নিজস্ব প্রতিনিধি:নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে টাঙ্গাইল মুক্ত দিবস পালন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে রোববার (১১ ডিসেম্বর) সকালে শহরের শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও বেলুন উড়িয়ে টাঙ্গাইল মুক্ত দিবসের কর্মসূচি শুরু করা হয়।
পরে শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যান থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে গিয়ে শেষ হয়।
এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান খান ফারুক।
শোভাযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন, টাঙ্গাইল-৮ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম ভিপি জোহের, টাঙ্গাইল-২ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনি, জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার, পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার, টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এসএম সিরাজুল হক আলমগীর, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহজাহান আনসারী, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদসহ বীর মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন এবং স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া বিকেলে এক আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক।
১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল হানাদারমুক্ত হয়েছিল। রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণ ও পলায়নের মধ্যে দিয়ে টাঙ্গাইল মুক্ত হয়। ওই দিন ধ্বংসস্তূপের মধ্যে দিয়ে স্বজনহারাদের বিয়োগ ব্যথা ভুলে হাজার হাজার মুক্তিকামী উৎফুল্ল জনতা রাস্তায় নেমে এসেছিল টাঙ্গাইল হানাদার মুক্তির আনন্দ।
১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা টাঙ্গাইলে অবস্থানরত হানাদার বাহিনীর ওপর আক্রমণের পরিকল্পনা করে। টাঙ্গাইল কালিহাতী উপজেলার পুংলি নামক স্থানে মিত্রবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয় পাকিস্তানি সেনাদের। টাঙ্গাইলকে হানাদারমুক্ত করার জন্য মুক্তিযোদ্ধারা হানাদার বাহিনীর ওপর প্রচণ্ড আক্রমণ করে এবং যমুনা নদীতে থাকা তাদের ৭টি জাহাজভর্তি অস্ত্র ও গোলাবারুদ ধ্বংস করে দেয়।
মুক্তিবাহিনীর এই আক্রমণ এবং গোলাবারুদ হারিয়ে মানসিকভাবে চরম বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে পাকিস্তানি সৈন্যরা। অবস্থার বেগতিক দেখে প্রাণভয়ে পাকিস্তানিরা সারারাত টাঙ্গাইল ছেড়ে ঢাকার দিকে পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধারা পরিকল্পনা অনুযায়ী চারদিক থেকে তাদের ঘিরে ফেলে। পরে তারা আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয় মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে।
প্রতিরোধযুদ্ধের শুরু থেকে ডিসেম্বর ১০ তারিখ ভোররাত পর্যন্ত টাঙ্গাইলকে মুক্ত করার জন্য যুদ্ধে লিপ্ত থাকে কাদেরিয়া বাহিনী। ১১ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল সার্কিট হাউসে অবস্থানরত পাকসেনাদের কাদের সিদ্দিকীর কাছে আত্মসমর্পণের মধ্যে দিয়ে টাঙ্গাইল সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হয়। ১১ ডিসেম্বর যখন টাঙ্গাইল হানাদার মুক্ত হয়েছিল সেদিনের আনন্দে আত্মহারা হয়েছিলেন মুক্তিকামী বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।
নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।