নিউজ টাঙ্গাইল ডেস্ক: টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা পৌরসভার ১২১নং বাঁশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিনটি শ্রেণিকক্ষ রোববার(৮ অক্টোবর) ভোরে দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে ভস্মিভূত হয়েছে। ফলে রোববার থেকে ওই বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে। বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষে আগুন দেয়ার ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। খবর পেয়ে ভয়ে বিদ্যালয়ে আসেনি বেশিরভাগ শিক্ষার্থী। এদিকে শ্রেণি কক্ষে আগুন দেয়ার ঘটনা এলাকায় ‘চাউর’ হয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, বিদ্যালয়ের জায়গা নিয়ে প্রতিবেশি মাহা হাজীর ছেলে জুলহাস, কাশেম ও হাশেমদের সাথে বিরোধ চলছে। তাদের দায়ের করা মামলায় স্কুল কর্তৃপক্ষ সহ এলাকার ১৪ জন বিশিষ্ট নাগরিক আদালতে নিয়মিত হাজিরা দিচ্ছেন এবং মামলাটি আইনগতভাবে মোকাবেলা করছেন। উল্লেখিত ব্যক্তিরা বিদ্যালয়টি ভেঙে দিয়ে জায়গা দখলে নেয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে নানা অপতৎপরতা চালাচ্ছে।
বাঁশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক লিপি আক্তার জানান, স্কুলের প্রতিবেশি মাহা হাজীর ছেলেরা নিজেদের জায়গা দাবি করে ইতোপূর্বে স্কুলের লাগানো গাছ-গাছরা রাতের আঁধারে কেটে নিয়েছে। স্কুল কক্ষের তালা একাধিকবার ভেঙে রেখেছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. জায়েদা খাতুন জানান, শনিবার যথারীতি ক্লাস শেষে তারা চলে যান। গভীর রাতে মোবাইলে খবর পান এবং সকালে এসে নিন্দনীয় ঘটনাটি দেখে বিস্মিত হন। আগুনে টিনসেড ক্লাস ঘরের তিনটি কক্ষের চেয়ার, টেবিল, ব্ল্যাকবোর্ড ভস্মিভূত হয়েছে। টিনগুলো পুড়ে ব্যবহার অনুপযোগী হয়েছে। এ ঘটনার সাথে যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে পরামর্শ করে রোববার বিকালে কালিহাতী থানায় সাধারণ ডায়েরি(জিডি) করা হবে বলে জানান তিনি।
বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. হাছেন আলী জানান, বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বাঁশী গ্রামের কতিপয় ব্যক্তি বিদ্যালয়ের জায়গা নিজেদের দাবি করে বিভিন্ন সময় বিদ্যালয়ের সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি করে আসছে। বিদ্যালয়ের সভাপতি আব্দুল জলিল বলেন, গ্রামের মাহা হাজীর ছেলেদের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ বিদ্যালয়ের জায়গা জবর দখল করে রাখতে চেয়েছিল। কিন্তু ওই জায়গা নিজেদের দখলে নিতে না পেরে তারা বিদ্যালয়ের ক্ষতি করার জন্য উঠে-পড়ে লেগেছে। তিনি বলেন, আমাদের ধারণা তাদের পক্ষেই এ ধরনের ঘৃণীত কাজ করা সম্ভব।
এ ব্যাপারে কালিহাতী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শামসুল হক জানান, বিদ্যালয়ের আগুন দেওয়ার ঘটনাটি তিনি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি(জিডি) করার জন্য বলেছেন। এ ঘটনার সাথে যারাই জড়িত থাকুক তাদের কঠিন শাস্তি দাবি করেন তিনি।