নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের কাছে সবেধন নীল মণি হলো একটি বাঁশের সাঁকো। উপজেলা সদরে লৌহজং নদীর উপর সেতুটি নির্মিত। কুমুদিনী হাসপাতাল ঘাট হয়ে নদীর দুই পাড়ের মানুষ এ সাঁকোটি ব্যবহার করে চলাচল করে।
সম্প্রতি ভেঙে পড়েছে সাঁকোটি। পানির তীব্র স্রোত ও কচুরিপানার চাপে সাঁকোটি ভেঙে পড়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের অন্তত ৩৫ গ্রামের মানুষ।
গত তিন দিন ধরে চরম ভোগান্তিতে থাকলেও সংস্কারের উদ্যোগ নিচ্ছে না ইজারাদার ও জেলা পরিষদ। বাধ্য হয়ে তিন কিলোমিটার ঘুরে নদীর দক্ষিণ পাড়ের মানুষ হাসপাতালে সেবা নিতে আসতে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, বুধবার (৫ জুন) রাতে প্রচুর বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া বয়ে যায় এবং নদী খননের কাজে নদীর বিভিন্ন স্থানে দেওয়া বাঁধগুলি ভেঙে যায়। এতে লৌহজং নদীর পানি বেড়ে যায়। লৌহজং নদীর পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উজান থেকে কচুরিপানা আসতে থাকে। যা ভাটির দিকে যাওয়ার সময় নদীর ওই স্থানে থাকা বাঁশের সাঁকোতে বাধাগ্রস্ত হয়।
এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার (৬ জুন) সকাল থেকে লোকজন ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো পার হয়ে গন্তব্যে চলাচল করতে থাকে। রাতে কচুরিপানার সঙ্গে স্রোতের অতিরিক্ত চাপে সাঁকোটি ভেঙে পানিতে ভেসে যায়। এতে নদীর দক্ষিণ পাড়ের মানুষ চরম দুর্ভোগ পড়ে।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, এই সাঁকো দিয়ে মির্জাপুর পৌর এলাকার সাহাপাড়া, সরিষাদাইড়, আন্ধরা, পাহাড়পুর ছাড়াও মির্জাপুরের দক্ষিণাঞ্চলের ভাওড়া, বহুরিয়া, উয়ার্শী ইউনিয়নের অন্তত ৩৫ গ্রামের লোকজন সাঁকো দিয়ে হেঁটে নদী পার হয়ে রিকশা, অটোরিকশা, ব্যক্তিগত গাড়িসহ নানা ধরনের যানবাহনে গন্তব্যে যান। সাঁকোটি দিয়ে নিয়মিত মোটরসাইকেলও চলাচল করে। কুমুদিনী হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ, নার্সিং স্কুল ও কলেজ, ভারতেশ্বরী হোমসের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেকেই নদীর দক্ষিণ পাড়ে থাকেন। তারাও এই সাঁকো ব্যবহার করেন।
এছাড়া সাঁকোটি ব্যবহার করে অনেকে মোটরসাইকেলযোগে ঢাকার ধামরাই ও মানিকগঞ্জের সাটুরিয়াসহ বিভিন্ন গন্তব্যে যান। কিন্তু সাঁকোটি হঠাৎ ভেঙে যাওয়ায় গত তিন দিন ধরে মানুষকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে পারাপারের জন্য কোনো নৌকারও ব্যবস্থা নেই।
জানা যায়, নদীর ওই ঘাট জেলা পরিষদ থেকে প্রতিবছর ইজারা দেওয়া হয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে সেখানে স্বাধীনতার পর দীর্ঘ ৫৩ বছরেও সেতু নির্মাণ হয়নি। ফলে প্রতিবছর এই মৌসুমে বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
মির্জাপুর পাহাড়পুর গ্রামের বাসিন্দা রফিক মিয়া জানান, প্রতিবছর আমাদের এরকম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
খেয়াঘাটের পাটনি সুভাষ দাস জানান, প্রতিবছর এই মৌসুমে বাঁশের সাঁকো ভেঙে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়। খেয়া নৌকা প্রস্তুত করতেও সময়ের ব্যাপার। আমরা চেষ্টা করছি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খেয়া নৌকাটি চালু করতে।
এ বিষয়ে মির্জাপুর পৌরসভার মেয়র সালমা আক্তার শিমুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ার কথা আমাকে কেউ জানায়নি। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।