রবিবার, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৫
Homeজাতীয়রুমার পর এবার থানচিতে দুই ব্যাংকে ডাকাতি

রুমার পর এবার থানচিতে দুই ব্যাংকে ডাকাতি

ডেস্ক নিউজ:বান্দরবানের থানচি বাজারে গুলি চালিয়ে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকের স্থানীয় শাখায় ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছেন থানচি থানার ওসি মো. জসিম উদ্দিন।

দুপুর দেড়টার দিকে তিনি বলেন, আমরা ঘটনা শুনেছি। ঘটনাস্থলে যাচ্ছি, পৌঁছে বিস্তারিত জানাতে পারব।

স্থানীয়রা জানায়, সকাল ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে থানচি বাজার ঘিরে ফেলে ডাকাতরা। তারা ব্যাংক ও এর আশপাশের এলাকায় অস্ত্রের মুখে সবার কাছ থেকে মোবাইল কেড়ে নেয়। এরপর তারা ব্যাংক দুটির ভেতরে ঢুকে পড়ে।

থানচি কৃষি ব্যাংক শাখার ম্যানেজার হ্লাসুইথোয়াই মারমা জানান, বুধবার দুপুর ১২টার দিকে হঠাৎ দুই জিপ গাড়িভর্তি লোকজন আসে। হঠাৎ করে কৃষি ব্যাংক এবং সোনালী ব্যাংকে ঢুকে পড়ে। আমাদের কৃষি ব্যাংকের ভেতর কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের আলাদা এক রুমে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখে। পরে তারা কাগজপত্র এলোমেলো করে চলে যায়।

ব্যাংকে টাকা তুলতে যাওয়া একাধিক ব্যক্তি জানান, ডাকাতরা পাঁচ মিনিটের মতো ব্যাংকের ভেতরে ছিল। এ সময়ের মধ্যেই তারা গুলি চালিয়ে ভীতি সৃষ্টি করে সব টাকা লুট করে নিয়ে চলে যায়।

সোনালী ব্যাংকের ডিজিএম ওসমান গণি বলেন, গতকাল রাতে রুমার সোনালী ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনা শুনে আজ সকালে আমরা ব্রাঞ্চে এসেছি। এরমধ্যে আজ দুপুরে আবার থানচি ব্রাঞ্চে ডাকাতদের হানা দেওয়ার ঘটনা শুনতে পাচ্ছি। আমরা খোঁজ রাখছি। আমাদের সঙ্গে প্রশাসনের লোকজনও ঘটনাস্থলে রয়েছেন।

থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মামুন বলেন, দুপুরে থানচি বাজারে এসে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকে প্রবেশ করে টাকা লুট করে নিয়ে গেছে বলে জেনেছি।

থানচির ঘটনা নিয়ে জানতে চাইলে বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আব্দুল করিম বলেন, আজ কিছুক্ষণ আগে থানচিতে ব্যাংকে হামলা হয়েছে বলে আমরা খবর পেয়েছি। আমাদের ধারণা, গতকালের গ্রুপটিই এটা করেছে। গতকালের ঘটনার তদন্তে কোনো অগ্রগতি এখনো হয়নি।

এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে রুমা উপজেলা প্রশাসন ভবনে হামলা চালায় সশস্ত্র ব্যক্তিরা। পরে সোনালী ব্যাংকের শাখায় হামলা চালানো হয়। সে সময় ব্যাংকে আসা নতুন টাকা লুটের পাশাপাশি ম্যানেজার মো. নেজাম উদ্দিনকেও অপহরণ করে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা।

এ বিষয়ে রুমা থানার ওসি মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, তাকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

রুমা উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত এসিল্যান্ড দিদারুল আলম বলেন, গত রাত সাড়ে ৮টার দিকে ৭০-৮০ জনের একদল দুর্বৃত্ত উপজেলা কমপ্লেক্সের বাউন্ডারির ভেতর মসজিদে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। তখন তারাবি নামাজের জন্য অনেক কর্মকর্তা সেখানে ছিলেন। শুরুতেই নামাজি সবাইকে বন্দি করে সন্ত্রাসীরা প্রচণ্ড মারধর করে। সঙ্গে থাকা টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। পরে তারা অস্ত্র হাতে ব্যাংক ম্যানেজারকে জিম্মি করে ব্যাংকে নিয়ে যায় এবং লকার খুলিয়ে ব্যাংক লুট করে।

রুমা উপজেলায় সোনালী ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে প্রায় ২ কোটি টাকা লুট করেছে অস্ত্রধারীরা
রুমা উপজেলায় সোনালী ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে প্রায় ২ কোটি টাকা লুট করেছে অস্ত্রধারীরা

সন্ত্রাসীরা ব্যাংকের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর (পুলিশ ও আানসার ভিডিপির) অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট করেছে। তারা পুলিশের দুটি এসএমজি ও ৬০ রাউন্ড গুলি, আটটি চীনা রাইফেল ও ৩২০ রাউন্ড গুলি ও আনসারের চারটি শর্টগান ও ৩৫ রাউন্ড গুলি লুট করে। দুর্বৃত্তরা পাহাড়ের নতুন সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি-চিনের সদস্য বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ ঘটনায় জেলার পুলিশ সুপার সৈকত সাহিন ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রুমা সার্কেল মো. জুনায়েদ রুমা উপজেলার সোনালী ব্যাংক পরিদর্শন করেছেন।

এদিকে বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, বান্দরবানের রুমা এবং থানচিতে ব্যাংক লুটের ঘটনায় যা করণীয় সবই করছে সরকার।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) নামে জঙ্গি গোষ্ঠীটি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। তবে এ বিষয়ে এখনও বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি। কুকি চিনের তৎপরতা ইদানীং বেড়েছে। বিজিবি-পুলিশ অপারেশন চালাচ্ছে।

নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

- Advertisement -
- Advertisement -