নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি ওষুধ রোগী ও সেবাগ্রহীতাদের মাঝে বিতরণ না করে ফার্মেসিতে বিক্রি, স্বজনদের মাঝে ওষুধ প্রদান, রোগীদের স্বাস্থ্য সেবা না দেয়া এবং যথা সময়ে ক্লিনিকে না আসাসহ নানা ধরণের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে স্বাস্থ্য সহকারী মো. নূরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। নূরুল ইসলাম উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের রেহাইগাবসারা চরাঞ্চলের গাবসারা কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত এবং সে একই এলাকার বাসিন্দা। শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে ওই কমিউনিটি ক্লিনিকের পাশের এক ডোবায় অসংখ্য পরিত্যক্ত ওষুধ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী বাবু ও রহিম বলেন, সকালে ক্লিনিকের পাশের একটি ডোবায় বিভিন্ন ধরণের ওষুধ দেখতে পাই। কাছে গিয়ে দেখি সরকারি ওষুধ। পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এসে ওষুধগুলো উদ্ধার করে ইউপি সদস্যের কাছে জমা দেন। এদিকে, ওষুধগুলো ফেরত না দেয়ায় আমাদেরসহ মেম্বারকে হুমকি দিচ্ছেন স্বাস্থ্য সহকারী নূরুল ইসলামসহ তার লোকজন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্বাস্থ্য সহকারী নূরুল ইসলাম বেপরোয়া। তিনি থাকেন ভূঞাপুর শহরে। মাঝে মধ্যে ক্লিনিকে আসলেও রোগীদের ঠিকমত ওষুধ দেন না। ওষুধের জন্য গেলে সরকারিভাবে বরাদ্দ নেই বলে ফিরিয়ে দিয়ে নিজেদের লোকজনকে ওষুধ দেন। ক্লিনিকে পর্যাপ্ত ওষুধ থাকা সত্ত্বেও বিতরণ না করার ফলে ক্লিনিকেই বিভিন্ন ওষুধগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যায়। রাতের কোন এক সময়ে ক্লিনিকের পাশের ডোবায় ওষুধগুলো ফেলে দেন স্বাস্থ্য সহকারী নূরুল ইসলাম বা তার সহকারীরা। এতে করে নানা আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।
সরকারি ওষুধ ফেলে দেয়ার ঘটনার বিষয়ে গাবসারা কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সরকারী মো. নূরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি এ ক্লিনিকে একা না, আরো চারজন আছে। নিউজ করবেন না, পরে আপনার সাথে দেখা করব।
ইউপি সদস্য খোরশেদ মিয়া বলেন, স্থানীয়রা ওষুধগুলো উদ্ধার করে আমাকে সংবাদ দিলে আমি চেয়ারম্যানকে জানাই। চেয়ারম্যান এসে আমার হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। স্বাস্থ্যকর্মী নূরুল ইসলাম ওষুধগুলো নিতে এলে আমি দিতে অস্বীকার করায় রাগারাগি করে চলে যায়। পরে ইউপি চেয়ারম্যান আমাকে ওষুধগুলো স্বাস্থ্যকর্মীকে দেয়ার কথা বললে চেয়ারম্যান সাহেবকে লিখিত দিয়ে ওষুধগুলো বুঝে নেয়ার জন্য বলি।
এ বিষয়ে গাবসারা ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলম আকন্দ শাপলা বলেন, সকালে পরিত্যক্ত অবস্থায় ওষুধগুলো উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন। পরে সেগুলো হেফাজতে রেখেছি। ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা এবং ওষুধ না পাওয়ার ব্যাপারে স্বাস্থ্য সহকারী নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।
এ ব্যাপারে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. সোবহান হোসেন জানান, ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হয়েছে। সরকারি ওষুধ ফেলে দেয়ার ঘটনা প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।