এম সাইফুল ইসলাম শাফলু :
টাঙ্গাইলের সখীপুরে ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সের জন্য বরাদ্দ হওয়া ৫০ কেভির জেনারেটরটি নয় বছর ধরে হাসপাতালের ভান্ডার কক্ষে বাক্সবন্দী অবস্থায় পড়ে আছে। ওই জেনারেটরটি লোডশেডিংয়ের সময় স্বাস্থ্য কমপেক্সের আবাসিক রোগী, অস্ত্রোপচার কক্ষ ও চিকিৎসকদের আবাসিক ভবনে ব্যবহারের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ২০০৮ সালে দেওয়া হয়েছিল। জেনারেটরটি বাক্সবন্দী অবস্থায় থাকায় তীব্র তাপদাহে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের সময় ৫০ শয্যার হাসপাতালের রোগী,রোগীদের স্বজন ও আবাসিক ভবনে থাকা চিকিৎসক-কর্মচারীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
সখীপুর স্বাস্থ্য কমপেক্সের সংরক্ষণ কক্ষের রক্ষক রেজাউল ইসলাম বলেন, ২০০৮ সালের ৫ জুলাই ৫০ কেভির শক্তিশালী ওই জেনারেটরটি হাসপাতালের জন্য বরাদ্দ আসে। কোথাও ¯’াপিত না হওয়ায় আমার হেফাজতে নয় বছর ধরে প্যাকেটবন্দী অবস্থায় পড়ে আছে। এছাড়াও ওই জেনারেটর চালানোর জনবল নিয়োগ ও জ্বালানি খরচও হাসপাতালে দেওয়া হয়নি।
বৃহস্পতিবার ওই স্বাস্থ্য কমপেক্সে গিয়ে কথা হয় আবাসিক রোগীদের সঙ্গে। শামীমা আক্তার নামের রোগীর স্বজন বলেন, ‘ বুধবার রাতে দেড় ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছিলনা। প্রচন্ড গরমে নবজাতক ও মায়েদের অনেক কষ্ট হয়েছে। জেনারেটরটি সচল থাকলে হয়তো এ কষ্ট হতোনা।’
সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা নাজমুল হোসাইন বলেন, ‘ লোড শেডিংয়ের সময় হাসপাতালের রোগী ও আবাসিক ভবনে থাকা ডাক্তার ও কর্মচারীদের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। একটা জেনারেটর বাক্সবন্দি থাকলেও তা চালাতে নাকি ঘন্টায় ১২ হাজার টাকার জ্বালানি লাগবে। এ ছাড়াও এটি চালাতে একজন অপারেটর (চালক) লাগে। ওই জেনারেটরের জন্য কোনো বাড়তি খরচ সরকার থেকে দেওয়া হয় না। ফলে নয় বছর ধরে ওই জেনারেটরটি হাসপাতালে বাক্সবন্দি অবস্থায় পড়ে আছে। তিনি আরো বলেন, প্রয়োজনে যদি কাজে না আসে তাহলে সে জেনারেটর থেকে লাভ কি ?’
হাসপাতালের আবাসিক ভবনে থাকা একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অনেক সময় বিদ্যুৎ থাকেনা। বিদ্যুৎ না থাকলে পানিও থাকেনা। জেনারেটর থাকার পরও নেই, এটা খুবই কষ্টের এবং অমানবিক।
সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা রাফেউল করিম খান বলেন, বিশাল ও ব্যয় বহুল জেনারেটরটি হাসপাতালের কোনো কাজে আসছে না। নয় বছরে ওই জেনারেটরটি প্রতিস্থাপনের ( ইনষ্টল) করার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগের কোনো প্রকৌশলীও আসেনি। এছাড়া কোনো চালকও নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তাই সরকারের উচিৎ এটা নিয়ে গিয়ে ছোট একটা জেনারেটর দেওয়া। পড়ে থাকা জেনারেটর প্রসঙ্গে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে দেওয়া মাসিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হলেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কোনো কর্ণপাত করছেন না।’
নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।