সোমবার, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৫
Homeটাঙ্গাইল জেলানাগরপুরনাগরপুরে গলাকেটে শিক্ষার্থীকে হত্যা; প্রেমিকের স্বীকারোক্তি

নাগরপুরে গলাকেটে শিক্ষার্থীকে হত্যা; প্রেমিকের স্বীকারোক্তি

নিউজ টাঙ্গাইল ডেস্ক: টাঙ্গাইলের নাগরপুরে অষ্টম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীকে গলাকেটে হত্যা করার অভিযোগে ওই ছাত্রীর প্রেমিক গোলাম মোস্তফা রাকিবকে আটক করেছে পুলিশ। রাকিব নাগরপুর উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নের সহবতপুর উত্তরপাড়া গ্রামের ওয়াজেদ আলী মিয়ার ছেলে। রোববার (২ সেপ্টেম্বর) ভোরে পুলিশ তার বাড়ি থেকে আটক করে। সেই সাথে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাকু ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে পুলিশ। বিয়ের জন্য চাপ দেয়ায় পপিকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রেমিক রাকিব আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে। রোববার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মামুনের আদালতে সে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।

নাগরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাঈন উদ্দিন জানান, গত (৬ আগস্ট) এলাকাবাসী উপজেলার নলসন্ধ্যা এলাকায় একটি বাঁশ ঝাড়ে এক কিশোরীর গলাকাটা লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। তাকে গলাকেটে ও চাকু দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়। নিহতের নাম খালেদা আক্তার পপি (১৩)। তার বাড়ি উপজেলার তারাবাড়ি গ্রামে। সে মামুদনগর মুক্তিযোদ্ধা উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ালেখা করত। ওই দিনই ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের লাশ টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়।

এ ঘটনায় নিহতের পিতা আবুল কালাম খালেক গত (৭ আগস্ট) অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামী করে নাগরপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। গত (২৫ আগস্ট) পুলিশ নিহতের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে জাঙ্গালীয়া তারাবাড়ি গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে ছানোয়ার হোসেন, বাঘেরবাড়ি গ্রামের চুন্নু মিয়ার ছেলে রুবেল ও আয়নাল হকের ছেলে হাসানকে আটক করে। সাতদিনের রিমান্ড চেয়ে পুলিশ তাদের গত (২৬ আগস্ট) আদালতে প্রেরণ করেন। আদালত তাদের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পুলিশ তাদের কাছে থেকে গুরুত্বপুর্ন কোন তথ্য না পেয়ে গত (২৯ আগস্ট) তিনজনকে জেলহাজতে প্রেরণ করে।

এদিকে পুলিশ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে জানতে পারে নিহত ওই স্কুল ছাত্রীর সাথে রাকিবের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। রাকিব বিবাহিত ও নির্মাণ শ্রমিক। সে এই হত্যাকান্ডে জড়িত রয়েছে এমন নিশ্চিত হয়ে পুলিশ তাকে রোববার (২ সেপ্টেম্বর) ভোর সাড়ে চারটার সময় তার বাড়ি থেকে আটক করে। দুপুরে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হলে সে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেয়।

রাকিব আদালতকে জানায়, পপির সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পুর্বে পপির সাথে আরও কয়েকজনের প্রেম ছিল। রাকিবকে বিয়ের জন্য ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করতে থাকে পপি। রাকিব কয়েক মাস আগে বিয়ে করেছে। এ কারণে পপিকে বিয়ে করা সম্ভব না বলে জানিয়ে দেয়। ঘটনার দিন পপি রাকিবকে ফোন করে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে আসে। তাকে কোথাও নিয়ে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকে। পরে রাকিব কোন উপায়ন্তর না দেখে তাকে সারাদিন টাঙ্গাইল শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে রাতে নাগরপুরের নলসন্ধ্যা এলাকার একটি বাঁশঝারে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে প্রথমে গলায় গামছা পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য গলা কেটে ও চাকু দিয়ে শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাত করে পালিয়ে যায়।

নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

- Advertisement -
- Advertisement -