নিউজ টাঙ্গাইল ডেস্ক :
টাঙ্গাইলের সখীপুরে বিশেষ সুবিধায় মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির বিরুদ্ধে অ-মুক্তিযোদ্ধাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত করার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে সখীপুর পৌরসভা ও পাঁচটি ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডাররা জাতীয় কাউন্সিলে লিখিত অভিযোগ করেছেন। জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার খন্দকার জহুরুল হকও একই ধরনের অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন সখীপুর উপজেলা যাচাই-বাছাই কমিটি জেলা সংসদের সঙ্গে যোগাযোগ না করে ও জেলা প্রতিনিধিকে যাচাই বোর্ডে না রেখেই গোপনে তালিকা করে জামুকায় পাঠিয়েছে। আমরাও লিখিতভাবে জামুকায় এ বিষয়ে প্রতিবাদ করেছি।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যলয় ও লিখিত সূত্রে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ২০১৬ সালের শুরুর দিকে বাদ পড়া মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাভুক্তির জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে । এতে ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন করারসময় সীমা নির্ধারণ করা হয়। উপজেলার ৫৭৮ জন মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য আবেদন করেন। তবে ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যাচাই- বাছাই কমিটিতে সাক্ষাৎকার দিতে ৫১০ জন উপস্থিত হন। যাচাই- বাছাই শেষে ১০৪ জনের নাম মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে চূড়ান্ত করতে একটি খসড়া তালিকা গত ২৭ মে জমিুকায় পাঠানো হয়।
তবে তালিকা নিয়ে প্রশ্ন থাকায় সাত সদস্যের যাচাই- বাছাই কমিটির দুজন সই করেননি। তারা হলেন কমিটির মন্ত্রণালয় প্রতিনিধি লোকমান হোসেন ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের প্রতিনিধি মো শাহজাহান আলী খান। এ দুজন জানান কমিটির সদস্য হলেও ওই খসড়া তালিকায় তাদের কোন ভূমিকা ছিলনা। তাদের বাদ দিয়ে বাকি সদস্যরা ইচ্ছামতো তালিকা করেছেন। ফলে তালিকায় সই করেননি।
তালিকায় অমুক্তিযোদ্ধাদের ঢুকে পড়ার বিষয়ে জামুকায় অভিযোগ করেছেন সখীপুর পৌরসভা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এস এম এ মোত্তালিবের পাশাপাশি গজারিয়া, কালিয়া, বহেড়াতৈল,যাদবপুর ওকাকড়াজান ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডাররা।
অভিযোগে বলা হয়েছে, খসড়াতালিকায় স্থান পাওয়া অনেকে অনলাইনে আবেদনই করেননি। অনেকে আবার সাক্ষাৎকার বোর্ডে উপস্থিত হননি । মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় তাদের নাম ওঠানো হয়েছে। খসড়া তালিকায় তাদের সংখ্যাই বেশি। তবে এভাবে ঠিক কতজন ও কীভাবে তালিকাভুক্ত হয়েছেন তা ওই অভিযোগে সুনির্দিষ্ট করা হয়নি।
লিখিত অভিযোগে ১ নম্বরে সই করা সখীপুর পৌর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার এস এম এ মোত্তালিবও বিষয়টি পরিস্কার করে বলেনি। তিনি বলেন যাচাই- বাছাই বোর্ডের সদস্যরা নিয়ম ভেঙ্গে ও টাকা পয়সা খেয়ে অমুক্তিযোদ্ধাদের নাম তালিকায় তুলেছেন। ফলে আমরা ওই তালিকা বাতিল চেয়ে জামুকায় অভিযোগ করেছি।
অভিযোগের বিষয়ে সখীপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো ওসমান গণি ও ডেপুটি কমান্ডার শফিকুল ইসলাম কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে যাচাই- বাছাই কমিটির সভাপতি সখীপুর পৌরসভার মেয়র বলেন, নিয়ম নীতি মেনেই ওই ১০৪ জনের খসড়া তালিকা করা হয়েছে। যদি ঐ খসড়া তালিকায় কোন নাম নিয়ে সন্ধেয় থাকলে বা কেউ তালিকা থেকে বাদ পড়লে জামুকায় আপিল করার সুযোগ আছে।
আবার যাচাই -বাছাই কমিটির সদস্য সচিব ও তৎকালীন সখীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) এস এম রফিকুল ইসলাম বলেন, সখীপুর এলাকার কে বা করা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা তা আমার চেনার কথা নয়। আমি ইউএনও হিসেবে ওই কমিটিতে শুধু সাচিবিক দায়িত্ব পালন করেছি।