এম সাইফুল ইসলাম শাফলু :
টাঙ্গাইলে ছাদ থেকে পড়ে টাঙ্গাইল শহরের রেজিস্ট্রি পাড়া শাহীন স্কুল এন্ড কলেজের নবম শ্রেণির আবাসিক ছাত্র ফুয়াদ হাসান নিহতের ঘটনায় আদালতে ১৬ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহত ফুয়াদের পরিবার ২৩ অক্টোবর সোমবার টাঙ্গাইল সদর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতের আদেশে টাঙ্গাইল মডেল থানা মামলাটি এফআইআর দায়ের করা হয়। নিহত ফুয়াদের চাচা মো. ইসরাফিল হোসেন কামাল বাদী হয়ে সোমবার সকালে টাঙ্গাইল সদর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে এই মামলা দায়ের করেন। পরে আদালতের বিচারক আব্দুল্লাহ আল মাসুম হত্যা মামলাটি আমলে নিয়ে টাঙ্গাইল মডেল থানাকে এফআইআর করার আদেশ দেন।
মামলার এজাহারে শাহীন স্কুলের পরিচালক ও অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন আসলাম, আবাসিক শিক্ষক আব্দুর রশিদসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। অন্যান্য আসামি হলো, শিক্ষার্থী উচ্ছাস, শিক্ষার্থী সিয়াম, শিক্ষার্থী নুসরাত, শিক্ষক সামছুল আলম, শিক্ষক জামিল, শিক্ষার্থী মো. জনি, শিক্ষার্থী রেজভী আহম্মেদ, শিক্ষার্থী নাছির শেখ, শিক্ষার্থী মিরাজুল ইসলাম স্বপন, শিক্ষার্থী আলামিন, শিক্ষার্থী সাফায়েত রহমান, শিক্ষক জাহিদ, শিক্ষার্থী কামরুল ও শিক্ষার্থী ফয়ছাল।
মামলার প্রাথমিক তথ্য বিবরণী (এফআইআর) সূত্রে জানা যায়, ফুয়াদ তার পরিবারকে জানিয়েছিল যে, নুসরাত নামের এক ছাত্রী তাকে পছন্দ করে এবং সেটা নিয়ে উচ্ছাস নামের এক ছাত্র ও তার বন্ধুরা ফুয়াদকে হত্যার হুমকি দেয়। গত ১৬ অক্টোবর দুপুরের উচ্ছাস ও তার বন্ধুরা পরিকল্পিত ভাবে ফুয়াদকে ছাদে নিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে ছাদের উপর থেকে ২০/২৫ জন শিক্ষার্থীর সামনে ফেলে দেয়। পরে শিক্ষক আব্দুর রশিদ ফুয়াদের পরিবারকে ফোন করে জানায়, ফুয়াদ অসুস্থ, তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে পরিবারকে সেখানে যেতে বলা হয়। ফুয়াদের পরিবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে ফুয়াদকে মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। শিক্ষক আব্দুর রশিদসহ অন্যান্যরা শাহবাগ থানায় একটি জিডি এন্ট্রি করে তাদের ইচ্ছামত লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে লাশ রেখে পালিয়ে যায়। পরে ফুয়াদের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবার দাফন শেষ করে। পরবর্তীতে ফুয়াদের পরিবার স্কুলে গিয়ে জানতে পারে প্রেম ঘটিত কারণে ফুয়াদকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে ছাদ থেকে ফেলে দেয়। পরে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয় শিক্ষকরা। ঘটনায় তারা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করতে গেলে পুলিশ আমলে নেয়নি। পরে ফুয়াদের পরিবার ২৩ অক্টোবর সোমবার টাঙ্গাইল আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন।