শুক্রবার, মার্চ ২৪, ২০২৩
Homeটাঙ্গাইল জেলাকালিহাতীঢাকা-বঙ্গবন্ধু সেতু ভায়া টাঙ্গাইল মহাসড়ক; এ দুর্ভোগের শেষ কোথায়

ঢাকা-বঙ্গবন্ধু সেতু ভায়া টাঙ্গাইল মহাসড়ক; এ দুর্ভোগের শেষ কোথায়

নিউজ টাঙ্গাইল ডেস্ক:

ঢাকা-বঙ্গবন্ধু সেতু ভায়া টাঙ্গাইল মহাসড়ক। এ মহাসড়কের চন্দ্রা মোড় থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার। ঢাকার সঙ্গে দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ২০ জেলার সড়ক পথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এ সড়ক। গত কয়েক বছর যাবৎ এ ৭০ কিলোমিটার সড়কে যানজট না থাকাই খবরে পরিণত হয়েছে। এ সড়কে চলাচলকারীরা যানজটের কথা মাথায় রেখেই এখন ঘর থেকে বের হন। সড়ক ব্যবহারকারীদের এখন একটাই প্রশ্ন এ দুর্ভোগের শেষ কোথায়।

অপরিকল্পিতভাবে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক চারলেন উন্নীতকরণ কাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই এ মহাসড়ক চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। তার ওপর নিম্নচাপের কারণে সারাদেশের মতো টাঙ্গাইলেও গত তিন দিন হয়েছে অবিরাম বৃষ্টি। একটানা বৃষ্টির কারণে এ মহাসড়ক একবারেই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে রোববার দুপুর ২টা পর্যন্ত একাধিকবার মহাসড়কের চন্দ্রা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বপার পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার যানজট স্থায়ী হয়। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের। এ রিপোর্ট লেখার সময় রোববার দুপুর ২টা পর্যন্ত মহাসড়কের চন্দ্রা থেকে মির্জাপুরের কুর্ণী পর্যন্ত প্রায় ২৬ কিলোমিটার স্থায়ী যানজট ছিল। কিছু সময় যানবাহনের চাকা ঘুরলেও বেশি সময় আটকা থাকতে হচ্ছে বলে চালকরা জানিয়েছেন।

শনিবার রাত থেকে বৃষ্টি কমে যাওয়ায় রাস্তায় জমে থাকা পানি নেমে গেছে। চার লেন উন্নীতকরণ কাজের ঠিকাদার রোববার ভোর থেকেই সড়ক স্বাভাবিক রাখতে কাজ শুরু করেছেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যার পর থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হলেও শুক্রবার (২০ অক্টোবর) ভোর থেকে শুরু হয় টানা বৃষ্টি। হেমন্তের এমন বৃষ্টি এবং অপরিকল্পিতভাবে চারলেন উন্নীতকরণ কাজের কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়। দেখা দেয় চরম দুর্ভোগ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকা পড়ে যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। পুলিশ মহাসড়কে নিয়মিত চেষ্টা করেও রাস্তার কারণে যানজট দূর করতে সক্ষম হয়নি।

বৃহস্পতিবার রাত থেকে শনিবার রাত পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে কমপক্ষে ২০-২৫টি যানবাহন বিকল হয়ে পড়ে। এতে যানজট তীব্র আকার ধারণ করে। পুলিশ রেকারের সাহায্যে বিকল যানগুলো সরিয়ে নিলেও মহাসড়কের বেহাল অবস্থার কারণে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে পারেনি। শনিবার রাত থেকে ধীরগতিতে যান চলাচল করলেও রোববার সকাল থেকে আবার গাড়ির চাকা বন্ধ হয়ে যায়। সকাল থেকেই গাড়ির চাকা ঘুরছে থেমে থেমে।

রোববার দুপুর ২টা পর্যন্ত মহাসড়কের চন্দ্রা থেকে কুর্ণী পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার এলাকায় যানজট ছিল। টাঙ্গাইলের দিকে ধীরগতিতে গাড়ির চাকা ঘুরলেও ঢাকার দিকে সময় সময় যানবাহনের চাকা থেমে যায়। এতে যানবাহনকে অধিকাংশ সময় আটকা থাকতে হচ্ছে জটে। এ কারণে যাত্রী, শ্রমিক ও মালভর্তি ট্রাকচালকদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বৃষ্টি ও যানজটে বেশি দুর্ভোগে পড়েন নারী ও শিশুযাত্রীরা।

অপরিকল্পিতভাবে মহাসড়কে চারলেন নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ায় অতিষ্ঠ হয়ে পুলিশ ও যানবাহনের চালকরা ক্ষোভ ঝেরেছেন। শনিবার রাত ১১টার দিকে টাঙ্গাইল থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে মির্জাপুরের মা সিএনজি স্টেশন এলাকায় প্রাইভেটকার নিয়ে কাদায় আটকা পড়েন চালক রফিকুল ইসলাম। পরে পুলিশ রেকারের সাহায্যে প্রাইভেটকারটি উদ্ধার করে।

এর আগে সবজি ভর্তি একটি ট্রাক ও কয়েকটি পিকআপ একই স্থানে আটকা পড়ে। একইভাবে পুলিশ বিকল হওয়া যানগুলো উদ্ধার করে বলে জানান ট্রাফিক পুলিশের টিআই মো. সেলিম। রোববার বেলা ১টার দিকে একই স্থানে একটি প্রাইভেটকার মহাসড়কে সৃষ্টি হওয়া গর্তে আটকে পড়ে। পরে একটি ট্রাকের পেছনে বেঁধে টেনে তোলা হয়। পাথর ভর্তি ট্রাকের চালক মামুন মিয়া জানান, শনিবার রাত ১০টার দিকে যমুনা সেতু পার হয়েছি। রোববার সকাল ১১টায় মির্জাপুরে পৌঁছেছি।

উত্তরবঙ্গ থেকে ছেড়ে আসা শ্যামলী পরিবহনের সুপারভাইজার আলমগীর হোসেন, কান্তি পরিবহনের সুপারভাইজার রফিকুল ইসলাম ও যাত্রী হান্নান মিয়া জানান, রাত ৪টার দিকে মহাসড়কের যমুনা সেতু পার হওয়ার পর যানজটে আটকা পড়েন। রোববার দুপুর ১টার দিকে মির্জাপুর পর্যন্ত আসতে পেরেছেন।

মির্জাপুর থানার ওসি একেএম মিজানুল হক জানান, টানা তিন দিনের বৃষ্টি এবং অপরিকল্পিতভাবে মহাসড়কে চারলেন উন্নীতকরণ কাজ শুরু হওয়ায় মহাসড়কে দুই থেকে তিন ফুট কাদার সৃষ্টি হয়েছে। বড় যান ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করলেও ছোট যান আটকে যাচ্ছে। এতে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি থাকায় পুলিশ নিয়মিত কাজ করতে পারছেন না। তবে পুলিশ জট ছাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বৃষ্টি বন্ধ হওয়ায় রোববার বিকেল থেকে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে পারে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

- Advertisement -
- Advertisement -