ডা. সজল আশফাক, স্বাস্থ্য নিবন্ধকার, নিউইয়র্ক থেকেঃ যে কোনো অপারেশনের পর রোগী কি খাবেন, না খাবেন তা নিয়ে অনেকের একটা জিজ্ঞাসা থাকে। অনেকেই জেনে নিতে চান রোগী অপারেশনের পর কি কি খাবার খেলে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে পারবেন। অনেকেই মনে করেন অপারেশনের পর রোগীকে দুধ-ডিম খাওয়ানো যাবে না।
দুধ-ডিম খাওয়ালে অপারেশনের জায়গায় পুঁজ হবে। সম্ভবত দুধ-ডিমের মিশ্রণ দেখতে অনেকটা পুঁজের মতো বলেই হয়তো এ ধারণার সৃষ্টি হয়েছে। আর দুধ-ডিম খেলে যদি পুঁজ হতো তাহলে তা সব সময়ই হতো, শুধু অপারেশনের পর কেন হবে? শরীরের ক্ষতস্থানে কিংবা কোনো স্থানে পুঁজ হয় ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণের কারণে। আমাদের চারপাশে রয়েছে নানা ধরনের রোগজীবাণু।

এসব রোগজীবাণু সব সময়ই শরীরকে আক্রমণের চেষ্টা করে যাচ্ছে। শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এসব ব্যাকটেরিয়াকে শরীরে ব্যাপকভাবে বাসা বাঁধতে দেয় না। যখনই কোনো কারণে শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে ব্যর্থ হয় তখনই শরীরে বাসা বাঁধে এবং ইনফেকশন করে পুঁজ তৈরি করে। পুঁজ মানেই হচ্ছে শরীরের নষ্ট কোষ এবং জীবাণু। ক্ষতস্থান মানেই কাটা উন্মুক্ত স্থান।
এ ধরনের স্থানে জীবাণু সহজেই বাসা বাঁধতে পারে— যা সাধারণ সুস্থ সুরক্ষিত ত্বকের ওপর সহজে সম্ভব হয় না। অপারেশনের পর ক্ষতস্থানে জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে এ কথা সত্য। অনেক সময় অপারেশনকালে জীবাণুমুক্তকরণের বিষয়ে অসাবধানতার কারণে ইনফেকশন হতে পারে। কাজেই ইনফেকশন বা ক্ষতস্থানে পুঁজ হওয়ার কারণ হচ্ছে জীবাণু।
এ জীবাণু অপারেশনের পরও রোগীদের কাছে বিভিন্নভাবে আসতে পারে। সাধারণত অপরিচ্ছন্ন কাপড়চোপড়, রোগীর বিছানায় দর্শনার্থীর উপস্থিতি ইত্যাদিই ক্ষতস্থানে পুঁজ হওয়ার জন্য মূলত দায়ী। এ ক্ষেত্রে ডিম-দুধের ভূমিকাই নেই।