ইসমাইল হোসেন : “স্বামী মারা গেছে প্রায় ৩০ বছর আগে। এরপর থেকেই পরিবারে নেমে আসে অন্ধকার। শুরু হয় জীবনযুদ্ধ। এক মেয়ে ও ছেলে নিয়ে অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে সংসার চালাতে হয়েছে বিধবা মালেকার (৬০)।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মালেকার বাড়ি উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়নের হামিদপুর গ্রামে। প্রায় ৩০ বছর আগে স্বামী মোহর আলীকে অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে না পেরে মারা যায়। মারা যাওয়ার আগে স্ত্রীর নামে মাত্র ছয় শতাংশ জমি ছাড়া আর কিছুই রেখে যাননি তিনি। ফলে ভিক্ষাবৃত্তি ও ঝিয়ের কাজ করে ছেলে-মেয়েকে নিয়ে কোনমতে চলে মালেকার জীবন।
স্থানীয়রা জানান, মালেকা দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে কাজ করে আসছে। অভাবে পড়ে ভিক্ষাও করেন তিনি। ভিক্ষাভিত্তি করে নিজের বড় মেয়েকে বিয়ে দেয়। আর ছেলেকে দুবাই পাঠায়। বিদেশে ছেলের খুব একটা সুবিধা না হওয়ায় দেশে চলে আসে। ছেলের সংসারে টানা পড়ায় তার মাকে পরিবার থেকে আলাদা করে দেয়। এর পরেই শুরু হয় মালেকার আরেক জীবন যুদ্ধ। বর্তমানে বৃদ্ধ বয়সে জীবিকার তাগিদে যেতে হচ্ছে অন্যের বাড়িতে কাজ করতে। শরীরের অবস্থা ভালো না থাকায় তার পক্ষে কাজ করা এখন অনেক কষ্টের। কখনও খেয়ে না খেয়ে থাকতে হচ্ছে। এ কারণে প্রায়ই তিনি অসুস্থ থাকেন। অসুস্থ হলে টাকার অভাবে কিনতে পারেনা প্রয়োজনীয় ওষুধ।
বর্তমানে কাজ ও খাওয়ার চেয়ে মূল সমস্যা মালেকার থাকার ঘর নেই। যে মাটির ঘরটি রয়েছে তাও ভেঙ্গে গেছে। এখন কোথায় থাকবে মালেকা? তাই তিনি প্রধানমন্ত্রী ও সমাজের ভিত্তবানদের কাছে ঘর তৈরি করতে সহায়তা কামনা করেছেন।
বিধবা মালেকা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘ম্যাইনষে কয় সখীপুরের নতুন ইউএনও ভালো মানুষ। তিনি একটি ঘর দিলে জীবনের শেষ বয়সে ভালো একটি ঘরে ঘুমিয়ে শান্তি নিয়ে মরতে পারতাম।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তারিকুল ইসলাম বিদ্যুৎ বলেন, বিষয়টি জানা নেই। যদি বিধবা মালেকার জমি থাকে তাকে প্রধানমন্ত্রীর ঘর উপহার দেওয়ার জন্য উর্ধ্বোতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করবো।
নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।