সোমবার, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৫
Homeদেশের খবরপাখি ও গরু পালন করে সফল শারমিন

পাখি ও গরু পালন করে সফল শারমিন

পাখি চাষ করে সফল নারী উদ্যোক্তা পাবনার সাঁথিয়ার এক বীর মুক্তিযোদ্ধার কন্যা শারমিন সুলতানা। নারীরা শুধু ঘরবন্দি না, পরনির্ভরশীলও না, তা তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন। তারাও হতে পারেন সফল উদ্যোক্তা। তাই তিনি নিজ উদ্যোগে দেশি বিদেশি পাখি ও গরু পালন করে আয় করছেন বেশ ভালো অংকের টাকা। শারমিন সাঁথিয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ বীর মুক্তিযোদ্ধা আয়েজ উদ্দিনের মেয়ে ও সাঁথিয়ার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ইন্তাজ মল্লিকের ছেলে সোহেলের স্ত্রী।

সরজমিনে জানা গেছে, ২০২০ সালে তাঁর খামারে দেশি বিদেশি ২৮ জোড়া পাখি নিয়ে যাত্রা শুরু করেন। এতে খরচ হয় ৮৫ হাজার ২০০ টাকা। ওই বছরে আয় হয় ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। ওই বছরের খরচ বাদ দিয়ে লাভ হয় ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩০০ টাকা। ২০২২ সালে এসে তার খামারে ১১০ জোড়া দেশি বিদেশি পাখি হয়েছে। এতে তাঁর নিট লাভ হয় ৫ লাখ ৩৩ হাজার ১০০ টাকা। বর্তমানে তাঁর খামারে দেশি, বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির পাখির মধ্যে রয়েছে ডায়মন্ড ডাব, জাপানিজ বাজরিগর, ফিপ্ত, ককটেল, লাভ বার্ড ও দেশি বিদেশি কবুতর এবং কয়েক জাতের গরু। মাঝে মধ্যেই পাখি ও গরুর খামার দেখতে আসেন উপজেলা যুবউন্নয়ন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রশিক্ষকগণ। কোন সমস্যা দেখা দিলে তাকে পরামর্শ দেন সমাধানের।

খামার মালিক শারমিন বলেন, ২০১২ সালে তিনি প্রানিবিদ্যায় স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। এরপরই তার বিয়ে হয় যায়। বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা হওয়ায় চাকরির কোটা থাকা সত্ত্বেও ছোট সন্তান হওয়ায় সেই সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারি নি। আমার অদম্য ইচ্ছা ছিল স্বনির্ভর হওয়ার। নারী মানেই ঘরবন্দি পরনির্ভর- এটা আমি মানতে পারি না। প্রথমে শুরু করি বাড়ির ছাদে পোলট্রি ফার্ম। সঠিক প্রশিক্ষণের অভাবে সফল হতে পারিনি। ওই ফার্মে ভাইরাস আক্রান্ত মুরগি বাচ্চা দেওয়ায় ক্ষতি হয়। কিন্তু এতে আমি দমে যাইনি। পরবর্তী সময়ে বাড়ির ছাদে অল্প কিছু পাখি নিয়ে ছোট আকারে পালন শুরু করি। এ বিষয়ে উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সাহায্য নেই। বিভিন্ন সভা সেমিনারে উপস্থিত থেকে জ্ঞান আহরণ করি।

তিনি বলেন, অল্পদিনেই সাফল্য পাওয়ায় পাখির খামারের পাশাপাশি গরু মোটাতাজাকরণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসএমএস এগ্রো নামে আরও একটি ফার্ম করে ওইখানে গরু, ছাগল পালন শুরু করি। আমার পাখির খামারের নাম বার্ড ফ্যাক্টরি। এই বার্ড ফ্যাক্টরি ও এসএমএস এগ্রো ফার্মে গত তিন বছরে কয়েক লক্ষ টাকা আয় করি। বর্তমানে ৪ জন কর্মচারি নিয়ে খামার পরিচালনা করছি। আমি চাই, আমার মত শিক্ষিত নারীরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে আত্মকর্মসংস্থান গড়ে তুলুন। তাহলে নিজে যেমন অর্থনীতিতে স্বাবলম্বী হবেন, তেমনি দেশেরও উন্নয়ন হবে।

উপজেলা সহকারী যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মুক্তা ভদ্রা বলেন, শারমিন একজন সফল উদ্যোক্তা। চাকরির পেছনে না ছুটে যুব উন্নয়ন থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে খামার গড়ে ভালো অর্থ আয় করা সম্ভব। শারমিনও তাই করেছেন। আমরা তার সাফল্য কামনা করি।

নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

- Advertisement -
- Advertisement -