নিউজ টাঙ্গাইল ডেস্ক: টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়মিত চিকিৎসক না থাকায় চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করেও এ হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসকের উপস্থিতি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া ডেপুটেশন জটিলতা এ হাসপাতালে চিকিৎসক সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, উপজেলা সদরের এ হাসপাতালে রোগিদের সেবায় ১০ জন জুনিয়ার কনসাল্টেন্ট, ০৮ জন মেডিকেল অফিসার ও ২জন উপসহকারি কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসারের পদ রয়েছে। এখানে ০৭ জন জুনিয়র কনসাল্টেন্টের পদ পূর্ণ থাকলেও তাদের ৪জন ডেপুটেশনে। অপর ০৩ জনকেও প্রতিদন পাওয়া যায় না। ৮জন মেডিক্যল অফিসারের বিপরীতে ৫জন থাকলেও তাদের ২জন ডেপুটেশনে। অপর ৩জনকেও সব সময় পাওয়া যায় না।
এ হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসারের পদটি দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। জুনিয়ার কনসাল্টেন্ট ও মেডিক্যাল অফিসারদের প্রায় সকলেই বাসাইলের বাইরে অবস্থান করে সুবিধামত অফিসে যাতায়াত করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাই প্রয়োজনের সময় জরুরি বিভাগেও কোন এমবিবিএস ডাক্তার পাওয়া যায় না। তাই এ হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম এখন উপসহকারি কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসারের উপর নির্ভশীল হয়ে পড়ছে।
প্রায়ই ডাক্তার শুন্য হাসপাতালের জরুরী বিভাগ কমিউনিটি উপসহকারি মেডিকেল অফিসারকে একাই সামাল দিতে হয় বলে জানা গেছে। সেবা গ্রহীতাদের অভিযোগ ডাক্তারদের গাফিলতির কারনে সাধারণ মানুষ সুচিকিৎসা পাচ্ছেন না। এগুলো দেখার যেন কেউ নেই।
এ ব্যাপারে কাঞ্চনপুর ইউপি সদস্য হারুন অর রশিদ বলেন, ৬ জুলাই বিদুৎস্পৃষ্ট হওয়া আমার স্ত্রীকে জরুরী বিভাগে নিয়ে আসলে কোন ডাক্তার পাইনি। স্বাস্থ্যসহকারি চিকিৎসা না দিয়ে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করে। পরে সেখানে নেয়ার জন্য এ্যাম্বুলেন্সের চালককে ডাকলে সে জানায় এ্যাম্বুলেন্স গ্যারেজে মেরামতে দেয়া হয়েছে।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান গাউস বলেন, আমার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নিয়ে আসলে জরুরি বিভাগে কোন ডাক্তার পাওয়া যায়নি। জরুরি বিভাগে নিয়মিত ডাক্তার না থাকায়
সাধারণ রোগিদেরও টাঙ্গাইল গিয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। ফলে উপজেলাবাসির চিকিৎসা সেবায় দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
চিকিৎসক না থাকাসহ নানা অনিয়মের কারনে সেবা নিতে আসা লোকজনও ক্রমে ক্রমে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠছে। গত ৯ জুলাই সেবা নিতে এসে জরুরি বিভাগে চিকিৎসক না পেয়ে রোগির স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে দায়িত্বরত দু’জন সিনিয়র স্টাফ নার্সকে লাঞ্চিত করে বলে জানা যায়। এসময় বিক্ষুব্ধরা জরুরি বিভাগেও ভাংচুর করে।
এদিকে চিকিৎসা সেবা না পাওয়ার অভিযোগ সংক্রান্ত বিষয়ে ১০ জুলাই সরেজমিনে বাসাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে ১জন জুনিয়র কনসাল্টেন্ট, দু’জন মেডিক্যাল অফিসারকে চিকিৎসা দিতে দেখা যায়। হাসপাতালের রোগি ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায় এখানকার বিছানাপত্র ও ম্যাট্টিকসগুলো অতিপুরাতন হয়ে গেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শেফালী খাতুন চিকিৎসকদের অনিয়ম অস্বীকার করে বলেন, আবাসন সমস্যা থাকায় ডাক্তাররা এ হাসপাতালে থাকতে চান না। এসব বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এ মাসেই আরও তিনজন ডাক্তার আসার সম্ভাবনা রয়েছে।