নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনিরের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালত। রবিবার (২১ মে) শেখ আব্দুল আহাদের আদালতে জামিন আবেদনের শুনানি শেষে দুপুর পৌনে ১টায় এই আদেশ দেন।
টাঙ্গাইলের সরকারি কৌশলী (পিপি) এস আকবর খান জানান, কিশোরী ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি বড় মনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে ছিলেন। পরে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করে দুই সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের আদেশ দেন।
পিপি এস আকবর খান আরও জানান, হাইকোর্টের আদেশ অনুসারে গেল সপ্তাহে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আজ রবিবার মিস কেসের মাধ্যমে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বড় মনির জামিন আবেদনের করেন তার আইনজীবীরা। আদালত শুনানি শেষে জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন।
ধর্ষণ মামলায় বড় মনিরের জামিন স্থগিত, আত্মসমর্পণের নির্দেশ ধর্ষণ মামলায় বড় মনিরের জামিন স্থগিত, আত্মসমর্পণের নির্দেশ আসামিপক্ষের জামিন শুনানি করেন- সিনিয়র আইনজীবী এ কে এম শামীমুল আক্তার, বারের সভাপতি শফিকুল ইসলাম রিপন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মামুনুর রশীদ মামুন, ব্যারিস্টার গোলাম নবী, বারের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মনসুর আলী খান বিপন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম এমপিসহ অর্ধশত আইনজীবী।
রাষ্ট্রপক্ষে জামিনের বিরোধিতা করেন- সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) এস আকবার খান, সিনিয়র আইনজীবী মো. আব্দুল করিম মিঞা, বারের সাবেক সভাপতি ফায়কুজ্জামান নাজীবসহ ১৫ জন আইনজীবী।
এদিকে, ধর্ষণ মামলায় বড় মনিরের জামিন স্থগিত, আত্মসমর্পণের নির্দেশ ধর্ষণ মামলায় বড় মনিরের জামিন স্থগিত, আত্মসমর্পণের নির্দেশ গত সোমবার বড় মনিকে কারাগারে পাঠানোর পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তারপর থেকেই তিনি টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
গোলাম কিবরিয়া বড় মনি টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনির বড় ভাই। তিনি টাঙ্গাইল জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিবসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃত্বে রয়েছেন।
গত ৫ এপ্রিল রাতে টাঙ্গাইল শহরের এক কিশোরী বাদী হয়ে বড় মনিরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করে। টাঙ্গাইল মডেল থানায় দায়ের করা মামলায় বলা হয়, জমি নিয়ে বিরোধ সমাধানের জন্য বড় মনির শরণাপন্ন হয় ওই কিশোরী। বড় মনি সমস্যা সমাধান করে দেওয়ার আশ্বাস দেন।
গত ১৭ ডিসেম্বর ওই কিশোরীকে শহরের আদালতপাড়ায় বড় মনির বাড়ির পাশে একটি ফ্ল্যাটে যেতে বলেন। সেখানে গেলে কিশোরীকে একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। প্রায় তিন ঘণ্টা পর বড় মনি কক্ষে ঢুকে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন ও সেই ছবি তুলে রাখেন।
এদিকে ধর্ষণ শেষে কাউকে এ কথা জানাতে নিষেধ করেন। কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকিও দেন তিনি। এরপর ছবি প্রকাশের ভয় দেখিয়ে প্রায়ই মেয়েটিকে বড় মনি ধর্ষণ করতেন বলেও উল্লেখ করা হয়।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ধর্ষণের কারণে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বড় মনি তাকে গর্ভপাত করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। রাজি না হওয়ায় গত ২৯ মার্চ রাত ৮টার দিকে বড় মনি মেয়েটিকে আদালত পাড়ায় তার শ্বশুর বাড়িতে তুলে নিয়ে যান। সেখানে গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ দেন। এতেও রাজি না হওয়ায় ওই বাসার একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখা হয় মেয়েটিকে।
এরপর সেখানে আবারও ধর্ষণ করেন বড় মনি। ধর্ষণের পর বড় মনির স্ত্রী তাকে মারধর করলে কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে রাত ৩টার দিকে বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয় তাকে। এরপর থেকে ওই কিশোরীকে নানা হুমকি দেওয়া হতো। শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ থাকায় মামলা করতে দেরি হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করেছে বাদী।
নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।