থাইল্যান্ডে গুহায় আটকা কিশোর ফুটবল দলটিকে বের করে আনতে ৯০ জন বিশেষজ্ঞ ডুবুরির একটি দল কাজ করছে, যাদের ৫০ জন বিদেশি এবং ৪০ জন থাই।
‘থাম লুয়াং’ গুহার অন্ধকার ও জলমগ্ন পথ ধরে তারাই কিশোর দলটিকে বের করে আনছে।
কিশোর ফুটবল দল এবং তাদের কোচ গুহা মুখ থেকে প্রায় চার কিলোমিটার ভেতরে আটকা পড়ে আছে। আর ওই পথটি অত্যন্ত বিপদসংকুল ও ঝুঁকিপূর্ণ।
সেখানে কোথাও হেঁটে, কোথাও পানির মধ্যে হেঁটে, কোথাও খাড়া ঢাল বেয়ে উঠে এবং কোথাও ডুব দিয়ে পার হতে হচ্ছে।
যদিও পুরো পথের এমাথা থেকে ওমাথা একটি দড়ি বাঁধা হয়েছে। যেটা ধরে ডুবুরিরা কিশোরদের কাছে যাচ্ছে এবং তাদের নিয়ে ফিরে আসছে।

কিশোরদের উদ্ধার করার জন্য একজন ডুবুরিকে প্রায় ১১ ঘণ্টার অত্যন্ত ক্লান্তিকর পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে। তাদের প্রথমে স্রোতের বিপরীতে ছয় ঘণ্টা পথ পাড়ি দিয়ে কিশোরদের কাছে পৌঁছতে হচ্ছে এবং কিশোরদের নিয়ে স্রোতের অনুকূলে পাঁচ ঘণ্টা পথ পাড়ি দিয়ে গুহা মুখে পৌঁছাচ্ছে।
এরই মধ্যে এককিশোরের কাছে অক্সিজেন পৌঁছে দিয়ে ফেরার পথে একজন ডুবুরি মারা গেছেন।
কিশোররা যেখানে আটকা পড়ে আছে সেখান থেকে গুহা মুখে আসতে প্রথম এক কিলোমিটার পথ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। সেখানে অন্তত দুইটি স্থানে ঘোলা পানিতে পুরিপূর্ণ পথ এতটাই সংকীর্ণ যে ডুবুরিদের পিঠ থেকে অক্সিজেন ট্যাঙ্ক খুলে ওই এলাকা পার হতে হয়।

কিশোরদের পুরো মুখ ঢাকা মাস্ক দেওয়া হয়েছে। যাতে তারা পানির তলায় অনেকটা স্বাভাবিকভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারে। প্রত্যেক কিশোরের সঙ্গে দুইজন করে ডুবুরি থাকছে। তারাই কিশোরের অক্সিজেন ট্যাঙ্ক বহন করছেন। একজনের কোমরের সঙ্গে দড়ি দিয়ে সঙ্গে থাকা কিশোরকে বেঁধে রাখা হয়।
চার কিলোমিটারের পথের মাঝামাঝি ‘টি-জংশন’ নামের সেকশনটি পার হওয়া সবচেয়ে কঠিন বলে জানায় বিবিসি। গুহার ওই অংশটুকু ডুবুরিদের নিজেদের অক্সিজেন ট্যাঙ্ক পিঠ থেকে খুলে পার হতে হয়। ওই পথটুকু পার হওয়ার পর অন্য একদল ডুবুরির হাতে কিশোরকে তুলে দেওয়া হয়।
নতুন দলটি কিশোরকে নিয়ে সুড়ঙ্গ পথে হাঁটা শুরু করে, যেটিকে চেম্বার-থ্রি নাম দেওয়া হয়েছে। ওই পথটুকু ডুব দিতে না হলেও পানিতে পূর্ণ। কোথাও কোথাও পানিতে ডুবুরিদের গলা পর্যন্ত ডুবে যায়।
চেম্বার-থ্রির শেষ প্রান্তে ডুবুরিদের একটি ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছে। ওই ক্যাম্পে বিশ্রামের পর কিশোররা অপেক্ষাকৃত সহজ পথটুকু হেঁটে পার হয়ে গুহা থেকে বেরিয়ে আসে।

গুহা থেকে বের হওয়ার পরই তাদের স্ট্রেচারে করে হেলিকপ্টারে তোলা হয় এবং চিয়াং রাই প্রাচানুকরহ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এখন পর্যন্ত দুই দিনে আট কিশোরকে গুহা থেকে বের করে আনতে সক্ষম হয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা।
আরও চার কিশোর ও তাদের কোচ এখনও গুহার ভেতর আটকা পড়ে আছেন। তাদের মঙ্গলবার বের করে আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
উদ্ধার করা কিশোররা অনাহারে দুর্বল হয়ে পড়েছে। তাদের ঠান্ডাজনিত কিছু সমস্যা থাকলেও তারা সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছে থাই কর্মকর্তারা।
নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।