নিজস্ব প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন নিপীড়নের ঘটনা তদন্তে মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। এর আগে ছাত্রীদের যৌন নিপীড়নের ঘটনায় সোমবার ভ্রাম্যমান আদালত সহকারী ইংরেজি শিক্ষক সাঈদুর রহমান বাবুলকে এক বছরের কারাদণ্ড দেন। মঙ্গলবার ওই শিক্ষককে বিন্দুবাসিনী বালিকা বিদ্যালয় থেকে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার কারগিল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে বদলি করেছে শিক্ষা অধিদপ্তর।
বিন্দুবাসিনী বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে অভিভাবক,শিক্ষার্থী ও সুধী সমাজের চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষের কারণ এবং তা নিরসনের উপায় নির্ধারণ করতে মঙ্গলবার টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক খান মো: নুরুল আমীন ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেন। এ কমিটিকে আগামী ৩ কার্য দিবসের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো: আশরাফুল মমিন খানকে। এছাড়া কমিটির দুই সদস্য হলেন টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: আহাদুজ্জামান মিয়া ও জেলা শিক্ষা অফিসার লায়লা খানম সদস্য হিসেবে রয়েছেন। কমিটিকে ৩ দিনের মধ্যে জেলা প্রশাসক বরারব তদন্ত প্রতিবেদন প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এদিকে টাঙ্গাইল শহরের বিন্দুবাসিনী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বহিষ্কার দাবি করেছেন ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ। মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। এছাড়া সংবাদ সম্মেলন ছাত্রীদের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত, শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধ, সহকারী শিক্ষক সাইদুর রহমানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, সহকারী শিক্ষক এ্যানি সুরাইয়া, হাবিবুর রহমান, মাকসুদা রানার বদলির দাবি জানানো হয়।
মঙ্গলবার সকাল ১১টায় টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থীর অভিভাবক কমান্ডার ফেরদৌস আলম রুঞ্জু বীরপ্রতীক, এডভোকেট শামীম চৌধুরী দয়াল, হাসান রেজা অপু, খন্দকার খালেদা ফেরদৌস, সুলতানা সরোয়ার, ৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ফারজানা হোসাইন মিতু, তাহিয়া তাবাসছুম প্রমুখ।
উল্লেখ্য, শিক্ষক সাঈদুর রহমান বাবুল দীর্ঘদিন ধরেই ক্লাসের ছাত্রীদের অশালীন মন্তব্য ও কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের । রোববারও (৩০ সেপ্টেম্বর) নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে কু-প্রস্তাব দেন তিনি। ওই দিনই সব ছাত্রীরা প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি জানায়। কিন্তু প্রধান শিক্ষক মামুন তালুকদার অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো ছাত্রীদের স্কুল থেকে বের করে দেয়ার ভয় দেখান।
স্কুল ছুটির পর বিষয়টি ছাত্রীরা তাদের অভিভাবকদের জানালে সোমবার অফিস কক্ষে বিদ্যালয়ের সহকারী ইংরেজি শিক্ষক সাঈদুর রহমান বাবুলকে অবরুদ্ধ করে রাখেন তারা। অবস্থা বেগতিক দেখে সাঈদুর কৌশলে পালানোর চেষ্টা করেন। পরে বিদ্যালয়ের ছাত্রী ও অভিভাবকরা সাঈদুরকে ধরে বেদম পিটুনি দেয়। এতে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এরপর সোমবার (১ অক্টোবর) ইংরেজি বিষয়ের সহকারী সেই শিক্ষক সাঈদুর রহমান বাবুলকে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সাঈদুর রহমান বাবুল কালিহাতী উপজেলার পারখী গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে।
নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।