বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১২, ২০২৪
Homeদেশের খবররোগীকে বাঁচাতে প্লাজমা দিলেন ডাক্তার ফেরদৌস!

রোগীকে বাঁচাতে প্লাজমা দিলেন ডাক্তার ফেরদৌস!

ডেস্ক রিপোর্ট ● ক’রোনা আ’ক্রান্ত মুমূর্ষু রোগীকে বাঁচাতে প্লাজমা দিলেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক থেকে চিকিৎসা দিতে দেশে আসা ডাক্তার ফেরদৌস খন্দকার! ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন থেকে মু’ক্তি পেয়েই ছুটে গেলেন শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে।

রবিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটের ৮ম তলায় প্লাজমা ডোনেশন সেন্টারে প্লাজমা দেন ডাক্তার ফেরদৌস খন্দকার। নিজের ফেসবুক পেইজ থেকে লাইভে এ তথ্য ডা. ফেরদৌস নিজেই জানিয়েছেন।

এ সময় তিনি প্লাজমা দেওয়ার মতো সক্ষম ব্যক্তিদের প্লাজমা দানে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। এর আগে রবিবার সকালে ঢাকার ব্র্যাক ট্রেনিং সেন্টার থেকে ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন শেষে ছাড়া পান ডা. ফেরদৌস।

ডা. ফেরদৌস খন্দকার সম্প্রতি বাংলাদেশে ফিরে ক’রোনাভা’ইরাস আ’ক্রান্ত রোগীদের সেবা দিতে চান জানিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ঘোষণা দিয়েছিলেন। তখন থেকেই তাকে নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।

সার্বিক বিষয়ে ফেরদৌস খন্দকার বলেন, আমি মানুষের ভালোবাসার টানে এসেছি, দীর্ঘ সময়ের জন্য আসিনি। আমার তো দেশে ফেরত যেতে হবে। কিন্তু কোয়ারেন্টিনে ব’ন্দির মতো চলে গেলো ১৪দিন সময়, ১৪ দিন যদি কোয়ারেন্টিনেই থাকতে হয়, তাহলে সেবার দেওয়ার সময় কোথায় পেলাম?

যদিও অ্যান্টিবডি পজিটিভ থাকার পরো আমাকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। দেখুন আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ছাত্ররাজনীতি করে আসছি, বঙ্গবন্ধুকে হৃদয়ে ধারণ করি। আমাকে মানুষের সেবা দেওয়ার সুযোগ না দিলে নিউইয়র্কের উদ্দেশ্যে চলে যাবো। তাহলে হয়তো দূর থেকেই কাজ করতে হবে। আমার ডাক্তার টিমের সদস্যরা নি’র্দেশনা অনুযায়ী মাঠে কাজ করবেন।

আফসোস করে ডাক্তার ফেরদৌস খন্দকার বলেন, ভালো কাজের পদে পদে বা’ধা আসে। আমার ক্ষেত্রেও একই অবস্থা সৃষ্টি করা হয়েছে। আমি আসছি কাজ করতে, আমি ভালোবাসা দিয়েই জয় করবো সবাইকে। আমি বাংলাদেশের মানুষের জন্য স্বেচ্ছায় কাজ করতে এসেছি। ব্যবসা করতে নয়।

যদি কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়; তাহলেই কাজ করবো, নইলে চলে যাবো। আমি তো কোনো সময় বলেনি যে এখানে থেকে যাবো। আমার পরিবারের সবাই আমেরিকা থাকে। আমি কোনো এমপি-মন্ত্রী হতে আর রাজনীতি করতে আসিনি। আসছি এদেশের মানুষের সেবা দেওয়ার জন্য, জন্মভূমির বিপদে পাশে থাকার জন্য।

আমার এই আসাটাকে কিছু মানুষ হয়তো ভালোভাবে নেয়নি। কি কারণে নেয়নি আমি জানি না। আমার কাছে মাটির যে ঋণ, সেই ঋণ শো’ধ করতে এসেছি। মাটির ঋণ যদি একটুও শো’ধ করতে পারি আমার নিজের আত্মা শান্তি পাবে। আমি আমার দায়িত্ব বোধ থেকে এসেছি।

ফেরদৌস খন্দকার বলেন, আমরা যদি কিছু কু’চক্রি মানুষগুলোর জন্য ছেড়ে চলে যাই। তাহলে আমাদের নেত্রীর হাত দুর্বল হবে, যারা এমন মি’থ্যাচার করছে তারাই খন্দকার মোস্তাকের দোসর। তারা আমার নেত্রীর হাতকে দু’র্বল করে দিয়ে খন্দকার মোস্তাকের কাজ করছে। আমাদের সবাইকে চ্যালেঞ্জ নিতে হবে, ছেড়ে যাওয়া যাবে না।

গু’জব ও মি’থ্যাচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেখুন, আমি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছি, কখনও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে বিচ্যুত হইনি। যখন যুক্তরাষ্ট্রে আমি আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচির সঙ্গে জ’ড়িত হতে থাকলাম, তখন থেকেই বুঝতে পারলাম, আমাকে কেউ কেউ রাজনীতির মাঠে মেনে নিতে পারছে না।

নানাভাবে আমার রাজনীতির কর্মকাণ্ডে বা’ধা সৃ’ষ্টি করছিল। আমাকে খন্দকার মোস্তাকের ভাতিজাসহ নানাভাবে বি’তর্কিত করতে চেয়েছে। আমার ধারণা সেই নিউইয়র্ক থেকে আওয়ামী লীগের একটি গ্রুপসহ স্বাধীনতাবিরোধী চ’ক্রও আমার বি’রুদ্ধে অ’পপ্রচারে মাঠে নেমেছে। সেই গ্রুপের প্ররোচণায় বাংলাদেশের একজন শ্রদ্ধাভাজন মানুষের ফেসবুক আইডিতে আমার বি’রুদ্ধে অ’পপ্রচারটি শুরু হয়।

এরপর না বুঝেই গু’জবটি ভাইরাল হয়। শেষ পর্যন্ত গু’জবকে বিতারিত করে স’ত্যটি উন্মোচিত হয়। গু’জবকারীরা অনেকেই লজ্জায় অনুতপ্তও হয়। তবে এই মি’থ্যাচার আর গু’জবের বি’রুদ্ধে রু’খে দাঁড়িয়েছিল আমার ছাত্রলীগের ভাইয়েরা, যুবলীগ, আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের লাখ লাখ মানুষ। আমি ওইসব মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ, তাদেরও ঋ’ণ আমি কোনোদিন শো’ধ করতে পারবো না।

গত রবিবার তিনি কাতার এয়ারওয়েজের একটি বিশেষ ফ্লাইটে দেশে ফেরার পর এয়ারপোর্ট থেকেই তাকে আনুষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়। রবিবার তার কোয়ারেন্টাইন শেষ হয়েছে বলে জানা গেছে।

নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

- Advertisement -
- Advertisement -