মৃত্যুর আগে খুনিদের নাম বলে গেছেন সাংবাদিক সুবর্ণা।বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আনন্দ টিভির পাবনা প্রতিনিধি ও দৈনিক জাগ্রত বাংলার সম্পাদক ও প্রকাশক সাংবাদিক সুবর্ণা আক্তার নদী মৃত্যুর আগেই তার ওপর হামলাকারীদের নাম বলে গেছেন। সাবেক স্বামী রাজীব কয়েকজন সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে সুবর্ণাকে কুপিয়েছেন বলে হাসপাতালে আহতাবস্থায় সুবর্ণা জানিয়েছেন বলে দাবি করেছেন তার মা ও মেয়ে।
সুবর্ণার মা মর্জিনা বেগম বলেন, মেয়ে মৃত্যুর আগে হাসপাতালে হামলাকারীদের নাম আমাদের জানিয়ে গেছে। রাজীব ও তার সহকারী মিলনসহ কয়েকজন তাকে কুপিয়েছে। আমার মেয়ে তাদের চিনেছিল। র্যাব ও পুলিশকে আমি সব তথ্য জানিয়েছি। নিহত সুবর্ণার মেয়ে জান্নাতও (৭) একই তথ্য পুলিশকে জানিয়েছেন।
জানা যায়, বছর দেড়েক আগে রাজীবের সঙ্গে নদীর ডিভোর্স হয়। এই ডিভোর্সের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আদালতে একটি মামলাও চলছে।
নিহত সুবর্ণা আকতার নদীর বোন চম্পা খাতুন বলেন, আমার বোন তার সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে গত বছরের ৪ জুন থানায় মামলাটি করেছিলেন। মামলা আদালতে বিচারাধীন। তার সাবেক স্বামী রাজিবের লোকজন নিশ্চিত ছিলেন যে তারা মামলায় হেরে যাবেন। আর এই কারণেই সুবর্ণা নদীকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেন তার বড় বোন।
তিনি আরো বলেন, আবুল হোসেনের ছেলে রাজীবের সঙ্গে বছর দুয়েক পূর্বে বিয়ে হয়। বছর দেড়েক আগে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এর পর সুবর্ণা নদী পাবনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আদালতে একটি যৌতুক মামলা করেন। এ মামলায় সুবর্ণা তার সাবেক স্বামী রাজীব ও তার বাবা আবুল হোসেনসহ তিনজনকে আসামি করেন।
গতকাল মঙ্গলবার এ মামলার সাক্ষ্য দেয়ার দিন ছিল। এতে সুবর্ণা আদালতে সাক্ষ্য উপস্থাপন করেন। মামলায় ফেঁসে যাওয়ার আশঙ্কায় আসামিরা পরিকল্পিতভাবে সুবর্ণাকে হত্যা করেছে বলে দাবি তার পরিবারের।
তারা জানান, ইতিপূর্বেও সুবর্ণা নদীকে বিভিন্ন ভাবে শহরে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করা হয়। গত বছরের জুনে তার গলায় চাকু চালানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় তারা। পরে সুবর্ণা নদী জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে পাবনা সংবাদপত্র পরিষদ মিলনায়তনে গত ২২ জুলাই সংবাদ সম্মেলন করেন। পরে ওই বছরেই ৩ অক্টোবর একই দাবিতে ঢাকার ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন মিলনায়তনে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে জেলা শহরের রাধানগর আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে নিজ বাসার সামনে খুন হন সুবর্ণা নদী।
এ ঘটনায় মামলা নিহত সাংবাদিকের মা বুধবার বিকাল ৩টায় পাবনা থানায় মামলা করেছেন। মামলায় সুবর্ণার সাবেক শ্বশুর আবুল হোসেনকে প্রধান আসামি করা হয়। এদিকে মামলার পরই পুলিশ আবুল হোসেনকে (৬০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।