নিউজ টাঙ্গাইল ডেস্ক: দীর্ঘদিন ধরে অনেকটা নিরুত্তাপ দেশের রাজনীতির মাঠ। শীর্ষ রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মকাণ্ড, বক্তৃতা-বিবৃতি ও সংবাদ সম্মেলনেই গণ্ডিবদ্ধ। জনগণ যেন ভুলতেই বসেছে রাজনীতির চিরচেনা রূপ। তবে অতিসম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের মধ্যে পরপর দুদিন সংঘটিত সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির শীর্ষ নেতারা এর পক্ষে-বিপক্ষে বক্তব্য দিচ্ছেন। একপক্ষ রাজনীতির মাঠ হাতছাড়া হতে দিতে নারাজ, আরেকপক্ষ দখলে নিতে মরিয়া। আর এর ফ্রন্টলাইনে রয়েছে ছাত্রলীগ-ছাত্রদল।
ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের অ্যাকশনে সন্তুষ্ট নেতারা——————–
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ক্যাম্পাসে গত দুদিনের সংঘর্ষের ঘটনায় ছাত্রলীগের অ্যাকশনে সন্তুষ্ট আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা। তারা মনে করেন, ছাত্রলীগ শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ রক্ষায় তাদের দায়িত্ব পালন করেছে শুধু। তারা প্রতিবাদ করেছে। ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গেও কথা বলে বোঝা গেছে, তারাও তাদের অবস্থানে ঠিক ছিলেন। তবে এখন তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।
আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করে বিএনপি লাশ ফেলতে চায়, যাতে সারা দেশসহ শিক্ষাঙ্গনে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হয়। বিএনপির সিনিয়র নেতাদের উসকানিতেই ছাত্রদল দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। আওয়ামী লীগ সবসময়ই ছাত্রলীগকে পরামর্শ দিয়ে আসছে, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে। কিন্তু যখন তারা গায়ে পড়ে ঝগড়া করবে তখন সরকার, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ সহযোগী যেকোনো সংগঠনের নেতাকর্মীরা বসে থাকবে না।
গত ২৪ মে ক্যাম্পাসে নেতাকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেয় ছাত্রদল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি প্রবেশমুখে লাঠিসোটা নিয়ে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগ। পরে গত ২৬ মে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি ঘিরে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। গুলিবর্ষণ, লাঠিসোটা নিয়ে ব্যাপক ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল বিনিময়ে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় গোটা এলাকা। ঢাবি ক্যাম্পাসে শুরু হয়ে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে হাইকোর্ট মোড় পর্যন্ত। সংঘর্ষ চলাকালে ছাত্রলীগ কর্মীরা ছাত্রদলের এক কর্মীকে মাটিতে ফেলে বেধড়ক পেটান। ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন কর্মী এ সময় হেলমেট পরা ছিলেন। হাইকোর্ট এলাকায় একজন আইনজীবীর গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। এতে অন্তত ৪০ জন আহত হন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান সময়ের আলোকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের কয়েকটি স্থানে ছাত্রলীগ-ছাত্রদল সংঘর্ষের ঘটনা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বিএনপি চাইছে দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হোক। তবে কেউ গায়ের ওপর এসে পড়লে তো ছাত্রলীগ বসে থাকতে পারে না। ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে যে ভাষায় কথা বলেছে, এটা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। সেখানে ছাত্রলীগ প্রতিবাদ করেছে, আর কিছু নয়।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের মধ্যে সংঘর্ষের জন্য দায়ী মূলত বিএনপির সিনিয়র নেতারা। তারা গত কয়েক মাস ধরে সরকার ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এমন কোনো কথা নেই যা উচ্চারণ করেনি। এভাবেই ছাত্রদলকে সংঘর্ষের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। ছাত্রদল যখন সাংঘর্ষিক মনোভাব নিয়ে ক্যাম্পাসে গেছে, তাদের ছাত্রলীগ প্রতিহত করেছে।
তিনি বলেন, আসলে আগামী ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণাঞ্চল-পশ্চিমাঞ্চলের বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন। এতে মানুষের মধ্যে এক ধরনের আবেগ কাজ করছে। এই পদ্মা সেতু আওয়ামী লীগের সফলতা আর বিএনপির ব্যর্থতা। তাদের এ ব্যর্থতার অন্তর্জ্বালা থেকে দেশকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, ছাত্রদলের কিছু বহিরাগত গুণ্ডা-পাণ্ডা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঢুকে পরিবেশ নষ্ট করতে চেয়েছিল। তাই ছাত্রলীগে ক্যাম্পাসের পরিবেশ সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক রাখতে ছাত্রলীগ প্রতিহত করেছে মাত্র। এমনকি ছাত্রদলের একজন মেয়েকে তারা নিরাপদে সরিয়ে দিয়েছে। কিন্তু বিএনপি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসকে উত্তপ্ত করার জন্য ছাত্রদলকে ব্যবহার করছে। কারণ বিএনপি গায়ে পড়ে ঝগড়া করতে চায়।
এ প্রসঙ্গে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য সময়ের আলোকে বলেন, ছাত্রদল তার পুরনো ইতিহাসের মতো ফের ক্যাম্পাস উত্তপ্ত করতে চাইছে। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস শান্তিপূর্ণ রাখতে রাস্তায় নেমে এসেছে। তারা সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করেছে। তাদের সঙ্গে আমরা ছাত্রলীগ একাত্মতা ঘোষণা করেছি মাত্র।
ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন সময়ের আলোকে বলেন, ছাত্রদলের মূল উদ্দেশ্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি লাশ ফেলে তাকে উপহার দেওয়া। যখন সরকার ও আওয়ামী লীগ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, তখন তারা দেশকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যেই সংঘর্ষে জড়িয়েছে। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো সন্ত্রাস দেখতে চাই না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত শিক্ষাঙ্গণে কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে দেওয়া হবে না। এ জন্য যা যা প্রয়োজন ছাত্রলীগ করবে। ভবিষ্যতে আরও কঠোরভাবে এটা মোকাবিলা করা হবে।
নব্বইয়ের মতো সর্বদলীয় ঐক্য করছে ছাত্রদল—————
নির্বাচনি পরিকল্পনা ও আন্দোলনের কৌশল হিসেবে ছাত্রদল নব্বইয়ের মতো সর্বদলীয় ছাত্রঐক্য করার চেষ্টা করছে। ক্যাম্পাসে প্রথমে নিজেরা আন্দোলনের সূচনা করেছে। এখন সমমনা সব ছাত্র সংগঠনকে মাঠে আনার জোর চেষ্টা চালাচ্ছে। গণতান্ত্রিক সব ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে ছাত্রদলের শীর্ষ নেতাদের আলোচনা চলছে। শিগগির যুগপৎ আন্দোলনে মাঠে নামার প্রত্যাশা করছেন তারা। সর্বদলীয় ছাত্রঐক্য গড়ার মূল কাজটি করছে ছাত্রদল। তাদের সমন্বয়ক হিসেবে আছেন ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমান ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ফজলুল হক মিলন।
ছাত্রদল ও অন্য সংগঠনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা ছাত্রলীগের সাম্প্রতিক আচরণে রীতিমতো ক্ষুব্ধ। ছাত্রদলসহ কেউ ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে পারছে না। ছাত্রলীগের রাজত্বে ন্যূনতম স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাতে পারছে না অন্যরা। এ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে সবার ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বিকল্প দেখছেন না তারা। সবার সঙ্গে সবার আলোচনা চলেছে। ধীরে ধীরে তারা একসঙ্গে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার পক্ষে।
সূত্র বলছে, ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বের হয়ে কার্যকর আন্দোলন গড়ে তুলতে চায় বিএনপি। আর এক্ষেত্রে নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের অভিজ্ঞতাকে সামনে রেখে এগোচ্ছে দলটির হাইকমান্ড।
সহিংসতা নয়, এবার কৌশলীও হচ্ছে বিএনপি। নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগাম নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনের রোডম্যাপ সাজানোর পাশাপাশি সুচিন্তিত ‘পরিকল্পনা’ নিয়ে এগোচ্ছে দলটি। দাবি আদায়ে ছাত্রদলকে কার্যকর করে তুলছে। বিএনপির হাইকমান্ডের নির্দেশনা পেয়ে ছাত্রদলের বর্তমান কমিটি এই ছাত্রঐক্য গড়ার কাজে মাঠে নেমেছে। ইতোমধ্যে তারা দুই ডজন ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে প্রাথমিক আলাপ সেরেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে অবস্থানের কথা বলে ছাত্রলীগকে প্রতিহত করবে। আদর্শিক জায়গায় ভিন্ন হলেও আন্দোলনে অভিন্ন থাকার লক্ষ্যে এ ঐক্য গড়ে উঠছে। ঐক্যের নাম ১৯৯০ সালের এরশাদবিরোধী সর্বদলীয় ছাত্রঐক্যের মতো না হলেও তার আদলেই হবে।
এ ছাত্রঐক্য প্রক্রিয়ার সমন্বয়ক বিএনপির সাংঠনিক সম্পাদক ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ফজলুল হক মিলন সময়ের আলোকে বলেন, দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন আদায়ের এক দফা দাবিতে ছাত্র সংগঠনগুলো এক হবে। ঐক্যের কাজ চলছে। অনেকেই এতে ইতিবাচক। তবে ’৯০-এর মতো ‘সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য’ নামে হবে না।
১৯৯০-এর সর্বদলীয় ছাত্রঐক্য গঠিত হয়েছিল ২৪টি ছাত্র সংগঠনের সমন্বয়ে। যেখানে নেতৃত্বে ছিলেন ডাকসুর সহসভাপতি আমানুল্লাহ আমান, সাধারণ সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন ও এজিএস নাজিমুদ্দিন আলম। ২৪ সংগঠনের মধ্যে ছিল জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী, গণতান্ত্রিক ছাত্র ইউনিয়ন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (জাসদ), ছাত্র ঐক্য সমিতি, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, গণতান্ত্রিক ছাত্রলীগ, জাতীয় ছাত্রদল, বিপ্লবী ছাত্র সংঘ, ছাত্র ঐক্য ফোরাম (মিশু), ছাত্র ঐক্য ফোরাম (জায়েদ), বিপ্লবী ছাত্রধারা, বিপ্লবী ছাত্র মঞ্চ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (জাগপা), জাতীয় ছাত্র ঐক্য, বাংলাদেশ ছাত্র কেন্দ্র, জাতীয় ছাত্র ফ্রন্ট।
এদের বেশিরভাগের সঙ্গে ঐক্যের কথাবার্তা বলছে ছাত্রদল। এ ছাড়া ছাত্র অধিকার পরিষদ, বিশ দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলের ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছে তারা।
এ বিষয়ে ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা সময়ের আলোকে বলেন, ছাত্রলীগের নারকীয় তাণ্ডব আর নিপীড়নের বিরুদ্ধে রাজপথে ঐক্য হবে। তার যাত্রা ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। বাম সংগঠনগুলো পাশে দাঁড়াচ্ছে। তারাও আওয়াজ তুলছে। আমরা যুগপৎ ঐক্য চাই। অভিন্ন কর্মসূচিতে একযোগে ক্যাম্পাসে সরব হব। এ লক্ষ্যে সবার সঙ্গে সবার যোগাযোগ চলছে।
দুদিন আগে ছাত্রলীগের হামলায় ছাত্রদলের আহত নেতাকর্মীদের হাসপাতালে যান ছাত্র অধিকার পরিষদের কয়েক নেতা। এরপর যান ছাত্রশিবিরের কয়েকজন নেতা। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের ওপর হামলা বিরোধী মত দমনের বহিঃপ্রকাশ অ্যাখ্যা দিয়ে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বামপন্থি আটটি ছাত্র সংগঠন যৌথ বিবৃতি দিয়েছে। পৃথক বিবৃতিতে এ হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোটও। এসব তৎপরতাকে ছাত্রঐক্যের সূত্রপাত বলছেন অনেকে।
গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি আরিফ মঈনুদ্দিন বলেন, ছাত্রলীগের দখলদারিত্ব রোধে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলো এক হওয়ার চেষ্টা করছে। গণতান্ত্রিক মিছিল-মিটিং করার অধিকার সবার আছে। ছাত্রলীগের মারমুখী আচরণ সবাইকে বিষিয়ে তুলছে। আমরা বিবৃতিতে এর প্রতিবাদ জানিয়েছি। ছাত্রদলসহ সবাই সবার সঙ্গে কথা বলছে। তবে আনুষ্ঠানিক ঐক্য হয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নজির আমিন চৌধুরী জয় জানান, সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে ঐক্যে কোনো আপত্তি নেই। তবে ছাত্রদলের ছাত্রত্ব নিয়ে আপত্তি আছে।
এ বিষয়ে ছাত্রদলের সাইফ মাহমুদ জুয়েল সময়ের আলোকে বলেন, সব ছাত্র সংগঠন নিয়ে ঐক্য করার চেষ্টা করছি। তবে প্রতিদিন আমরা ব্যস্ত। নেতাকর্মীরা আহত হচ্ছে। এতে আমরা কাজে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছি।
সংগঠনের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ছাত্রঐক্য এখন সময়ের দাবি। ঐক্যের কাজ চলমান প্রক্রিয়া। এটা পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে আরও সময় লাগবে। তিনি জানান, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের সূত্রপাত হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে। সে কারণে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যাব। আগামী দিনে আরও কর্মসূচি দেওয়া হবে। এখন থেকে ছাত্রদল সব প্রস্তুতি নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকবে। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। তাই যা করার তাই করব।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রদলের এক নেতা বলেন, আমরা চেষ্টা করছি। তবে সব বাম সংগঠন হয়তো ঐক্যে আসবে না। না এলেও তারা সম্মিলিত প্রতিবাদ জানাবে। বাম সংগঠনের এক ছাত্রনেতা বলেন, ছাত্রলীগ কাউকেই ক্যাম্পাসে ঢুকতে দিচ্ছে না। সাংগঠনিক কাজ করতে বাধা দিচ্ছে না। ছাত্রদলই শুধু না, সবার ওপর দমন-পীড়ন অতিমাত্রায় বেড়েছে। ছাত্রলীগ একচ্ছত্র আধিপত্য করছে। এটা মানা যায় না।