বাসাইল প্রতিনিধিঃ আসছে বাংলা নববর্ষ। এ উপলক্ষে পুরো বৈশাখ মাস জুড়েই গ্রাম-গঞ্জের বিভিন্ন অঞ্চলে চলে বৈশাখী মেলা। আর এই মেলাকে সামনে রেখে নিপুন হাতে মাটি দিয়ে তৈরী পুতুল, হাতি, মাটির ব্যাংক, ফুলের টপ, ঘোড়া হাড়ি-পাতিলসহ নানা ধরণের বাহারী মৃৎশিল্প তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার ৩টি গ্রামের দুই শতাধিক মৃৎশিল্প কারিগর কুমার পরিবার।
জানা যায়, বাসাইল পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডে প্রায় ৮০টি পরিবার, কাশিল গ্রামের প্রায় ৫০টি ও রাশড়া গ্রামে প্রায় ৩০টি পরিবার মৃৎশিল্পের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন । পৈত্রিক ভিটা মাটিতে বাপ-দাদার এ পেশাকে আঁকড়ে ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন তাঁরা।
বাসাইল পাল পাড়ার মাহিন্দ্র চন্দ্র পাল জানান, দুই ফিট করে এক শতাংশ জমির মাটি প্রায় ১৫ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করতে হয়। এছাড়াও বাহারী শিল্প তৈরী করে সেগুলোতে রঙ ও মাটিসহ সব মিলিয়ে প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়ে থাকে। ৩০ হাজার টাকা খচর করলে প্রায় ৬০ হাজার টাকা বিক্রি হয় তাদের।
বাসাইল পাল পাড়ার রায় মোহন পাল জানান, সব মাটি দিয়েই মৃৎশিল্পীর কাজ করা যায় না, তাই এ মাটির মূল্য বেশি। মাটি, লাকরী ও রঙসহ সবকিছুর মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় দিন দিন এ পেশা থেকে মৃৎশিল্পীরা সরে যাচ্ছে।
সরেজমিনে বাসাইল পাল পাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, এ উপলক্ষে মৃৎশিল্পীদের নিপুন হাতে তৈরী বাঘ, হাতি, ঘোড়া, হরিণ, কাঁঠাল, আম, কলস, ব্যাঙ, পিঠা তৈরীর নানা ছাঁচ তৈরী করছেন আর রোদ্রে শুকাচ্ছেন। চৈত্র মাসের শুরু থেকে তারা এসব শিল্পকর্ম তৈরী শুরু করেছেন। বছরের মধ্যে বৈশাখ মাসেই তৈরী মাটির জিনিসপত্র সবচেয়ে বেশি বিক্রি করে থাকেন।
রঙ্গমালা রাণী পাল তার নিপুন হাতে মাটি হরিণ, হাতি, ঘোড়া, ষাঁড় তৈরী করছেন আর উঠানে রোদ্রে শুকাচ্ছেন। তিনি জানান, সবকিছু মিলে এখন আগের মত বেশি লাভ হয় না। আর এখন এ্যালোমেনিয়াম ও প্লাষ্টিকের জিনিসপত্র বাজারে আসায় মাটির জিনিসপত্রের কদর কমে গেছে। যে কারণে বাপ-দাদাদের এ পেশা ছেড়ে দিচ্ছে অনেকেই এখন অন্য পেশায় জড়িয়ে পড়ছেন।