শুক্রবার, জানুয়ারি ১৭, ২০২৫
Homeজাতীয়সখীপুরে এক বছরে ৫৩৫ টি বিয়ে বিচ্ছেদ; অধিকাংশই নারী কৃর্তক

সখীপুরে এক বছরে ৫৩৫ টি বিয়ে বিচ্ছেদ; অধিকাংশই নারী কৃর্তক

 

 

এম সাইফুল ইসলাম শাফলু :

টাঙ্গাইলের সখীপুরে গত ১ বছরে ৫৩৫টি বিয়ে বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে। এর আগে ২০১৪ সালে ৪২৫টি ও ২০১৫ সালে ৫৮৩টি বিয়ে বিচ্ছেদ হয়। বাল্যবিবাহ, বিয়ের পরপরই স্বামী বিদেশ চলে যাওয়া, স্ত্রীর প্রতি স্বামীর উদাসীনতা, পরকীয়া সম্পর্ক, স্বামীর মাদকাসক্তি, স্বামী বিদেশ থাকায় শ্বশুর-শাশুড়ির নির্যাতন, যৌতুকের জন্য চাপ এসব বিয়ে বিচ্ছেদের প্রকৃত কারণ বলে নিকাহ ও তালাক রেজিস্ট্রাররা জানিয়েছেন।

 

সখীপুরে ১টি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়নে ১২ জন নিকাহ ও তালাক রেজিস্ট্রার সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে উপজেলার কাঁকড়াজান ইউনিয়নে বিয়ে হয়েছে ৭০টি আর বিচ্ছেদ হয়েছে ৮১টি, কালিয়া ইউনিয়নে বিয়ে হয়েছে ১৫৮টি, বিচ্ছেদ হয়েছে ১১৬টি, বহুরিয়া ইউনিয়নে বিয়ে হয়েছে ২৪টি, বিচ্ছেদ হয়েছে ২৮টি, হাতীবান্ধা ইউনিয়নে বিয়ে হয়েছে ১২৬টি , বিচ্ছেদ হয়েছে ৪১টি, যাদবপুর ইউনিয়নে বিয়ে হয়েছে ৬৬টি , বিচ্ছেদ হয়েছে ৫২টি, গজারিয়া ইউনিয়নে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে ৪৯টি, আর বিচ্ছেদ হয়েছে ৩৬টি, বহেড়াতৈল ইউনিয়নে বিয়ে হয়েছে ৪৫টি, বিচ্ছেদ হয়েছে ৩১টি এবং দাড়িয়াপুর ইউনিয়নে বিয়ে হয়েছে ৩৫টি বিচ্ছেদ হয়েছে ২০টি। পৌরসভার ৪টি কার্যালয়ে ১৯৬ টি বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে এতে বিচ্ছেদ ঘটেছে ১২২টি।  তারা আরও জানান, ৫৩৫টি বিয়ে বিচ্ছেদের মধ্যে শুধু কনের পক্ষ থেকে বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটানো হয়েছে ২৭৩টি, আর বাকী ২৫০টি বিয়ে বিচ্ছেদ  বর ও কনে পক্ষের  সমঝোতার মাধ্যমে হয়েছে ।

 

কালিয়া ইউনিয়ন নিকাহ ও তালাক রেজিস্ট্রার (কাজী) মাহবুব সাদিক বলেন, সু-শিক্ষা অভাব,পরকীয়া ও বিয়ের পরপরই স্বামী বিদেশ চলে যাওয়ার কারনেই এত বিচ্ছেদ হচ্ছে।  তিনি বলেন, অধিকাংশ বিয়ে বিচ্ছেদ নারীরাই করে থাকেন।

 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বিয়ে বিচ্ছেদকারী নারী বলেন, অকারণে একজন নারী কখনো তাঁর স্বামীকে তালাক দেয় না। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন যখন সীমা অতিক্রধম করে, তখন বাধ্য হয়েই নারীদের তালাকের আশ্রয় নিতে হয়।

 

সখীপুর উপজেলা কাজী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সখীপুর পৌরসভার কাজী শফিউল ইসলাম বলেন, বাল্যবিবাহ, স্বামীর বিদেশে থাকা ও পরকীয়াঘটিত নানা জটিলতা নিয়ে প্রথমে দুই পরিবারে ফাটল ধরে, পরে তা বিচ্ছেদে রূপ নেয়।

 

এ ব্যাপারে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফিরোজা আক্তার বলেন, আগে নারীর ক্ষমতায়ন ছিল না। পুরুষদের অত্যাচার সহ্য করে নীরবে সংসার করেছে। এখন মেয়েরা সচেতন ও শিক্ষিত। মেয়েরা আর আগের মতো নির্যাতন-নিপীড়ন সহ্য করতে চায় না। তিনি বাল্যবিয়ে এবং স্বামী দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকাকে বিয়ে বিচ্ছেদের মূল কারণ বলে দাবি করেন।

 

নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

- Advertisement -
- Advertisement -