এম সাইফুল ইসলাম শাফলু :
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৫টি ধর্ষণের ঘটনায় পাঁচ শিক্ষার্থীর লেখাপড়া একেবারে বন্ধ রয়েছে। গত কয়েক মাসে উপজেলার সিলিমপুর, বগারবাইদ ,বড়চওনা, দেওবাড়ী, রতনপুর ও পৌরসভার ৮নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় চাঞ্চল্যকর এ ৫টি শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। সরেজমিন ওইসব এলাকায় খোঁজ নিয়ে ধর্ষিতাদের লেখাপড়া বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। ধর্ষণের শিকার ওইসব শিক্ষার্থীরা উপযুক্ত বিচার না পেয়ে ও সামাজিক হীনমনতায় তাঁরা লেখাপড়া বন্ধ করে দিয়েছে বলে ওই সব শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা জানান।
জানা যায়, উপজেলার সিলিমপুর বগারবাইদবাজার এলাকার জেএসসি পরীক্ষার্থীকে (কয়েকদিন আগে শেষ হওয়া) ধর্ষণ করেন ওই গ্রামের মৃত কুমুর হাজীর ছেলে নাছির উদ্দিন (৪০)। ওই শিক্ষার্থী চার মাসের গর্ভপাত হওয়ায় ধর্ষককে দেড় লক্ষ টাকা জরিমানা করে বিষয়টি মীমাংসা করেন স্থানীয় মাতাব্বরা । আইনের আশ্রয় নিতে চাইলে হত্যার হুমকি দেয় ধর্ষিতার পরিবারকে । ওই শিক্ষার্থী এ বছর জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়নি।
ওই শিক্ষার্থীর প্রধান শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম বলেন, তাঁর মা পরীক্ষার প্রবেশ পত্র নিলেও শেষ পর্যন্ত পরীক্ষায় অংশ নেয়নি শিক্ষার্থী।
এদিকে উপজেলা বড়চওনা এলাকায় নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে স্থানীয় আবুল হাশেম লিটন (৪২) নামের এক যুবক ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর ছাত্রীটি ছয় মাসের অন্ত:সত্বা হয়ে পড়ে। এ ঘটনায় সখীপুর থানায় মামলা করা হলে ধর্ষককে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠায় পুলিশ। জানা যায় ওই ছাত্রী অন্ত:সত্বা হওয়ার কারণে লজ্জায় স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে ।
অন্যদিকে দেওবাড়ী এলাকায় সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে শামীম আহমেদ শমেশ (৪০) নামের এক আতœীয় ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় থানায় মামলা করা হলেও আসমীকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এ ঘটনার পর থেকে ওই শিক্ষার্থী লেখাপড়া বন্ধ করে দিয়েছে। পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে বিয়ের প্রলোভনে এক কলেজ ছাত্রীকে শাহীন খান (২১) ধর্ষণ করেন। পরে তার বিরুদ্ধে থানায় ধর্ষনের মামলা করা হলেও অভিযুক্তকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুুলিশ। ঘটনার পর থেকে ওই কলেজ ছাত্রীও তাঁর লেখা পড়া বন্ধ করে দিয়েছে।
এর আগে উপজেলার রতনপুর এলাকায় বাদল মিয়া (৪২) নামের এক বখাটে সাত মাস আটকে রেখে কলেজ ছাত্রী ভাতিজীকে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় টাঙ্গাইল ডিবি পুলিশ ধর্ষকে আটক করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে। মেয়েটি সামনে এইচএসসি পরীক্ষার্থী থাকলেও পরীক্ষা দেয়া হবেনা বলে ওই ধর্ষিতার পরিবার জানায়।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ধর্ষকের শাস্তি কঠোর ও দ্রুত কার্যকর করে সামাজিক দৃষ্টি ভঙ্গি পরিবর্তন করা উচিত।
সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাকছুদুল আলম বলেন, ৫ শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং বাকীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।