নিউজ টাঙ্গাইল ডেস্ক:ঢাকা-টাঙ্গাইল বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে বালুভর্তি ট্রাক থেকে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করছেন ট্রাক মালিক ও শ্রমিক নেতারা। দিনরাত মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় প্রতিটি ট্রাক থেকে ২শ টাকা করে চাঁদা নেয়া হচ্ছে। আর এ চাঁদার টাকা এমপি থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের লোকজনদের পকেটে যাচ্ছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন এক শ্রমিক নেতা।
সরেজমিনে টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা মহাসড়কের বিক্রমহাটী এলাকায় অস্থায়ী মালিক ও শ্রমিক নেতাদের তৈরি করা কার্যালয়ের সামনে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন ট্রাক মালিক ও শ্রমিক নেতা বসে রয়েছেন। এর মধ্যে বালুভর্তি একটি ট্রাক দাঁড় করান অন্য এক শ্রমিক। এরপর ট্রাকের চালক ২শ টাকা দিয়ে চলে যান।
ওই শ্রমিক জানান, প্রতিটি বালুভর্তি ট্রাক থেকে ২শ টাকা আদায় করা হয়। প্রতিদিন গড়ে এক থেকে দেড় হাজার বালুভর্তি ট্রাক এ মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করে।না
প্রকাশ না করার শর্তে অন্য এক শ্রমিক নেতা জানান, আগে ঘারিন্দা বাইপাস এলাকায় ট্রাক থামিয়ে টাকা আদায় করা হতো। প্রশাসনের সাথে সাময়িক ঝামেলা হওয়ায় এখন বিক্রমহাটী থেকে ওই টাকা আদায় করা হয়। আর এ টাকা এমপি থেকে শুরু করে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের ভাগ দেয়া হয়।
মির্জাপুরগামী বালুভর্তি ট্রাক চালক মোঃ মান্নান মিয়া জানান, তিনি কালিহাতী উপজেলার পুংলী থেকে বালু নিয়ে যাওয়ার সময় তার ট্রাক থামিয়ে ২শ টাকা দাবি করা হয়।
এ সময় শ্রমিক নেতারা তাকে জানান, এই মহাসড়ক দিয়ে বালু নিতে হলে ২শ টাকা দিতে হবে। পরে তিনি বাধ্য হয়ে তাদের ২শ টাকা দিয়ে চলে যান।না
ট্রাকের চালক সাইদুর রহমান জানান, পুংলী বা ভুঞাপুর থেকে বালু নিয়ে এ সড়কে আসলেই তাদের দুইশ টাকা করে দিতে হয়। তা না হলে বালু নেয়া বন্ধ করে দেয়া হয়। তিনি প্রতিদিন গড়ে ৩/৪ বার এ সড়ক দিয়ে বালুভর্তি ট্রাক নিয়ে চলাচল করেন।
একাধিক জানিয়েছে, প্রতিদিনের চাঁদার টাকা জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনসহ স্থানীয় বেশ কয়েকজন সরকার দলীয় নেতাদের ভাগ দিয়ে বাকি অংশ মালিক ও শ্রমিক নেতারা ভাগ করে নেন।টাঙ্গাইল ট্রাক শ্রমিক সমিতির সভাপতি বালা মিয়া এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
টাঙ্গাইল ট্রাক মালিক সমিতির সদস্য ও চাঁদা আদায়ের মূল হোতা খন্দকার হাফিজুর রহমান জানান, বালু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভাঙতে এবং সাংগঠনিক খরচের জন্য প্রতি ট্রাক থেকে দুইশ টাকা নেয়া হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ জানান।
এবিষয়ে এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ পরিদর্শক বাসুদেব সিনহা বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়ে ইতিপূর্বে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। এখন তারা স্থান পরিবর্তন করে অন্য জায়গায় অস্থায়ী ঘর বানিয়ে চাঁদা উত্তোলন করছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আবারও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করব।
নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।