নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘জীববৈচিত্র সংরক্ষণ, দেশ ও জাতীর উন্নয়ন’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে এশিয়া মহাদেশের অন্যতম বৃহতম ‘যমুনা সেতু আঞ্চলিক জাদুঘর’র ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে যমুনা সেতু পূর্ব রিসোর্টের জাদুঘরের সামনে থেকে একটি আনন্দ র্যালি বের করা হয়। এ সময় যমুনা সেতু আঞ্চলিক জাদুঘরের কিউরেটর জুয়েল রানাসহ জাদুঘর কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, যমুনা সেতু নির্মাণকালীন সময়ে (১৯৯৫-৯৭ সালে) সেতু কর্তৃপক্ষের পরিবেশ ইউনিটের অধীনে পরিচালিত ‘বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও সমীক্ষা’ কর্মসূচীর আওতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কাজী জাকের হোসেন এর নেতৃত্বে ‘বাংলাদেশ বন্যপ্রাণীতত্ত্ব সমিতি’ (প্রাণিবিদ্যা বিভাগ ঢাবি) কর্তৃক জাদুঘরের কাজটি বাস্তবায়ন হয়। বর্তমানে জাদুঘরটির জন্য নতুন আধুনিক ৩তলা ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।
এ জাদুঘরে প্রায় ৫ হাজার নমুনা সংরক্ষিত আছে। তারমধ্যে- ১৩০ প্রজাতির পাখি, ৩২ প্রজাতির সরীসৃপ, ৩৩ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৯ প্রজাতির উভচর প্রাণী, ২৭৫ প্রজাতির মিঠা পানি-সামুদ্রিক মাছ, ১৫০ প্রজাতির শামুক-ঝিনুক, ৬৬ প্রজাতির পাখির বাসা, ৪৪ প্রজাতির পাখির ডিম, ৮০৯ প্রজাতির ও অন্যান্য কীটপতঙ্গ, ৯০০ উদ্ভিদ নমুনা (শস্য বীজ-ফুল-ফল-ঔষধি-লতা-গুল্ম), ৩৬৫ ঐতিহ্যবাহী সামাজিক-সাংস্কৃতিক নমুনা রয়েছে।
শুধু তাই নয়, যমুনা সেতু নির্মাণের তথ্য, নকশা, কৌশল ও দুর্লভ ৮০৪টি ছবি ছাড়াও রয়েছে ৯ প্রজাতির ইঁদুর-চিকা-কাঁঠবিড়ালী, ৬ প্রজাতির বাদুর-চামচিকা, ৫ প্রজাতির বক, ৩ প্রজাতির হাঁস, ৮ প্রজাতির চিল-বাজ-ঈগল, ২ প্রজাতির আবাবিল পাখি, ৭ প্রজাতির কচ্ছপ, ৮ প্রজাতির টিকটিকি, ৯ প্রজাতির ব্যাঙ, শতাধিক জাতের প্রজাতির-ফড়িং, ৫ শতাধিক অন্যান্য পোকামাকড় সংরক্ষিত আছে।
এছাড়া এখানে আরও অনেক দুর্লভ প্রাণী সংরক্ষিত আছে। এগুলোর মধ্যে হচ্ছে- দৈত্য শুকুন, বেঙ্গল শুকুন, নাগ ঈগল, মেছো ঈগল, মরুবাজ, টিকাশাহীন, বেগুনী বক, লাল বক, সবুজ ঘুঘু, হরিতাল, বুনো মাছরাঙা, খেনি/গুরগুরি, পবিত্র কুরআনে বর্ণিত আবাবিল, সোলায়মান (আ:) এর সময়ের হুদহুদ পাখি, গেছো সাপ, ডোরা আঞ্জন, মর্মর ব্যাঙ, নীল গাই, চিতা বিড়াল ইত্যাদি। সেইসাথে দেশের জীবজ নমুনা সংরক্ষিত হচ্ছে এ জাদুঘরে।