ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের আওতায় মুসলমানদের দফন কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য একটি কবরস্থান এবং হিন্দুদের দাহ করার জন্য একটি শ্মশান রয়েছে। এই কবরস্থান এবং শ্মশানে ৪৬ জন কর্মী দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও দাফন ও দাহ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য তাদের তেমন কোনও সুরক্ষা সরঞ্জামের (পিপিই) ব্যবস্থা নেই। করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের দাফন করতে হচ্ছে সম্পূর্ণ অরক্ষিত অবস্থায়। এই পরিস্থিতিতে আতঙ্ক কাজ করছে কর্মীদের মাঝে।
মহানগরীর ভাটিকাশর কবরস্থানের প্রধান খাদেম হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘ভাটিকাশর কবরস্থানে আমরা ছয় জন কর্মী দায়িত্ব পালন করে আসছি। সাধারণ মৃত্যুসহ করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত ব্যক্তির গোসল, কাফনের কাপড় পরানো এবং দাফনের কাজ করতে হচ্ছে। এসব কাজ করার জন্য সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে আমাদের সুরক্ষার জন্য পিপিই-মাস্ক, গ্লাভস দেওয়া হয়নি। সুরক্ষা ব্যবস্থা না থাকায় আতঙ্ক নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।’
ভাটিকাশর কবরস্থানের সহকারী খাদেম মাওলানা আব্দুল কাদির লিটন বলেন, ‘করোন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পর গত এপ্রিলে ৩২ জন ব্যক্তিকে দাফন করা হয়েছে; এর মধ্যে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ২১ জন রয়েছেন। মে মাসে ৪২ জন ব্যক্তির দাফন হয়েছে; এর মধ্যে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান ১৮ জন। এ মাসে ১১ জুন পর্যন্ত মোট ১৪ ব্যক্তিকে দাফন করা হয়েছে; এর মধ্যে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান ৯ জন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই কবরস্থানে সরকারি হিসাব মতে তিন জন ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত দেখানো হয়েছে। তাদের সিটি করপোরেশনের টিম এসে দাফন করেছে। করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত ব্যক্তিদের গোসলসহ দাফন কার্যক্রম করতে না চাইলেও স্থানীয় লোকজন জোরপূর্বক আমাদের দিয়ে এই কাজগুলো করাচ্ছে। সুরক্ষা ব্যবস্থা না থাকায় সব সময় আতঙ্কে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।’ দ্রুত সুরক্ষা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে মাস্ক, গ্লাভসসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদির ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি।
সুরক্ষা ব্যবস্থা না থাকার বিষয়টি স্বীকার করে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের স্যানিটারি ইন্সপেক্টর দীপক মজুমদার জানান, সিটি করপোরেশনের আওতাধীন কবরস্থান এবং শ্মশানে কর্মরতদের খুব শিগগিরই সুরক্ষা সরঞ্জামাদি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন জানান, করোনা পরিস্থিতিতে কবরস্থান ও শ্মশানের কর্মচারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। দ্রুতই তাদের পিপিই দেওয়া হবে।
নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।