শুক্রবার, জানুয়ারি ১৭, ২০২৫
Homeজাতীয়সখীপুরে শামীম প্রি-ক্যাডেট স্কুলের বিরুদ্ধে সরকারী বিধি না মেনে শিক্ষার্থী ভর্তি করার...

সখীপুরে শামীম প্রি-ক্যাডেট স্কুলের বিরুদ্ধে সরকারী বিধি না মেনে শিক্ষার্থী ভর্তি করার অভিযোগ

 

নিউজ টাঙ্গাইল ডেস্ক:
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার নলুয়ায় ‘শামীম প্রি-ক্যাডেট স্কুলের’ পরিচালক মো. শামীম আল মামুনের বিরুদ্ধে বছরের শেষে অন্য ৩টি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন শ্রেণির ১৪ জন শিক্ষার্থীকে ফুঁসলিয়ে ছাড়পত্র (টিসি) ছাড়াই নিজ প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করার একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে পার্শ্ববর্তী ওই তিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান‘ ‘ইউরেকা শিক্ষা পরিবার’ সান একাডেমিক স্কুল’ এবং ‘মেধা বিকাশ স্কুল’ কর্তৃপক্ষ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, নলুয়া বাজার বণিক সমিতি ও সাংবাদিকদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার নলুয়া বাজার এলাকায় ‘সান একাডেমিক স্কুলের শিক্ষার্থী প্রথম শ্রেণির খাদিজা , রাইসা বিনতে তারেক, হিমি আক্তার, দ্বিতীয় শ্রেণির সোলায়মান হোসেন, তৃতীয় শ্রেণির জীবন ও ফারহানা, এবং চতুর্থ শ্রেণির সামি শায়িত খাঁনকে ফুঁসলিয়ে পার্শ্ববতী শামীম প্রি-ক্যাডেট স্কুলের পরিচালক মো. শামীম আল মামুন তার নিজ প্রতিষ্ঠানে ছাড়পত্র (টিসি) ছাড়াই ভর্তি করেন। একই ভাবে তিনি মেধা বিকাশ স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির সোলায়মানকে এবং ইউরেকা শিক্ষা পরিবারের প্রথম শ্রেণির রায়ান মাসুদ, তৃতীয় শ্রেণির আফরিন খাঁন প্রিয়া চতুর্থ শ্রেণির মিথিলা আক্তার, মাহবুবা জান্নাত সুপ্তি এবং মোহসিনা জান্নাত দিয়াকে সরকারি বিধি বিধান ভঙ্গ করে ছাড়পত্র ছাড়াই নিজ প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করেন। নিয়মানুযায়ী এক বিদ্যালয় থেকে অন্য বিদ্যালয়ে কোন শিক্ষার্থীকে নতুন করে ভর্তি করাতে ওই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্বাক্ষরিত ছাড়পত্র (টিসি) নিতে হয়। কিন্তু সরকারি বিধি বিধানের তোয়াক্কা না করে শামীম প্রি-ক্যাডেট স্কুলের পরিচালক মো. শামীম আল মামুন পার্শ্ববর্তী প্রতিষ্ঠান‘সান একাডেমিক স্কুল’ মেধা বিকাশ স্কুল এবং ইউরেকা শিক্ষা পরিবারের ১৪ জন শিক্ষার্থীকে তার বিদ্যালয়ে নানা প্রলোভন দেখিয়ে ছাড়পত্র ছাড়াই ইচ্ছে মতো ভর্তি করেন। এতে সাধারণ অভিভাবক ও সচেতন মহলের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার নলুয়া বাজারে ২০০২ সালে মেধা বিকাশ স্কুল, ২০০৮ সালে ইউরেকা শিক্ষা পরিবার স্কুল ২০১২ সালে সান একাডেমিক স্কুল সরকারি বিধি মোতাবেক প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে প্রতি বছর বৃত্তিসহ শতভাগ পাস করে এলাকায় সুনাম অর্জন করে আসছে। ২০১৭ ওই তিন বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান বিনষ্ট করতে ওই তিনটি প্রতিষ্ঠানের ১৪ জন কৃতী শিক্ষার্থীকে বছরের শেষে ভাল ফলাফলের মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে শামীম প্রি-ক্যাডেট স্কুলে ভর্তি করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী অভিভাবক বলেন, শামীম স্যার আমাদের আগামি পিএসসি পরিক্ষায় গ্রোল্ডেন এ+ পায়িয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিলে আমরা আমাদের সন্তানদের এখানে ভর্তি করি। তবে তাঁরা সরকারী নিয়ম কানুন কী আছে তা জানেন না বলে জানান।
এ বিষয়ে ইউরেকা শিক্ষা পরিবারের পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান খান বলেন, পাশাপাশি তিনটি প্রতিষ্ঠান থাকার পরেও বিধি বহি:ভূতভাবে বাজারের মধ্যে স্কুলের পরিবেশ না থাকা সত্ত্বেও ওই প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। এছাড়াও ওই প্রতিষ্ঠানের বিল্ডিংয়ে দু’তলায় কৃষি ব্যাংক, নীচতলায় ফাস্টফুডের দোকান রয়েছে।
সান একাডেমি পরিচালক হুমায়ন কবির বলেন, শিক্ষার্থীদের এক বিদ্যালয় থেকে অন্য বিদ্যালয়ে যাওয়ায় স্বাধীনতা রয়েছে। কিন্তু সেটি সরকারি নয়ম-কানুন মেনে যেতে হবে এবং ভর্তিও বিধি মত হতে হবে। মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে এবং সরকারি নিয়ম না মেনে শামীম প্রি-ক্যাডেট স্কুল ছাড়পত্র ছাড়াই শিক্ষার্থী ভর্তি করাচ্ছেন। তাছাড়া চলে যাওয়া ওইসব শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বকেয়াও পরিশোধ করেননি।
মেধাবিকাশ স্কুলের পরিচালক সনেট মিয়া বলেন, সরকারী বিধি না মেনে শামীম প্রি-ক্যাডেট স্কুলে আমার প্রতিষ্ঠানের
শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সু-বিচার চেয়ে উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
একই ভবনে থাকা বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক নলুয়া শাখার ম্যানেজার জাফরুল হাসান বলেন, প্রতিষ্ঠানটি তৃতীয় তলায় হওয়ায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একই সিঁড়ি ব্যবহার করায় ব্যাংকে আসা গ্রাহকদের বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এছাড়া রাতের বেলা কোচিং করায় ব্যাংকের নিরাপত্তায়ও বেশ ঝুকির মধ্যে।
এ ব্যাপারে শামীম প্রি-ক্যাডেট স্কুলের পরিচালক মো. শামীম আল মামুন সরকারী বিধি মোতাবেক তার প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়নি স্বীকার করে বলেন, কিছু দিনের মধ্যেই প্রতিষ্ঠানটি বাজার ছেড়ে অন্যত্র স্থানান্তর করবেন বলে জানান।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিনুল হক বলেন, ছাড়পত্র ছাড়া এক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি করার নিয়ম নেই। লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামকে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

- Advertisement -
- Advertisement -