টাঙ্গাইলে শতশত হেক্টর জমির বোরো ধান পানিতে

0
100

নিজস্ব প্রতিনিধি: অসময়ের টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের তলিয়ে গেছে টাঙ্গাইলের বাসাইলের কয়েকটি ইউনিয়নের শতশত হেক্টর জমির কাঁচা আধা পাকা বোরো ধান ক্ষেত। শেষ সময়ে এসে ভেঙে গেছে কৃষকের স্বপ্ন। ধান কেটে বাড়ি উঠাতে না পেরে চরম বিপাকে পড়েছেন এ উপজেলার ভুক্তভোগী কৃষকরা।

একদিকে মহামারী করোনা ভাইরাস সংক্রমণের থাবায় শ্রমিক সংকট অপরদিকে টানা বৃষ্টিতে বোরো ধান তলিয়ে যাওয়ায় শতশত সর্বশান্ত কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়েছে। বর্তমানে উপজেলার সর্বত্র পুরোদমে বোরোধান কাটার মৌসুম চলছে।

রবিবার (৩১ মে) উপজেলা সদরসহ কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। এসময় কৃষকরা বলেন, একদিকে মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে শ্রমিক সংকট অপরদিকে বৃষ্টি ও জোয়ারের ফলে শেষ মুহূর্তে এসে চোখের সামনে পাকা ধান তলিয়ে যাচ্ছে। এলাকার নারী-পুরুষ দিন-রাত সাধ্যমত চেষ্টা করেও কিছুই করতে পারছিনা একমুঠো ধানও গোলায় তুলতে পারবো না, সারা বছর আমাদের না খেয়েই হয়তো মরতে হবে।

বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় আম্পান আঘাত হানার পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই এ উপজেলায় প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। জেলার অপেক্ষাকৃত নিম্নাঞ্চলে চারিদিকে বংশাই ও ঝিনাই নদী দ্বারা বেষ্টিত এ উপজেলার অবস্থান হওয়ায় একটু বেশি বৃষ্টিপাত হলেই নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে যায়।

বাসাইল উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, আবাহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবং বীজ, সার, কীটনাশকের দাম কম থাকায় এবং সেচের কোনো সংকট না থাকায় চলতি বছর বাসাইলে বোরো ধান আবাদের বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলায় এবার একটি পৌরসভাসহ ছয়টি ইউনিয়নে মোট ১১ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে।

এরই মধ্যে উপজেলার মোট আবাদের ৫৫ ভাগ প্রায় ৬ হাজার ১১৬ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। তবে গত কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টি এবং নদীতে জোয়ারের পানি বেড়ে যাওয়ায় নিচু অঞ্চলের কাঁচা ও আধা পাকা বোরো ধান ক্ষেত তলিয়ে গেছে। উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাসুলিয়া, মিরিকপুর, রসড়া, হান্দুলী ও নাইকানীবাড়ীর নিম্নাঞ্চল, কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের পূর্ব পৌলি, সিংগারডাকসহ দক্ষীন-পূর্বাঞ্চলের বিস্তির্ন নিম্নাঞ্চল এলাকাসহ ফুলকি ইউনিয়নের দক্ষিণাঞ্চলের স্থল বল্লা, বালিয়া, নিরাইল ও ফুলবাড়ি এলাকার হাজার হাজার একর জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

বাসাইল উপজেলা কৃষি অফিসার নাজনিন আক্তার জানান, উপজেলায় এ বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিছু কিছু এলাকার নিচু জমির ধান বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব এলাকায় সহস্রাধীক কৃষক ধান কেটে ঘরে তোলার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া দুর্যোগ পূর্ণ আবহাওয়ার কারণে যে সকল জমির ধান ৮০ শতাংশ পেকেছে সে গুলো কেটে ফেলতে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কৃষকদের সতর্ক করা হচ্ছে। বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে বোরো জমি তলিয়ে যাওয়ার বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষেকে অবহিত করা হয়েছে।

নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।