নিউজ টাঙ্গাইল ডেস্ক: অভাবের সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে ধারদেনা করে প্রায় এক বছর ছয় মাস আগে মালয়েশিয়া পাড়ি জমিয়েছিলেন টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সন্তান শহিদুল ইসলাম (৪০)। সেখানে গিয়ে একটি চাকরি জোটে তার। স্বপ্ন দেখেন সুন্দর ভবিষ্যতের। কিন্তু গত ১৫ই আগস্ট মালয়েশিয়ায় শহিদুল হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান। আজ বুধবার (২১ আগস্ট ) সকালে নিহত শহিদুলের মরদেহ ঘাটাইলের গ্রামের বাড়িতে এসে পৌছালে সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার দিগর ইউনিয়নের টেগুরী গ্রামের একাব্বর হোসেনের ছেলে মোঃ শহিদুল ইসলাম। তার দুই সন্তান সাবিনা (২৩) ও হাবিব (১৭)।
মালয়েশিয়ায় চাকুরীতে ঢুকেই স্ত্রী হাসিনাকে (৩৬) ফোন করে শহিদুল বলেছিলেন, খুব দ্রুতই পাওনাদারদের সকল টাকা পরিশোধের জন্য টাকা পাঠাবেন। ছেলে মেয়েদের ভাল স্কুলে পড়াশোনা করাবেন। কিন্তু সেসব বাস্তবায়নের আগেই ‘মৃ’ত্যু তাকে কেড়ে নিলো। এখন পাওনাদারদের টাকা কীভাবে পরিশোধিত হসে সেসব নিয়ে মহা দুশ্চিন্তায় শহিদুলের পরিবার।
বৃদ্ধ মা সন্তানের নিথর দেহ দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে যান। স্ত্রী হাসিনা মরদেহের পাশে বারবার ছুটে যাচ্ছেন প্রিয় মানুষের মুখখানা একবার দেখার জন্য। বারবার মূর্ছা যান তিনি। সন্তান দুটি কাঁদছেন অঝোর ধারায়। উপস্থিত সবাই তাদের কি শান্তনা দিবে। কেউ কোন ভাষা খুঁজে পাচ্ছিলেন না।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে নিহত শহিদুলেের মরদেহবাহী কফিন গ্রহন করেন নিহতের ছোট ভাই হাসেম আলী।
বুধবার সকালে শহিদুলের মরদেহ বাড়িতে আসছে এমন সংবাদ গ্রামে পৌছালে শত শত শোকার্ত মানুষ আগে থেকেই বাড়িতে গিয়ে ভীর করতে থাকে।
নিহতের ছোট ভাই হাসেম আলী জানান, আমরা দুই ভাইয়ের মধ্যে শহিদুল বড়। জীবিকার সন্ধানে গত দেয় বছর আগে দালালের মাধ্যমে মালশিয়ায় যান। একটি কোম্পানীতে চাকরি শুরু করেন। মালশিয়ার হৃদযন্ত্রেরক্রিয়া বন্ধ অবস্থায় মারা যান শহিদুল ইসলাম। বহু প্রতিক্ষার পরে মঙ্গলবার রাতে দেশে আসে ভাইয়ের মরদেহ। সেখান থেকে আজ সকালে এ্যাম্বুলেন্স করে গ্রামের বাড়িতে মরদেহ নিয়ে আসি।
বুধবার সকাল ১১ টায় টেগুরী ঈদগা মাঠে নিহত শহিদুলের যানাজা নামাজ শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয় বলে জানান তিনি।
নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।