নিউজ টাঙ্গাইল ডেস্ক: টাঙ্গাইলে পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি দেয়ার কথা বলে টাকা লেনদেনের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত দুইজনের মধ্যে শাহানাতুল নামে একজন আদালতে আজ শনিবার (২৯ জুন) স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। অপর গ্রেফতারকৃত পুলিশের এসআই মোহাম্মদ আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। এ চক্রের সঙ্গে জড়িত শেরপুর জেলায় কর্মরত অপর এক এসআই মোস্তাফিজুর রহমানের ব্যাপারেও তদন্ত হচ্ছে।
জামালপুর আদালতে কর্মরত এসআই মোহাম্মদ আলী ও জামালপুরের কথিত সাংবাদিক মো. খায়রুল বাশারের স্ত্রী শাহানাতুল আরেফিন সুমিকে গত ২১ জুন টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেফতার করে। তারা এখন টাঙ্গাইল কারাগারে রয়েছেন। গ্রেফতারের পর শনিবার শাহানাতুল আরেফিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি শ্যামল কুমার দত্ত জানান, এই চক্রের সঙ্গে আরও কারা জড়িত সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতে এসআই মোহাম্মদ আলীকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন। এ জন্য মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইল বিচারিক হাকিম আদালতে তাকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়েছেন। আদালত আগামী ১ জুলাই রিমান্ড আবেদনের শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
প্রসঙ্গত, আগামী ১ জুলাই টাঙ্গাইল জেলায় পুলিশ কনস্টেবল পদে লোক নিয়োগ করা হবে। সেখানে শেরপুরের নামপাড়া গ্রামের মো. ওয়াজেদ আলীর ভাতিজা টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার বাড্ডা গ্রামের মো. কবির মিয়া (১৯) একজন চাকরিপ্রার্থী। তাকে পুলিশে চাকরি পাইয়ে দেয়ার জন্য এসআই মোহাম্মদ আলী ওয়াজেদ আলীকে জামালপুরের কথিত সাংবাদিক খায়রুল বাশারের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। তাদের মধ্যে ১০ লাখ টাকায় চাকরি পাইয়ে দেয়ার চুক্তি হয়।
গত ২১ জুন সাংবাদিক খায়রুল বাশার, তার স্ত্রী শাহানাতুল আরেফিন এবং এসআই মোহাম্মদ আলী একটি মাইক্রোবাসে জামালপুর থেকে টাঙ্গাইল আসেন। আসার পথে ওই মাইক্রোবাসের মধ্যেই ওয়াজেদ আলী শাহানাতুল আরেফিনের কাছে ১০ লাখ টাকা হস্তান্তর করেন। পরে টাঙ্গাইল পুলিশ অফিসের সামনে থেকে মোহাম্মদ আলী ও শাহানাতুল আরেফিনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় শাহানাতুলের স্বামী খায়রুল কৌশলে পালিয়ে যান। এ ব্যাপারে ওই চাকরিপ্রার্থীর চাচা ওয়াজেদ আলী বাদি হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় গ্রেফতারকৃত দুইজন ছাড়াও সাংবাদিক খায়রুল বাশারকে আসামি করা হয়েছে।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় জানিয়েছেন, পুলিশ কনস্টেবল পদে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার ভিত্তিতে চাকরি দেয়া হবে। এ চাকরি পেতে প্রার্থীকে ফরমের জন্য তিন টাকা এবং পরীক্ষার ফি বাবদ ১০০ টাকা দিতে হবে। কেউ যেন কোনো দালাল চক্রের খপ্পরে না পড়েন সেজন্য জেলায় মাইকিং করা হয়েছে। লিফলেটও বিতরণ করা হচ্ছে এবং স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে জনগণকে সতর্ক করা হয়েছে। এ ছাড়া এ পদে চাকরি দেয়ার প্রলোভনে দালাল চক্র যাতে অর্থ হাতিয়ে নিতে না পারে সে জন্য জেলার বিভিন্ন স্থানে সাদা পোশাকে আইনশৃংখলা বাহিনী তৎপর রয়েছে।
নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।