নিউজ ডেস্ক: টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে পুলিশের নির্যাতনে লেবু মিয়া (৫০) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ভোরে উপজেলার বাঁশতৈল ফাঁড়িতে এ ঘটনা ঘটে। তবে পুলিশের দাবি- লেবু মিয়া গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তিনি বাঁশতৈল গ্রামের বাহার উদ্দিনের ছেলে।
এর আগে সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এক নারীকে হত্যায় জড়িত সন্দেহে লেবু মিয়াসহ দুইজনকে পুলিশ আটক করে।
এদিকে দুপুরে পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের শাস্তির দাবিতে গোড়াই-সখীপুর সড়কের বাঁশতৈল বাজারে টায়ারে আগুন দিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, প্রায় আট বছর আগে সখিনা বেগম (৪৩) নামে এক নারীর সঙ্গে বাঁশতৈল গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে মফিজুর রহমানের (৪৭) বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এরপর থেকে তিনি একই গ্রামে আলাদা বাড়ি তৈরি করে দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। মেয়েদের বিয়ে হওয়ায় প্রবাসী ছেলের স্ত্রীকে নিয়ে ওই বড়িতে থাকতেন তিনি।
রোববার রাতে সখিনা বাড়িতে একা ছিলেন। এরপর সোমবার সকালে তিনি ঘুম থেকে না ওঠায় পাশের বাড়ির লোকজন খোঁজ করতে গিয়ে তার মরদেহ দেখতে পান। পরে খবর পেয়ে মির্জাপুরের বাঁশতৈল ফাঁড়ির পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে। তার পরিবারের দাবি- সখিনাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সখিনার সাবেক স্বামী মফিজুর এবং একই গ্রামের বাসিন্দা লেবু মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটকের পর হাজতখানায় রাখা হয়। এদের মধ্যে সেখানে লেবু মিয়ার মৃত্যু হয়।
মৃত লেবু মিয়ার স্ত্রী আলিয়া বেগম বলেন, আমার স্বামীকে বিনা অপরাধে পুলিশ আটক করে নিয়ে যায়। আমার স্বামীর বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। রাতে তাকে নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়। আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই।
স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য ইদ্রিস আলী বলেন, বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) সেলিম তাকে আটক করে নিয়ে যায়। পরে তাকে ব্যাপক মারপিট করা হয়। একপর্যায়ে তার মৃত্যু হয়। পরে পুলিশ আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছে। এসআই সেলিমের বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক সাখাওয়াত হোসেনের মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
মির্জাপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম বলেন, ওই ব্যক্তি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। পরে তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।