মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় কারাবন্দি টাঙ্গাইল-৩(ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানার জামিন তিনদিনের জন্য স্থগিত করেছে আদালত। রোববার(১৬ এপ্রিল) আটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাসুদ হাসান চৌধুরী সাংসদ রানার জামিন স্থগিত চেয়ে চেম্বার আদালতে আবেদন করেন। শুনানি নিয়ে বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর অবকাশকালীন বেঞ্চ তিনদিনের স্থগিতাদেশ দেয়। আগামী ১৮ এপ্রিল একই বেঞ্চে আবেদনটির ওপর পূর্ণাঙ্গ শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাসুদ হাসান চৌধুরী। তিনি জানান, বাদীর আইনজীবী সৈয়দ মাহবুবুর রহমানকে নোটিসের মাধ্যমে এবং ফোন করে আদালতের আদেশ জানানো হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার(১৩ এপ্রিল) এমপি রানাকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেয় বিচারপতি মো. মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি এএনএম বশির উল্লাহর হাই কোর্ট বেঞ্চ। একই সঙ্গে কেন তাকে স্থায়ী জামিন দেওয়া হবে না মর্মে রুলও দিয়েছিল আদালত।
সবশেষ গত ৩০ মার্চ রানার জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল উপস্থাপন হয়নি মর্মে খারিজ করে দেয় বিচারপতি এ এক এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের বেঞ্চ। এরপর রানা গত ২ এপ্রিল নিম্ন আদালতে জামিন আবেদন করেছিলেন। কিন্তু সেটিও খারিজ হলে গত ৪ এপ্রিল হাই কোর্টে আবেদন করেন তিনি। রানার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার ও রুশো মোস্তফা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম মনিরুজ্জামান কবির। জামিনের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম মনিরুজ্জামান কবির জানিয়েছিলেন, আদালত যে রুল দিয়েছে সেটির নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত রানা জামিনে থাকবেন।
সাংসদ রানা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন জানিয়ে ওইদিন তার পক্ষে শুনানিতে অংশ নেওয়া অাইনজীবী রুশো মোস্তফা বলেছিলেন, হাই কোর্টের এই আদেশের ফলে তার মুক্তিতে আপাতত কোনো বাধা নেই। এর আগে আরও তিনবার জামিন নিতে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রানা। দুইবার তার জামিন আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়, আরেকবার জামিন আবেদন উপস্থাপন হয়নি মর্মে খারিজ হয়ে যায়। গত বছরের ১১ ডিসেম্বর বিচারপতি ফরিদ আহাম্মদ ও বিচারপতি একেএম সাহিদুল হকের বেঞ্চ রানার জামিন আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ (আউট অব লিস্ট) দেয়। তার আগে গত ২৮ নভেম্বর সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি আতাউর রহমান খানের বেঞ্চও রানার জামিন আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়েছিল। আর বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরীর বেঞ্চ গত বছরের ৯ অক্টোবর রানার জামিন আবেদন খারিজ করে দেয়।
প্রকাশ, টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতা ফারুক আহমদকে ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়। ওই মামলায় টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের এমপি রানাকে প্রধান আসামি করে এবং তার তিন ভাইসহ মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। দীর্ঘদিন পালিয়ে থেকে সাংসদ রানা গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইলের আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠান বিচারক। জেলা ও দায়রা জজ তার জামিন আবেদন নাকচ করে দিলে এই সাংসদ হাই কোর্টে আবেদন করেন।