রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সব প্রস্তুতি শেষ করে এখন উজ্জীবিত নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও দলীয় মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। প্রতিদিনই দলীয় নেতাকর্মীসহ ভোটারের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাচ্ছেন তিনি। তবে এখনও দ্বিধায় আছেন নগর বিএনপি সভাপতি ও দলের মনোনীত মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। তাই দলীয় নেতাকর্মীরাও এখনও মাঠে নামেননি তার পক্ষে।
মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন- গাজীপুর সিটি নির্বাচন খুলনার মতো হলে বিএনপি তিন সিটির নির্বাচন থেকেই সরে আসবে। বুধবার রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে পদত্যাগ করে বুলবুল বিকেলে নগর ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। সেখানে তিনি তার দায়িত্ব পালনের সময়কার সফলতা ও ব্যর্থতা তুলে ধরেন। এ সময় গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচনে অংশ নেব কি নেব না- সে বিষয়ে কেন্দ্র থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’ তবে আগামীকাল তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেবেন বলে জানান।
এদিকে প্রায় ছয় মাস আগে থেকেই লিটনকে সবুজ সংকেত দিয়েছিলেন দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই তিনি পাড়া-মহল্লাসহ বাড়ি বাড়ি গিয়ে নৌকার পক্ষে ভোট চাইতে শুরু করেন। উঠান বৈঠক, মহল্লা কমিটি গঠনসহ প্রায় সব প্রস্তুতি শেষ করে আনেন। এখন ভোটকেন্দ্র কমিটি গঠনের কাজ চলছে। সোমবার দলীয় মনোনয়ন নিয়ে ঢাকা থেকে ফিরে নগরবাসী ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে মাঠে নেমে পড়েন তিনি। গতকাল লিটন মহল্লা কমিটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মিলনায়তনে বৈঠক করেন।
এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, গত সিটি নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের লোকজন আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েছিল। তাই নগরীর অনেক উন্নয়ন কাজ করার পরও মানুষ আমাকে ভোট দেয়নি। এবার আমরা সেই অপপ্রচার প্রতিরোধে কাজ করছি। মানুষের কাছাকাছি গিয়ে তাদের সমস্যার কথা জানতে চেষ্টা করছি।
তিনি আরও বলেন, বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যেই সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্পের কাজ চলছে। এ ছাড়া শহরের উন্নয়ন কাজ আমি খুব ভালোভাবে করতে পারব। মানুষের কাছে গেলে তারা প্রথমেই দাবি করছে কর্মসংস্থানের। আমার ইচ্ছা আছে রাজশাহীতে শিল্পকারখানা নির্মাণ করে মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার। রাজশাহীতে আমার স্বপ্নের আইটি পার্ক হচ্ছে। সেখানেও কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
লিটন শুধু একাই নন, তার স্ত্রী নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শাহীন আক্তার রেনী, কন্যা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি অর্না জামানসহ দলীয় নেতাকর্মীরা দিনরাত পরিশ্রম করছেন। আগামী নির্বাচনে তারা লিটনকে বিজয়ী করতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নগরীর উন্নয়ন, কর্মসংস্থান ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। ঈদের আগে ইশতেহার ঘোষণার আগেই নির্বাচনী পোস্টার, ব্যানার ও তোরণে বদলে দেওয়া হয়েছিল নগরীর চিত্র।
‘চলো আবারও বদলে দেই রাজশাহী’ স্লোগানে এবার লিটন সফল হবেন বলে আশাবাদী দলীয় নেতাকর্মীরা। সেই সঙ্গে খুলনা এবং গাজীপুরের জয় আশা বাড়িয়েছে তাদের। নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসলাম সরকার বলেন, আগে আমরা জয়ী হওয়ার বিষয়ে ৭৫ শতাংশ আশাবাদী ছিলাম। গাজীপুরের জয় এখন আমাদের শতভাগ আশাবাদী করেছে। তিনি বলেন, মানুষ উন্নয়ন চায়, তাই তারা রাজশাহীকে এগিয়ে নিতেই নৌকায় ভোট দেবেন।
রাজশাহী সিটি নির্বাচন নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু বলেন, গাজীপুরের নির্বাচন খুলনা স্টাইলে হয়েছে। বিএনপির হাইকমান্ড তারপরও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। এটা আমারও প্রস্তাব। তবে কেন্দ্রীয় বিএনপি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আমাদের জানাবে। নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত সময়ে বিএনপি প্রচারে নামবে বলেও জানান তিনি। আজ বৃহস্পতিবার বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার বিষয়টিও নিশ্চিত করেন তিনি।
নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।