বুধবার, জানুয়ারি ২২, ২০২৫
Homeটাঙ্গাইল জেলামির্জাপুরমির্জাপুরে দুই ছাত্রীর শ্লীলতাহানি, সেই কলেজ অধ্যক্ষ স্থায়ী বরখাস্ত

মির্জাপুরে দুই ছাত্রীর শ্লীলতাহানি, সেই কলেজ অধ্যক্ষ স্থায়ী বরখাস্ত

নিউজ টাঙ্গাইল ডেস্ক: টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির দুই স্কুলছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে মহিলা কলেজের সেই আলোচিত অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করেছে কলেজের পরিচালনা পরিষদ।

এর আগে তাকে দেয়া কারন দর্শানোর নোটিশের উপযুক্ত জবাব দিতে ব্যার্থ হওয়ায় তাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করারর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে শনিবার কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মো. জাকির হোসেন ও কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রণব কুমার সাহা জানিয়েছেন।

ঘটনার বিবরনে জানা যায়, গত ২০ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখ বৃহস্পতিবার দুপুরে কলেজের একটি কক্ষে আটকিয়ে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির দুই ছাত্রীকে অধ্যক্ষ শ্লীলতাহানি করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এ সময় ওই দুই ছাত্রীর চিৎকার শুনে এক ছাত্রীর মা ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় লোকজন নিয়ে তাদের উদ্ধার করেন। পুলিশ খবর পেয়ে কলেজ অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়ার কিছু সময় পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।

জানা গেছে, ওই দিনই নির্জন কলেজ মাঠে কয়েকজন শিশু কিশোরী কলেজ মাঠে ব্যাডমিন্টন খেলতে যায়। কলেজের অধ্যক্ষ মাঠে থাকা কয়েকজন মেয়ে শিশুকে কলেজ দেখানোর কথা বলে ডেকে ভবনের একটি কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে তাদের বিস্কুট খাইয়ে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ওই দুই ছাত্রীকে একটি কক্ষে নিয়ে সবাইকে বের করে দেন। পরে দরজা আটকিয়ে ওই দুই ছাত্রীকে জড়িয়ে ধরে তাদের স্পর্শকাতর অঙ্গে হাত দিতে থাকেন। এসময় তারা চিৎকার করলে এক ছাত্রীর মা এগিয়ে এসে কলেজের প্রধান ফটকে তালা আটকানো দেখতে পান। পরে কলেজের অফিস করনিক ইরশাদ আলী গেটের তালা খুলে দেন। এরপর ওই ছাত্রীর মা কলেজের একটি কক্ষ থেকে লুঙ্গি পড়া খালি গায় কলেজের অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদকে বের হতে দেখতে পান।

ওই দুই ছাত্রীর অভিভাবক এ বিষয়ে মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল মালেকের নিকট লিখিত অভিযোগ করেন। বিষয়টি টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলামের নজরে আসলে তিনি তদন্তের নির্দেশ দেন। পরে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. হারুন অর রশিদকে আহবায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ঠ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন কৃষি অফিসার মো. মশিউর রহমান এবং মহিলা বিষয়ক অফিসার মিনু পারভীন।

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর গত ২৪ জুন মহিলা কলেজ পরিচালনা পরিষদের এক সভা শিক্ষকদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে কলেজের অভিযুক্ত অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদকে সাময়িক বরখস্ত এবং কারন দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়। ১৫ দিনের মধ্যে উপযুক্ত কারন দর্শাতে ব্যার্থ হলে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে বলে কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মো. জাকির হোসেন তখন জানান।

অভিযুক্ত অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ কারন দর্শানো নোটিশের জবাব দিলে গত ১৬ জুলাই কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়। অভিযক্ত অধ্যক্ষের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় ওই সভায়ই তকে স্থায়ীভাবে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শনিবার সকালে কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি জাকির হোসেন ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রণব কুমার সাহা এই তথ্য নিশ্চিত করেন। বরখাস্তের চিঠি দুএকদিনের মধ্যেই অভিযুক্ত অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদকে পৌছে দেয়া হবে বলে জানা গেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এর আগেও একটি মেয়েকে ডেকে নিয়ে ওই অধ্যক্ষ তার কক্ষে আটকিয়ে শ্লীলতাহানি ঘটিয়েছিল। এছাড়া ওই অধ্যক্ষ কলেজের ছাত্রীদের সাথে অহরহ এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে থাকলেও লোকলজ্জায় তারা অভিযোগ করেন না। তবে এসব কারণে অনেক অভিভাবক তাদের মেয়েদের কলেজ থেকে অন্যত্র নিয়ে গেছেন বলেও স্থানীয়রা জানান।

নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

- Advertisement -
- Advertisement -