নিজস্ব প্রতিবেদক: আসছে ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতার বক্তব্য রাখার একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতার নাম আব্দুর রউফ মিয়া। তিনি উপজেলার ৩ নং ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
গত ১০ ডিসেম্বর উপজেলার হাট ফতেপুর এলাকায় ওয়াজ মাহফিলে টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনে নৌকা মার্কার মনোনীত প্রার্থী খান আহমেদ শুভ’র জন্য ভোট চেয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা বলেছেন। তার এই বক্তব্যের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েন। এনিয়ে উপজেলাজুড়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।
জানা গেছে, আব্দুর রউফ মিয়া ফতেপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি ও পরে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। বিএনপির মনোনয়ন না পেয়ে ২০১৭ সালের ১৬ এপ্রিল বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
এরপর ওই বছর ২০ আগস্ট ফতেপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বঙ্গবন্ধুর শাহাদত বার্ষিকী অনুষ্ঠানে প্রয়াত এমপি একাব্বর হোসেনের হাতে ফুলের নৌকা দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। এরপরের বছর ৩১ মার্চ কাউন্সিলরদের ভোটে ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে আব্দুর রউফ মিয়া বলছেন, আগামী ৭ তারিখে নির্বাচন। কেউ ঝগড়া করবেন না। ঝগড়া করবেন না তার কারণ বিএনপি কিন্তু নির্বাচনে আসে নাই, আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী খান আহমেদ শুভ। আরেকজন বিদ্রোহী প্রার্থী দাঁড়াইছে তার অবস্থা জানেন অসুস্থ মানুষ হঠাৎ কইরা উদ্যোগ নিয়েছে আশা করবো বিএনপির ভাইয়েরা যদি নৌকা মার্কায় ভোট দিতে ইচ্ছুক না করেন তাহলে কেন্দ্রে যাবার দরকার নাই। তার কারণ আমরা আ.লীগের দুইটা প্রার্থী আমরাই ভোট দিয়ে যাকে মনোনীত করি সেই আমাদের এমপি হবে ঠিক কিনা।
তিনি বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা যাকে প্রতীক দিয়েছেন ওনি যদি এমপি হন তাহলে আমি এই গ্রামে অনেক কাজ করতে পারবো। আমি চেয়ারম্যান হওয়ার আগে ইট সলিং ছিলো না। চেয়ারম্যান হওয়ার পরে দুই ওয়ার্ডে ইট সলিং শেষের দিকে এবং কার্পেটিং শুরু করছি। আমার প্রার্থী খান আহমেদ শুভ দয়া কইরা ভোট দেন তাহলে আরও ব্যাপক কাজ করতে পারবো। এদিকে রউফ মিয়ার এই বক্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, আব্দুর রউফ মিয়ার বিরুদ্ধে টাঙ্গাইল-৭ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর এনায়েত হোসেন মন্টুর নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠনে বাঁধা প্রদানের একটি অভিযোগ দিয়েছেন। এ বিষয়ে তাকে শোকজও করা হয়েছে। শোকজের পরপরই এধরনের বক্তব্য দিয়ে ফের আলোচনায় এসেছেন তিনি। তার এই বক্তব্যে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রউফ মিয়া বলেন, ভিডিওতে আমার বক্তব্য কেটে কেটে প্রচার করা হয়েছে। আমি নৌকা মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন এই কাজ করেছে।
এ ব্যাপারে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাকিলা বিনতে মতিন জানান, এখন পর্যন্ত লিখিত কোনো অভিযোগ পায়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও দেখেছি। বিষয়টি পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
টাঙ্গাইল-৭ আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারক সিনিয়র সহকারি জজ মল্লিকা বসাক বলেন, আমাদের সরাসরি কথা বলা নিষেধ। আপনি আমাদের দফতরে এসে আমার স্টাফদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।