ধর্ষণ একটি মারাত্মক সামাজিক ব্যাধি যা ক্যান্সারের মতো ছড়িয়ে পড়ছে আমাদের সমাজে। ধর্ষণের ফলে একজন নারীকে হারাতে হয় তার সম্ভ্রম, সামাজিক মর্যাদা, কোনো কোনো ক্ষেত্রে তার জীবন। পরিস্থিতি এখন এমন হয়ে উঠেছে যে, তিন বছরের ছোট একটি শিশুও ধর্ষকদের পশুসুলভ আচরণের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না।
এমন ভয়ঙ্কর অপরাধ প্রশ্ন তুলে আমাদের মানবতাবোধ নিয়ে। বিবেক আর মনুষত্ব থাকার পরও কি আমরা কি করে বন্য জানোয়ারের মতো নিশৃংস হয়ে উঠছি? সময় এসেছে এমন নিকৃষ্ট পাশবিকতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার। ধর্ষণ রোধের দায়িত্ব শুধু রাষ্ট্রের একার কারো না, এই দায়িত্ব আমাদের সবার। যেহেতু অধিকাংশ ধর্ষণের জন্য দায়ী পুরুষরা, তাই সবার প্রথমে উচিত নারীদের প্রতি পুরুষদের ধারণার বদল ঘটানো ।
নারীরা যে পুরুষের সমকক্ষ, এই ধারণা সবার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। পারিবারিক নৈতিকতা এখানে পালন করতে পারে সব চেয়ে বড় ভূমিকা। পাশাপাশি যৌন শিক্ষাকে ‘নিষিদ্ধ’ না ভেবে সন্তানদের সঠিক যৌন শিক্ষা প্রদান করতে হবে। ধর্ষণের পর বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পরিবার সামাজিকতার ভয়ে বিষয়টি গোপন রাখতে বাধ্য হয়। ধর্ষকের শাস্তি দাবি না করে ধর্ষণের শিকার নারীর দিকেই সমাজ আঙ্গুল তুলে । এমন নিচু মানসিকতা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে খুব দ্রুত। ধর্ষকদের চিহ্নিত করে তাদের বিচারের আওতায় এনে কঠিন শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে ধর্ষণ অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব।
বর্তমান সরকার ধর্ষণ এবং নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে নো টলারেন্স অবস্থানে অনড়। যদি এরকম অপরাধের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা যায় তাহলে ভবিষ্যতে একদিন বাংলাদেশ হয়ে উঠবে নারীদের জন্য নিরাপদ আবাসভূমি ।
সাফায়েত ভূইয়াঁ পরিচালক, বাংলার আমরা।