নিজস্ব প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজের অধ্যক্ষসহ ১৬জন শিক্ষককে মুঠোফোনের একাধিক নম্বর থেকে টাকা চেয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে সর্বহারা পরিচয় দিয়ে একটি চক্র হুমকি দিয়েই চলছে। রোববার এ বিষয়ে অধ্যক্ষ রেনুবর রহমানসহ ওই ১৬ শিক্ষক সখীপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
সখীপুর আবাসিক মহিলা অনার্স কলেজের অধ্যক্ষ মো. রেনুবর রহমান বলেন, গত ১৯ জুলাই দুপুরে তাঁর মুঠোফোনে একটি কল আসে। ছুটির দিন থাকায় তিনি ওই সময় তাঁর গ্রামের বাড়ি উপজেলার বহেড়াতৈল ইউনিয়নের বেতুয়ায় ছিলেন। ফোনে হুমকিদাতা নিজেকে সর্বহারা দলের নেতা বলে পরিচয় দেয়।
সর্বহারা দলে হাজার হাজার কর্মীকে লালন পালন করতে তাঁর অনেক টাকা লাগে বলেই সে জানায়। হুমকি দাতা মুঠোফোনের খুদে বার্তায় বিকাশ নম্বর দিয়ে বলেন, এই নম্বরে টাকা না পাঠালে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তাঁর সন্তানসহ পরিবারের লোকজনকে তুলে নিয়ে গুম করা হবে।
অধ্যক্ষ আরও বলেন, আমি প্রথমে ভয়ে ওই গ্রামের এক দোকানে গিয়ে পাঁচ হাজার টাকা বিকাশে পাঠিয়ে দেই। পাঁচ হাজার পেয়ে হুমকিদাতা আরও উত্তেজিত হয়ে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। পরে ভয়ে আমি ওই নম্বরে আরও ১০ হাজার টাকা দেই।
গত ২০ জুলাই কলেজের গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম ও হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ওয়াজেদ আলীকে একই কায়দায় হুমকি দিলে গত শনিবার (২৭ জুলাই) অধ্যক্ষ রেনুবর রহমান সখীপুর থানার ওসিকে আবারও বিস্তারিত জানান। থানায় জানানোর পর থেকে গতকাল রোববার পর্যন্ত আরও ১৫ শিক্ষককে একই কায়দায় হুমকি দিয়েই চলছে। যাঁদের মুঠোফোনে হুমকি দিয়েছেন তাঁরা হচ্ছেন, পরিসংখ্যান বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক অরুন কুমার সাহা, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক ফজলুল হক, কৃষি শিক্ষা বিষয়ের ইয়াছিন আলী, অর্থনীীত বিভাগের শাহ আলম, সমাজবিজ্ঞানের শহীদুল্লাহ কায়সার একই বিভাগের বাবুল আকতার, মনোবিজ্ঞান বিভাগের মাহবুবুর রহমান, সমাজকর্মের নজরুল ইসলাম, ইসলামী শিক্ষার রফিকুল ইসলাম, ইতিহাসের রফিক-ই-রাসেল, হিসাববিজ্ঞানের আহাম্মদ আলী, আবু কায়সার ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের আসাদুজ্জামান । এছাড়াও হুমকির বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় আরও কয়েকজনের মুঠোফোনে ফোন দিলেও তাঁরা ফোন ধরেননি।
অরুন কুমার সাহা বলেন, ‘আমার ফোনে একাধিকবার ফোন দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও টাকা চেয়েছেন।’
শাহ আলম নামের শিক্ষক বলেন, আমাকে গত শুক্রবার দিন ফোন দিয়েছিল। আমি ভয়ে গতরাতে ঘুমাইনি। স্ত্রী-সন্তানসহ তুলে নিয়ে যাবার কথা বলায় আরও ভয় লাগছে। থানায় বলতে নিষেধ করায় জিডি করতেও ভয় পাচ্ছি।
সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমির হোসেন বলেন, হুমকির বিষয়ে ডায়েরি হয়েছে। পুলিশ এ বিষয়ে ওই নম্বরধারী ব্যক্তিকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছে। এটি একটি প্রতারক চক্র। ওই চক্রের ফাঁদে পড়ে কউ যেন প্রতারণার শিকার না হয় এ জন্য কলেজের সব শিক্ষকের সঙ্গে ইতিমধ্যে বৈঠক করা হয়েছে।
নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।