টাঙ্গাইলের করটিয়ায় শ্রমিক বেচা-কেনার হাট

0
120

নিজস্ব প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের সদর উপজেলার করটিয়াতে সকালে সূর্য উঠার সাথে সাথে বাস স্টান্ডে চোখে পড়ে শতশত মানুষের সমাগম। আর এ সমাগমী হল শ্রমিক বেচা-কেনার হাট। এ হাটে এক শ্রেনীর মানুষ আসে বিক্রি হতে আর এক শ্রেনীর মানুষ আসে শ্রম কিনতে। স্থানীয় ভাষায় এ হাটকে বলা হয় কামলার হাট। আবার অনেকে কৃষি শ্রমিকের হাটও বলে থাকে। করটিয়ায় এখন চলছে বারো ও ইরি ধান কাটার মৌসুম। এসময় প্রতিবছরের ন্যায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা কৃষি শ্রমিকরা করটিয়ার বাজারে এসে ভিড় জমায়।

সরেজমিনে গিয়ে করটিয়া শ্রমিক বেচা-কেনার হাট ঘুরে দেখাযায়, বগুড়া,রাজশাহী,দিনাজপুর,রংপুর,কুড়িগ্রাম,নীলফামারী,পাবনা,সিরাজগঞ্জ,জামালপুর,শেরপুর জেলা সহ বিভিন্ন জেলার গ্রাম থেকে  অভাবী লোকজন  এসেছেন কাজের সন্ধানে। এমৌসুমে করটিয়ায় কৃষি শ্রমিকের চাহিদা বেশী সকাল সাড়ে ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলে এই হাট। কেউ বিক্রি হয় এক দিনের কেউ বিক্রি হয় ৫ দিনের আবার কেউ বিক্রি হয় ৭ দিনের জন্য। দূর থেকে যারা এই হাটে আসেন তারা বেশী দিনের জন্য এবং স্থানীয় শ্রমিকরা প্রতিদিনের জন্য বিক্রি হন। ১ জন শ্রমিক ৭০০-৮০০ টাকায় প্রতিদিন শ্রম বিক্রি হচ্ছে।

এহাটে অনেকের সাথে কথা বলে জানাযায় প্রতি বৎসর তারা এ হাটে আসে ধান কাটার জন্য এসময় শ্রমিকের দাম বেশী থাকে ১ মাস কাজ করলে ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা নিয়ে বাড়িতে ফিরতে পারেন। কুড়িগ্রাম থেকে আসা মোফাজ্জল হোসেনের সাথে কথা বলে জানা যায় তার পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৪ জন। তার উপার্জনেই চলে সংসার। পাবনা থেকে আসা শ্রমিক হেলাল উদ্দিন জানায় কাজকাম করে আমরা ভালো টাকা পয়সা পাই কিন্তু রাতের আধারে কিছু মাদকসেবীরা কাজের কথা বলে ফাকা জায়গায় নিয়ে গিয়ে আমাদের কষ্টের টাকা জোরবলে ছিনিয়ে নেয়।

এবাজারে শ্রম কিনতে আসা করটিয়া ইউপি সদস্য মো.শফিকুল ইসলাম শফি ও মাদারজানী গ্রামের মো. খোরশেদ আলম খসরু  জানান তিনি এবছর দশ বিঘা জমি ধান আবাদ করেছেন। জমি চাষ ধানের চারা সার কিটনাশক পরিচর্যা এবং শ্রমিকের খরচ দিয়ে চাষাবাদ এখন আর লাভ জনক হয় না। প্রতিদিন একজন শ্রমিক কে মজুরী বাবদ দিতে হয় ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা পাশাপাশি ৩ বেলা খাবার দিতে খরচ হয় ২০০ টাকা।

এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল থানার অফিসার ইনচার্জ  (ওসি) মো.সায়েদুর রহমান বলেন, দূর-দুরান্ত থেকে আসা কৃষি শ্রমিকরা সারাদিন বিভিন্ন এলাকায় কাজ করে রাতে টাকা নিয়ে করটিয়া বিভিন্ন জায়গায় ঘুমায়। তাদের নিরাপত্তার জন্য চলতি এক মাস পুলিশি টহল জোরদার হয়েছে।

নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।