সোমবার, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৫
Homeবিনোদনমির্জাপুরে নদীর পার ও ব্রিজে ঈদ মিলন মেলা

মির্জাপুরে নদীর পার ও ব্রিজে ঈদ মিলন মেলা

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে নেই কোন বিনোদন কেন্দ্র। নেই পার্ক, নেই সিনেমা হল। তাই মির্জাপুরের মানুষ বংশাই নদীর ত্রিমোহনা, লৌহজং নদীর পাহাড়পুর ব্রিজ ও নবনির্মিত খাটিয়ার ঘাট-কালিয়াকৈর সড়কের কবিরকুড়ি ব্লকের স্থান বিনোদন স্পট হিসেবে বেছে নিয়েছেন। ব্রিজ দুটিসহ কবিরকুড়ি ব্লক বেশ জনসমাগম হয়েছিল ঈদের দিনে। ব্রিজের পাড়ের বর্ষার মনোরম দৃশ্য এবং পাহাড়ি এলাকায় বিশাল চকের মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া নবনির্মিত সড়কটি দর্শনার্থীদের মন কাড়ে। এই দৃশ্য উপভোগ করার জন্য উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ইঞ্জিন চালিত নৌকা, মোটরসাইকেল, সিএনজি ও ব্যাটারি চালিত অটো রিকশা এবং পিকআপযোগে প্রতিদিনই বিকেলে বিনোদন পিয়াসী মানুষ ঘুরে বেড়াই ব্রিজ দুটিতে। বিশেষ করে উৎসব পার্বনে যেন ঢল নামে ব্রিজ দুটিতে। সেই দৃশ্যই দেখা যায় ঈদুল ফিতরের তৃতীয় দিনেও। একই অবস্থা ছিল ঈদের দিন এবং পরের দিন।

দুপুর গড়িয়ে বিকেল হওয়ার সাথে সাথেই বিনোদন পিয়াসী শত শত মানুষের পদচারণ ঘটে ব্রিজ দুটিকে ঘিরে। সব বয়সীর মানুষের মিলন মেলায় পরিণত হয় এখানে। এলজিইডি’র তত্ত্বাবধায়নে তৈরি মির্জাপুরের ব্রিজ দুটি নির্মাণ হওয়ায় বিনোদন পিয়াসী মানুষের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করার সৃষ্টি হয়েছে।

এক সময় মির্জাপুর সদরে দুটি, হাঁটুভাঙ্গা বাজারে ১টি, পাকুল্যা বাজারে দুটি ও জামুর্কী বাজারে একটি সিনেমা হল ছিল। প্রতি বছর ঈদ ও দুর্গা পূজার সময় সিনেমা হলগুলোতে দর্শকদের উপচে পড়া ভীর দেখা যেত। গ্রামাঞ্চলে স্যাটেলাইট চ্যানেল চালু হওয়ার পর থেকে সিনেমা হল মালিকদের লোকসান গুনতে হয়। এ কারণে প্রায় এক যুগ আগে একে একে সব সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে মির্জাপুরে বিনোদন পিয়াসী মানুষ বিনোদন থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়ে।

মির্জাপুরে বিনোদন পিয়াসী মানুষদের জন্য সরকার ও পৌরসভার উদ্যোগে বিনোদন পার্কের ব্যবস্থা করা হয়নি। এমনকি ব্যক্তি উদ্যোগেও কোন পার্ক নির্মাণ করা হয়নি। বিনোদন পিয়াসীদের জন্য কোন ব্যবস্থা না থাকায় অভিভাবকরা তাদের কোমলমতি ছেলে মেয়ে ও বন্ধু বান্ধবরা ব্রিজ দুটিতে গিয়ে আনন্দ করছেন এবং সময় কাটাচ্ছেন।

এদিকে পিকআপে চড়ে আসা কয়েকজন যুবক উচ্চ স্বরে গান বাজিয়ে হৈ-চৈ করে আনন্দ করছিল। তখন তারা বলে, কোথাও বিনোদনের ব্যবস্থা না থাকায় আমরা বন্ধুরা পিকআপ ভাড়া করে ব্রিজের উপর আনন্দ করছি।

মির্জাপুর বাজারের ব্যবসায়ী পোষ্টকামুরী গ্রামের বাসিন্দা কিবরিয়া জানান, তিনি বংশাই নদীর ব্রিজটিতে বেড়াতে এসেছেন। ব্রিজটি বিনোদন পিয়াসীদের জন্য জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

বংশাই ব্রিজের উত্তর পাশে চেয়ারম্যান বাজারের ব্যবসায়ী কামাল উদ্দিন বলেন, প্রতিদিন অনেক মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে ব্রিজের উপর সময় কাটান। ঈদকে কেন্দ্র করে মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্রিজটিতে প্রতিদিন শত শত মানুষের সমাগম দেখে সে মুগ্ধ। এতে তার দোকানে বিক্রিও বেড়েছে কয়েক গুন। তিনি ব্রিজের উত্তর-পাশে নদীর পার ভরাট করে দর্শনার্থীদের বসার জায়গা করার জোর দাবি জানান।

মির্জাপুর পৌরসভার মেয়র সাহাদৎ হোসেন সুমনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, শিশুদের জন্য পার্ক নির্মাণে তার পরিকল্পনা রয়েছে। বরাদ্দ পেলেই দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।

মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত সাদমীন বলেন, আমি মির্জাপুরে কয়েক মাস আগে যোগদান করেছি। মির্জাপুরে বিনোদন পিয়াসীদের জন্য কোন ভাল জায়গা নেই। দ্রুত খাস জমি খুঁজে বিনোদন পার্ক নির্মাণের উদ্যোগ নিবেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

- Advertisement -
- Advertisement -