ইসমাইল হোসেন:
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কৃষকদের মাঝে দিন-দিন ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে কীটনাশক ছাড়াই ক্ষতিকারক পোকা দমনের ‘পার্চিং’ ও ‘আলোক ফাঁদ’ পদ্ধতির ব্যবহার। জমিতে সার দেওয়ার পর থেকেই রোপা-আমন ক্ষেতে বাদামী ঘাসফড়িং বা কারেন্ট পোকা, পাতা মোড়ানো পোকা ও চুঙ্গি-মাজরাসহ নানা ধরনের ক্ষতিকারক পোকার আক্রমণ দেখা দেয়। আর এসব পোকার আক্রমণ থেকে ফসল বাঁচাতে কৃষকরা কীটনাশকসহ বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করেন। বর্তমানে কৃষকরা ক্ষেতে কীটনাশক ওষুধ পরিহার করে পোকা দমনে সহজ ও পরিবেশবান্ধব ‘পার্চিং’ এবং ‘আলোক ফাঁদ’ পদ্ধতি ব্যবহার করছেন।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে স্থানীয় কৃষি অফিসের উদ্যোগে প্রতিদিন সন্ধ্যায় আমন ফসলের ক্ষেতে পোকার উপস্থিতি যাচাইয়ের জন্য ‘আলোক ফাঁদ’ স্থাপন করা হচ্ছে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, আমন ধানের ক্ষেতের আইলে কোথাও পানি ভর্তি পাত্রে, কোথাও কাগজের ওপর আলো জালিয়ে ধানে আক্রমণাত্মক বিভিন্ন পোকা ধরছেন। কৃষকরা নিজেই জমিতে এই পোকাগুলোর পরিমাণ দেখে ধান ক্ষেতে কী ব্যবস্থা নিতে হবে তা খুব সহজেই নিরূপন করতে পারছেন। যার ফলে পোকার আক্রমনের আগেই প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারছেন উপজেলার কৃষকরা।
উপজেলার গজারিয়া গ্রাামের কৃষক রহিম, হামিদপুর গ্রামের হাফিজ উদ্দিন, আমিনুল হক এবং যাদবপুর গ্রামের কৃষক কাদের মিয়া জানান, তারা এই পদ্ধতি ব্যবহার করে অনেক উপকৃত হয়েছেন। সহজ লভ্য এই পদ্ধতি ব্যবহার করে খুব সহজেই ক্ষেতের পোকা নিধন করতে সম্ভব। এতে করে তাদের খরচ অনেকটাই কমে এসেছে। এটা পরিবেশ বান্ধব একটি পদ্ধতি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফায়জুল ইসলাম ভূইয়া জানান, এ মৌসুমে উপজেলায় ১৬ হাজার ৮শ’ ৬০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করা হচ্ছে। ‘পাচিং’ ও ‘আলোক ফাঁদ’ একটি সহজলভ্য পদ্ধতি। আমাদের পরার্মশে কৃষকরা এই পদ্ধতি ব্যবহার করে খুব সহজেই ধান ক্ষেতের পোকার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারছেন।