————স্বাক্ষাতকার: এম সাইফুল ইসলাম শাফলু
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম আসাদুল হক তালুকদার। তিনি ১৯৪৬ সালের ২ এপ্রিল টাঙ্গাইল জেলার বাসাইল উপজেলার হাবলা ইউনিয়নের টেংগুরিয়া পাড়া গ্রামে ঐতিহ্যবাহী তালুকদার বংশে জন্ম গ্রহণ করেন। শৈশবকাল তিনি লেখাপড়া ও কর্মব্যস্ততার কারণে বাড়ির বাইরে থাকলেও নিজ থানা ও এলাকার মানুষের সাথে সবসময়ই ছিল তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ। ১৯৬২ সালে তিনি টাঙ্গাইল বিন্দুবাসিনী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে থেকে প্রথম বিভাগে এসএসসি পাশ করেন। ১৯৬৪ সালে করটিয়া সাদত কলেজ থেকে কৃতিত্বের সাথে এইচএসসি এবং ১৯৬৬ সালে বিএসসি পাশ করেন। ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম আসাদুল হক তালুকদারের সহধর্মীনি ড. তালুকদার নুরুন্নাহার একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রাণীসম্পদ বিজ্ঞানী। বাংলাদেশ প্রাণীসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই)-এর মহাপরিচালক এবং বায়োটেকনোলজি বিভাগের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত। এছাড়াও তিনি সার্ক ডেইরি বাফেলো ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের বাংলাদেশের ফোকাল হেড হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করছেন। এ পর্যন্ত ড. তালুকদার নুরুন্নাহার শতাধিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি। এই দম্পতির জেষ্ঠ্য কন্যা কৃষিবিদ নিঝুম কাইয়ুম তালুকদার বিসিএস ৩০ তম ব্যাচে একজন সরকারী কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের সাইট্রাস ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের সহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।পুত্র ডা: অর্নব কাইউম তালুকদার পেশায় একজন চিকিৎসক। কনিষ্ঠা কন্যা কৃষিবিদ তিতলী কাইয়ুম তালুকদার শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি স্নাতকোত্তর গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেছেন। কনিষ্ঠ পুত্র সরিৎ কাইয়ুম তালুকদার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মার্কেটিং বিভাগে স্নাতক পর্যায়ে অধ্যয়নকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের মতিহার হল শাখার সভাপতি হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে সরিৎ কাইয়ুম তালুকদার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে মাস্টার্স করছেন।
স্কুল জীবন থেকেই জনাব আসাদুল হক তালুকদার ছাত্র রাজনীতি, খেলাধুলা, স্কাউটিং, কচি-কাঁচার আসর, বিতর্ক, আবৃত্তি সহ নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে জড়িত ছিলেন । একই সময় তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গেও নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। তিনি টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ন-আহবায়কের দ্বায়িতও পালন করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি করটিয়া সাদত কলেজ ছাত্র সংসদে বিতর্ক বিষয়ক সম্পাদক পদে বিজয়ী হন পরবর্তীতে তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হন । লেখাপড়ার পাশাপাশি ছাত্র রাজনীতি ও বহু সামাজিক সংগঠনেও নেতৃত্ব দেন তিনি। ঢাকাস্থ টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির তিনি প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে বহুদিন দ্বায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৮ সালে তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় পরিষদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। একই সময় তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার’স এসোসিয়েশনে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, এগার দফা, ছয় দফা-সহ আগড়তলা ষড়যন্ত্র মামলার বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলনে ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম আসাদুল হক তালুকদার বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। স্বাধীনতা আন্দোলনে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দিয়েছেন। ১৯৭১ সালের ১৮ মার্চ টাঙ্গাইলে স্বাধীনতা আন্দোলনকে সুসংগঠিত করার উদ্দেশ্যে ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম আসাদুল হক তালুকদারের সভাপতিত্বে বাসাইলের হাবলা-টেংগুরিয়া পাড়া মাঠে আয়োজিত এই জনসভায় প্রিন্সিপাল হুমায়ুন খালিদ, ফজলুর রহমান ফারুক, আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, খন্দকার আব্দুল বাতেন, সাদত কলেজের সাবেক ভিপি এডভোকেট সোহরাওয়ার্দী ঐ সভায় বক্তৃতা করেন।
১৯৯২ সালে সিনিয়র সার্ভিস পুলে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রশাসনে উপ-সচিব হিসেবে যোগদান করেন। ক্রমান্বয়ে তিনি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়, সংস্থাপন মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে উপ-সচিবের দ্বায়িত্ব¡ পালন করেন। দক্ষ প্রশাসক ও সৎ কর্মকর্তা হিসেবে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করায় ২০০১ সালে তিনি পদোন্নতি পেয়ে উপ-সচিব থেকে যুগ্ম সচিব হন। বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবেও তিনি দ্বায়িত্ব পালন করেন বহুদিন। এ সময় গরীব ও অবহেলিত তাঁতি সমাজের উন্নয়নের জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেন তিনি। ২০০৪ সালে ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম আসাদুল হক তালুকদার চাকুরী জীবন থেকে অবসর গ্রহন করেন। পরে তিনি ঢাকাস্থ বাসাইল উপজেলা কল্যাণ সমিতির সভাপতি প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম আসাদুল হক তালুকদার ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। সেসময় তিনি বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের অন্যতম উপদেষ্টাও ছিলেন। তিনি ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল ৮ (বাসাইল-সখিপুর) আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। বর্তমানে তিনি বাসাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল ৮ (বাসাইল-সখিপুর) আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশায় ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম আসাদুল হক তালুকদার বাসাইল ও সখীপুরে ধর্মীয়,সামাজিকসহ নানা উন্নয়নে আর্থিক সহযোগিতা ও দিন রাত গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন। ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম আসাদুল হক তালুকদার মনোনয়ন পেলে জয়লাভে তিনি আত্মবিশ্বাসী। তিনি বাসাইল-সখীপুরে ব্যাপক উন্নয়ন করবেন বলেও জানান। সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ও এলাকার সার্বিক উন্নয়নে বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর । সময় উপযোগী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাসাইল-সখীপুরের প্রতিটি এলাকায় মানসম্পন্ন শিক্ষালাভের সুযোগ সৃষ্টি করা, শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ এবং কর্মমূখী কারিগরি শিক্ষার বিকাশের প্রত্যয়ও ব্যক্ত করেন তিনি।