এনায়েত করিম বিজয় :
টাঙ্গাইলের বাসাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূরুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে দোকান বরাদ্দের নামে প্রায় কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, কোন প্রকার সরকারি নিয়ম নীতি অনুসরণ না করে থানার সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের জমি বেদখল করে তিনি ২৬টি দোকান বরাদ্দ দেন। শুধু তাই নয়, এসব দোকান নির্মাণ করতে বিভিন্ন ইটভাটা থেকে নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে বিনা পয়সায় ইট নেয়া, বালু ও ট্রাক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও একই কায়দায় বালু নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। পুলিশের বড় কর্তা হওয়ার কারণে তার বিরুদ্ধে কোন কথা বলার সাহস পাচ্ছে না এলাকাবাসী। বাসাইলবাসীর কাছে এ ওসি এখন গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সরকারি বিধি অনুযায়ী দুই লাখ টাকার উপরে কোন অবকাঠামো নির্মাণ করতে হলে দরপত্র আহবান করতে হবে। আর ১০ লাখ টাকার কাজ করতে হলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষে কোটেশনে করা যাবে। কিন্তু বাসাইল থানার ওসি কোন নিয়মনীতিই অনুস্বরণ করেননি। অভিযোগ উঠেছে বাসাইলের চিহ্নিত কয়েকজন দালালের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে দুই থেকে ৫ লাখ টাকা নেয় দোকান বরাদ্দ দেয়ার নামে। কিন্তু চুক্তিপত্রে সে টাকা উল্লেখ নেই। দোকান বরাদ্দ পাওয়া এক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমার কাছ থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা নেয়া হয়েছে। চুক্তিপত্রে দুই লাখ টাকা উল্লেখ করেছে। বাকি দেড় লাখ টাকা ওসি ও দালালরা ভাগ বাটোয়ারা করে খেয়েছেন বলে শুনেছি। শুধু ওই ব্যবসায়ীই নন। ব্যবসায়ীরা জানান, ৫ লাখ টাকা নিয়ে তিন লাখ, সাড়ে তিন লাখ নিয়ে দুই লাখ, দুই লাখ টাকা নিয়ে এক লাখ টাকা চুক্তিপত্রে উল্লেখ করেছেন। বাকি টাকার কোন হিসেব নেই।
ওসি নূরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যাপক স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। থানার পাশের ফোটপাতের দোকান গুলো থেকেও তিনি প্রতি মাসে এক হাজার টাকা করে চাঁদা তুলেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
বাসাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী শহীদুল ইসলাম বলেন, থানার পাশে অবকাঠামো নির্মাণ করার বিষয়ে ওসি পরিষদের সাথে কোন আলোচনা করেননি। এ ব্যাপারে আমরা তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি এ টাকা দিয়ে থানার পুলিশ ভ্যান এবং ভাড়ার টাকা দিয়ে গাড়ির মেরামতের কাজ করা হবে বলে জানান। টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নূর ই ইলাহী বলেন, এ সড়কটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধিনে ছিল। এটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে। এখনও যেহেতু আমাদের নয় সে কারণে আমরা আপাতত কোন পদক্ষেপ নিচ্ছি না।
এ ব্যাপারে বাসাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নুরুল ইসলাম খান বলেন, অস্থায়ীভাবে কিছু দোকান ঘর করা হয়েছে। যেহেতু জায়গাটা থানার সেহেতু এখানে থানার সুভিধার্থে যে কোন কাজ করতে পারে। যার কাছে থেকে যে পরিমান টাকা সিকিউরিটি হিসেবে নেওয়া হয়েছে সেই পরিমান উল্লেখ করেই চুক্তিপত্র করে দেওয়া হয়েছে। এখানে ছলচাতুরির কোন সুযোগ নেই। ইট বালু খোয়াসহ প্রয়োজনীয় যা কিছু লেগেছে সবই নগদ টাকা দিয়ে ক্রয় করেছি, যদি কেউ কোন অভিযোগ করে থাকে তাহলে আপনারা খোঁজ খবর নিয়ে দেখুন সবই বুঝতে পারবেন।