প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকায় সুপার ফুড বলা হয় ডিমকে। এছাড়াও ডিমে রয়েছে ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টি–অক্সিডেন্টসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর পুষ্টি উপাদান। ডিমের সব অংশই খাওয়া যায়।
তবে খোসা বেশিরভাগ মানুষ বাদ দিয়েই খেয়ে থাকেন। ডিমের সাদা অংশটুকু উচ্চ মানের জৈব আমিষ, আর কুসুমে স্নেহ পদার্থ, লৌহ ও ভিটামিন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে থাকে।
সব বয়সের মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণে ডিম অত্যন্ত কার্যকর। শিশুর দৈহিক বৃদ্ধি, হাড় গড়নে ও মেধার বিকাশে ডিম খুবই কার্যকর। কেননা ডিমে রয়েছে ভিটামিন এ, যা দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে। আবার কুসুমে আছে ভিটামিন ডি, যা হাড়ের সুস্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
তবে কোন ডিমে উপকারিতা বেশি! সে প্রশ্ন থেকেই যায়। হাঁস, মুরগি সহ বিভিন্ন পাখির ডিম রয়েছে আমাদের খাদ্য তালিকায়। তবে জেনে নিন বিশেষজ্ঞদের মতে কোন ডিম খেলে উপকারিতা বেশি মিলবে।
দেশি মুরগির ডিমঃ
দেশি মুরগির ডিম আর ফার্মের মুরগির ডিম এর মাঝে তেমন পুষ্টি গত কোন পার্থক্য নেই। আমাদের দেশে সাধারণত দেশি মুরগী ছেড়ে দেয়া অবস্থায় পালন করা হয়। এজন্য এদের খাদ্য তালিকায় থাকে বিভিন্ন রকম পোকা – মাকড় ,গাছের কচি পাতা ,কেঁচো,ইত্যাদি। এজন্য দেশি মুরগীর ডিম পুষ্টি হয়।
ফার্মের মুরগির ডিমঃ
ফার্মের মুরগীকে মাঝে মাঝে নানা রকম ভিটামিন খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হয়। সে সব খাবারে থাকে নানা রকম খনিজ পদার্থ। যেমন- শামুকের গুঁড়া ,খৈল,লবণ ,শুটকি মাছের গুঁড়া, ভুষি ,গম, ভুট্টা আরো অনেক কিছুর সংমিশ্রণ। এসব খাবারের কারণে ফার্মের মুরগীর ডিমও পুষ্টিকর হয় । আবার দেশী মুরগীর তুলনায় ফার্মের মুরগীর ডিম আকারে বেশী বড় হয়। এ সব দিক বিবেচনা করলে ফার্মের মুরগীর ডিমেই বেশি পুষ্টি থাকে।
হাঁসের ডিমঃ
পুষ্টিমূল্যের দিকে বিচার করলে হাঁসের ডিম এবং মুরগির ডিমের পুষ্টিগুণ প্রায় একই। তবে হাঁসের ডিমে পুষ্টির পরিমাণ সামান্য বেশি। ১০০ গ্রাম হাঁসের ডিমে ১৮১ কিলোক্যালরি শক্তি থাকে। প্রোটিন থাকে ১৩.৫ গ্রাম, ফ্যাট ১৩.৭ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৭০ মিলিগ্রাম, লোহা ৩ মিলিগ্রাম, ভিটামিন এ ২৬৯ মাইক্রোগ্রাম।
দেখা যাচ্ছে যতই স্বাদে অতুলনীয় হোক না কেন আঁশটে গন্ধ হলেও হাঁসের ডিম কিন্তু স্বাস্থ্যের দিক থেকে বেশি উপকারী। তবে ফ্যাট যারা কমাতে চান তাদের জন্য আবার মুরগির ডিমটাই বেশি উপকারী।
কোয়েলের ডিমঃ
পৃথিবীতে যত প্রকার খাদ্য উপযোগী ডিম আছে তার মধ্যে কোয়েল পাখির ডিম গুণে মানে এবং পুষ্টিতে সর্বশ্রেষ্ঠ। চল্লিশ বছর পার হলেই ডাক্তাররা মুরগির ডিম খেতে নিষেধ করে থাকেন সেটা বয়লার মুরগির ডিম হোক বা দেশি মুরগির ডিম যেটাই হোক।কারণ নিয়মিত মুরগির ডিম খেলে কোলেস্ট্ররলের মাত্রা বেড়ে যায় ফলে হৃদরোগ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয় ।
অথচ কোয়েলের ডিম নিঃসংকোচে যে কোনো বয়সের মানুষ অর্থাত্ বাচ্চা থেকে বৃদ্ধরা খেতে পারেন ।এতে ক্ষতির কোনো কারণ নেই বরং নিয়মিত কোয়েলের ডিম খেলে দেহের প্রয়োজনীয় পুষ্টি চাহিদা পূরণ হয় এবং অনেক কঠিন রোগ থেকে আরোগ্য লাভও হতে পারে।
মাছের ডিমঃ
মাছের ডিম ক্যাভিয়ার বা রো হিসেবে পরিচিত। এটি ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ। যা ফিশ অয়েল সাপ্লিমেন্ট হিসেবে শরীরে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। মাছের ডিমের মধ্যে থাকা ইপিএ, ডিএইচএ এবং ডিপিএ (এক ধরনের ফ্যাটি অ্যাসিড) মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য উন্নতি করতে সহায়তা করে।
এছাড়াও রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসের উপসর্গ কমাতে সাহায্য করে। মাছের ডিমে থাকা ভিটামিন-এ চোখ ভালো রাখতে সাহায্য করে। দাঁত মজবুত করে। রক্ত পরিষ্কার করে এবং হিমোগ্লোবিন বাড়িয়ে তোলে।
নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।