল মিয়াকে কোর্টে চালান করে দেয়া হয়েছে। হত্যাকান্ডের পর পরই রুবেল মিয়া সাগরদিঘী পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে আত্মসমর্পন করে।