এম সাইফুল ইসলাম শাফলু :সরকারি কোষাগার থেকে বেতন-ভাতার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন সারা দেশের পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সর্বশেষ গত রবিবার থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দাবি আদায়ের জন্য পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবস্থান নিয়েছেন। ফলে টানা ছয় দিন ধরে সেবা বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সখীপুর পৌরসভাসহ দেশব্যাপি সকল পৌরসভার বাসিন্দারা।
পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে শতভাগ বেতন-ভাতা ও পেনশনের দাবিতে দেশের পৌরসভার সকল সেবা বন্ধ রেখে আন্দোলনে নেমেছেন। এখনও আন্দোলন চলছে। তাদের এই আন্দোলনে পৌরসভার বাসিন্দাগণ একত্বতা প্রকাশ করলেও সেবা বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সকল পৌরসভার বাসিন্দারা। দেশের ৩২৮টি পৌরসভায় গত ৬ দিন ধরে দাপ্তরিক ও সকল ধরনের সেবা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। টানা ছয়দিন ধরে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার না করায় পৌর এলাকার অলিগলিতে ময়লার স্তুপ জমে তা থেকে দুগন্ধ বের হচ্ছে। সড়কবাতি জ্বলছেনা সময়মত। কর সংগ্রহ, নাগরিক সনদ প্রদান, ট্রেড লাইসেন্স, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনসহ দৈনন্দিন কার্যক্রম বন্ধ থাকায় সেবাগ্রহীতারা সেবা নিতে এসে ব্যর্থ মনে ফিরে যাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে আন্দোলনরত সখীপুর পৌরসভার সভাপতি হুমায়ন কবির বলেন“ দাবি আদায়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আমরণ বসে আছি, দাবি আদায় করেই ফিরবো”। তিনি মুঠোফোনে আরো বলেন, “রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বেতন-ভাতা পাওয়া আমাদের অধিকার, আমাদের আন্দোলন চলমান রয়েছে, দাবি আদায় না করা পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরবোনা। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের ন্যায়সঙ্গত দাবি অতি দ্রুতই মেনে নিবেন”।
সখীপুর পৌরসভার ৭নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা মো. মুজিবুর রহমান, ৯নম্বর ওয়ার্ডের শওকত আলী, ৫নম্বর ওয়ার্ডের ইসহাক আলী একই সুরে বলেন, “পৌরসভার সকল ধরনের সেবা বন্ধ থাকায় আমরা বেশ ভোগান্তিতে পড়েছি, বিশেষ করে এলাকার অলিগলিতে জমেছে ময়লার স্তুপ, যা থেকে পাঁচা দূর্গন্ধ বেড় হয়ে পরিবেশ নষ্ট করছে। আমরা চাই সরকার অতি দ্রুতই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ন্যায্য দাবি মেনে নিয়ে আমাদের ভোগান্তির অবসান করুক।
প্রসঙ্গত, সারা দেশের পৌরসভায় স্থায়ী ও মাস্টাররোল মিলিয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারী আছেন ৩৫ হাজারের বেশি। সরকার ২০১৮-১৯ অর্থবছরে অনুন্নয়ন বাজেটের আওতায় দেশের পৌরসভাগুলোর বেতন-ভাতা খাতে ১৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকা সহায়তা দিয়েছিল, যা চাহিদার এক শতাংশের কম। পৌরসভার নিজেদের আয় নেই, সরকারও পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেয় না। আর এ জন্য কর্মীরা ও বিশেষ করে যারা মাস্টার রোলে কাজ করেন ঠিক মতো বেতন ভাতা পান না।