এম সাইফুল ইসলাম শাফলু :
অবশেষে বিনা দোষে সাতদিন কারাবাস থাকার পর জামিন পেলেন টাঙ্গাইলের সখীপুরের দিনমজুর রফিকুল। রফিকুলের আইনজীবী সেলিম আল দীন আজ রোববার টাঙ্গাইলের সখীপুরের আমলি আদালতে আবেদন করলে বিচারক রুকন কান্তি দাস রফিকুলকে জামিনে মুক্তি দেন। এর দুই বছর আগেও ওই রফিকুলকে একই মামলায় একই রকম ভুল করে পুলিশ গ্রেপ্তার করে চারদিন হাজত খাটায়।
জামিনের খবর পেয়ে রফিকুলের স্ত্রী নাজমা বেগম তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, পুলিশ বারবার ভুল করে আমার স্বামীকে জেলে পাঠিয়েছে। আমি দায়ী পুলিশের বিচার দাবি করছি।
টাঙ্গাইলের মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আজাদ এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান। সেক্ষেত্রে দায়ী পুলিশের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানান তিনি।
কোনো যাঁচাই-বাছাই না করে শুধু গ্রাম ও নামের মিল দেখে গত রোববার (১৪ মে) দুপুরে পুলিশ ওই দিনমজুরকে ধরে সখীপুর থানায় একরাত রেখে গত সোমবার সকালে তাঁকে টাঙ্গাইল আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। কাকতালীয়ভাবে এর ঠিক দুই বছর আগেও ২০১৫ সালের ১৪ মে রাতের বেলায় রফিকুলকে ওই মামলাতেও একই রকম ভুল করে পুলিশ কারাগারে পাঠায়। ওই সময় চাররাত কারাবাস করার পর মামলার বাদী আদালতে হাজির হয়ে এই আসামি সেই আসামি নয় বলে শনাক্ত করলে রফিকুল ছাড়া পায়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ক্যারম খেলা নিয়ে উপজেলার চতলবাইদ গ্রামের ভাতকুড়া পাড়া এলাকার প্রবাসী আবদুর রশিদের ছেলে রফিকুল ইসলাম (২৫) ও তাঁর দলবল নিয়ে ওই গ্রামের খাইরুলের ওপর হামলা করে। এ ঘটনায় পরেরদিন খায়রুলের মামা সায়েজ বাদী হয়ে রফিকুলসহ আরও দুইজনকে আসামি করে সখীপুর থানায় মামলা করেন। এক পর্যায়ে মূল আসামি রফিকুল সিঙ্গাপুর চলে যায়। মামলায় আদালতে হাজির না হওয়ায় রফিকুলের নামে গ্রেপ্তারি পরওয়ানা জারি হয়। ওই পরওয়ানা মূলে পুলিশ গত রোববার দুপুওে প্রকৃত আসামিকে গ্রেপ্তার না কওে শুধু নামের মিলের কারণে এক কিলোমিটার দূরের দিনমজুর রফিকুলকে গ্রেপ্তার করে। প্রকৃত আসামির বাবার নাম আবদুর রশিদ। আর ভুলকরে গ্রেপ্তার করা রফিকুলের বাবার নাম মৃত ঠান্ডু মিয়া। বাড়ি চতলবাইদের ভূইয়া পাড়ায়, বয়স ৪৫। প্রকৃত আসামি যিনি তাঁর নাম রফিকুল হলেও বাবার নাম আবদুর রশিদ, বাড়ি চতলবাইদের ভাতকুড়া চালায়, বয়স ২৫ বছর।
মামলার বাদী সায়েজ উদ্দিন বলেন, পুলিশ আমার এই মামলাতে দুই বছর আগেও একই রকম ভুল করে এই রফিকুলকেই জেল খাটায়। পরে আমি আদালতে গিয়ে এই রফিকুল আমার মামলার আসামি নয় বলে শনাক্ত করলে রফিকুল ছাড়া পায়। শুনেছি, প্রকৃত আসামি রফিকুল ও আসামির বাবা আবদুর রশিদ বর্তমানে সিঙ্গাপুর আছেন। চার মাস আগেও ওই রফিকুল দুই মাসের ছুটি নিয়ে বাড়ি এসেছিলেন। অথচ তখন পুলিশ তাঁকে ধরেননি। আমি চাই প্রকৃত আসামি রফিকুল শাস্তি পাক।